ব্যাটিং উইকেট, বোলিংও সাদামাটা বাংলাদেশের। সেই সুযোগে মাত্র ৫ উইকেট হারিয়ে ২৮৬ রানের বড় স্কোর গড়েছে জিম্বাবুয়ে। সেঞ্চুরি করেছেন শন উইলিয়ামস, ১৪৩ বলে ১২৯ রানে অপরাজিত। তিন ম্যাচ সিরিজে ২-০ তে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। এই ম্যাচ জিতলে চতুর্থবারের মত জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করবে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
সিরিজে এই নিয়ে টানা তৃতীয়বার টসে জিতেছে বাংলাদেশ। টসে জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন টাইগার দলপতি মাশরাফি বিন মর্তুজা।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই বিপদে পড়ে জিম্বাবুয়ে। দলীয় ছয় রানের মাথায় দুই উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় সফরকারীরা।
ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেরই জিম্বাবুয়ে সিরিজে প্রথম আঘাত আনেন পেস অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। নিজের প্রথম ওভারের তৃতীয় বলে ওপেনার ঝুওয়াও কে সরাসরি বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান এই অলরাউন্ডার। ফেরার আগে ৩ বলে রানশূন্য ছিলেন এই ওপেনার।
সাইফউদ্দিনের পর তৃতীয় ওভারে আরেক ওপেনার মাসাকাদজাকে ফেরান আবু হায়দার রনি। রনির করা বল জায়গায় দাঁড়িয়ে ড্রাইভ করতে চেয়েছিলেন মাসাকাদজা। টাইমিং হয়নি ঠিকমতো। ব্যাটে লেগে বল এসে পড়ে স্টাম্পে। সাজঘরের ফেরার আগে ১০ বলে ২ রান করেছেন এই ওপেনার।
এরপর তৃতীয় উইকেট জুটিতে ঘুরে দাঁড়ায় জিম্বাবুয়ে। চাপ সামলে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন দুই ব্যাটসম্যান ব্রেন্ডন টেইলর এবং শন উইলিমস। দুজন মিলে গড়ে তুলেন ১৩২ রানের পার্টনারশিপ।
২৬তম ওভারে ভয়ংকর হয়ে উঠা এই জুটি ভাঙেন নাজমুল অপু। বাঁহাতি এই স্পিনারের অফ স্টাম্পের বেশ বাইরে করা বল স্লগ সুইপ করে খেলার ঝুঁকি নিলেন টেইলর। সেই বল ব্যাটের কানায় লেগে আকাশে উঠে যাওয়ায় সহজ ক্যাচ তালুবন্ধী করেন মুশফিকুর রহিম। আউট হওয়ার আগে ৭২ বলে ৮ চার এবং ৩ ছয়ে ৭৫ রান করেন তিনি।
এরপর সিকান্দার রাজাকে নিয়ে এগিয়ে চলেন শন উইলিমস। চতুর্থ উইকেটে দুজন মিলে গড়ে তুলেন ৮৪ রানের পার্টনারশিপ। দুজনের ব্যাটে ৩৮ ওভারে জিম্বাবুয়ের দুইশ স্পর্শ করে জিম্বাবুয়ে। প্রতিরোধ গড়তে থাকা এই জুটিও ভাঙেন অপু্। ৪২তম ওভারের প্রথম বলে অপুর বলে সৌম্যর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন রাজা। সাজঘরে ফেরার আগে ৫১ বলে ১ ছয় ও ২ বলে ২০ রান করেন এই অলরাউন্ডার।
পিটার মুরের সঙ্গে জুটি বাঁধেন উইলিয়ামস। রাজা ফেরার পরেই সেঞ্চুরি পূরণ করেছেন তিনি। এটি তার ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। এরপর আরিফুল হকের সরাসরি থ্রোয়ে রান আউট হয়ে ফিরে যান পিটার মুর। শেষের ৬২ রানের পঞ্চম উইকেট জুটি ভাঙলে চিগাম্বুরার নেমে ১ রান যোগ করেন।
উইলিয়ামসের ক্যারিয়ার সেরা ১০ চার ১ ছক্কায় গড়া ইনিংসের উপর ভর করে ইনিংসে শেষে ২৮৬ রানে পুঁজি পায় জিম্বাবুয়ে।
বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে ৮ ওভারে ৫৮ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন নাজমুল অপু। বাকি একটি করে উইকেট সংগ্রহ করেন আবু হায়দার রনি এবং মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম দুটি দ্বিপাক্ষিক সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল বাংলাদেশ। ২০০১ সালে প্রতিপক্ষের মাঠে গিয়ে ৩-০ এবং পরের বছর ফিরতি সিরিজে একই ব্যবধানে হেরেছিল টাইগাররা।
সেই দলটিকেই গত ১১ বছরে তিন বার ধবলধোলাইয়ের লজ্জা দিয়েছে টাইগাররা। সংখ্যাটা আজ চারে উন্নীত করার হাতছানি। সুযোগটা কাজে লাগাতে নিশ্চিতভাবেই মুখিয়ে আছে মাশরাফিন বিন মর্তুজার দল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ২৮৬/৫ (৫০ ওভার)
(হ্যামিল্টন মাসাকাদজা ২, চিপহাস ঝুওয়াও ০, বেন্ডন টেইলর ৭৫, সিকান্দার রাজা ৪০, শন উইলিয়ামস ১২৯, পিটার মুর ২৮, এলটন চিগাম্বুরা ১; আবু হায়দার রনি ১/৩৯, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ১/৫১, মাশরাফি বিন মর্তুজা ০/৫৬, সৌম্য সরকার ০/১৬, নাজমুল অপু ২/৫৮, মাহমুদউল্লাহ ০/৪০,)
বাংলাদেশ সময়: ১৮:৫৯:১৭ ১৬৮ বার পঠিত