ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার পাচুড়িয়া ইউনিয়নের চরনারানদিয়া গ্রামে পূর্ব-পরিকল্পিতভাবে বসতবাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ১৫ জন। আহতদের আলফাডাঙ্গা ও বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার সকালে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
রঞ্জু সরদারের পক্ষের আহতদের মধ্যে চরনারানদিয়া গ্রামের আলমগীর খান, হানিফ খান, পিকুল মোল্লা, হাবিবার খান, ওহিদুর খান, মোস্তফা খান, ইবাদত খান ও সোহাগকে আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
অপরদিকে মিজানুর রহমান পক্ষের আহতদের মধ্যে ছাদ্দাম মোল্লা, মোশারফ মোল্লা, ২ নং ইউনিটের ইউপি সদস্য আজগর আলী, জালিম মোল্লা ও হারুন শেখকে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
জানা গেছে, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য খালেদ মোশারফ রঞ্জু সরদারের পক্ষের সমর্থক উপজেলার পাঁচুড়িয়া ইউনিয়নের উত্তর চরনারানদিয়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা (অব.) ব্যাটলিয়ন আনসার মৃত আতর আলী সিকদারের ছেলে আলামিনকে গত ১৮ অক্টোবর রাত ৮টার দিকে মাছ ধরে বাড়ি ফেরার পথে রাস্তা থেকে পাচুড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান এসএম মিজানুর রহমান পক্ষের লোক ইব্রাহিম খান, শাহাবুল সরদারসহ ১০-১২ জন স্থানীয় দলাদলির রেশ ধরে বেধড়ক মারধর করেন। এরই জের ধরে বৃহস্পতিবার রাতে বাঁশতলা বাজারে উভয় পক্ষের লোকজনের সাথে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়।এই ঘটনার জের ধরে পরিকল্পিতভাবে শুক্রবার সকালে এসএম মিজানুর রহমান পক্ষের সমর্থকেরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে খালেদ মোশারফ রঞ্জু সরদারের পক্ষের সমর্থকের বসতবাড়িতে হামলা চালায়। এসময় ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ করেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, খালেদ মোশারফ রঞ্জু সরদারের পক্ষের সমর্থক আলমগীর খানের বসতবাড়ির দুটি ঘরে হামলা চালিয়ে দুটি ফ্রিজ, দুটি টিভি, আসবাবপত্র ভাঙচুর করে পাঁচ ভরি স্বর্ণ, নগদ দেড় লক্ষ টাকা লুট করে নিয়ে গেছে বলে জানা যায়। এতে আলমগীর খানের আনুমানিক আট লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগ করে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার। এছাড়াও আরো সাত-আটজনের বসতবাড়ি, দোকানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর চালানো হয়। এতে সব মিলিয়ে তাদের প্রায় এক থেকে দেড় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি ক্ষতিগ্রস্তদের।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সরদার খালেদ মোশারফ রঞ্জু বলেন, আমার গ্রুপের একটি ছেলেকে ধরে চোর সাজিয়ে পুলিশে দেয় চেয়ারম্যানের পক্ষের লোকজন। তাকে দিয়ে আরও কিছু ভাল ছেলেদের নাম বলিয়ে হয়রানি করা হয়। এ নিয়ে তারা আমার পক্ষের লোকজনের ওপর হামলা চালায় এবং বাড়িঘর ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় থানায় মামলা করার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।
জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান এসএম মিজানুর রহমান বলেন, আল আমিন শিকদার নামে একটি ছেলে সপ্তাহখানেক আগে চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ে। তাকে পুলিশে দেয়া হয়, কিন্তু মামলা করা হয়নি। সে আরও কয়েকজনের নাম বলে। এ ঘটনার জের ধরে বৃহস্পতিবার রাতে আমার পক্ষের নজরুল খার সাথে বাঁশতলা বাজারে রঞ্জুর পক্ষের লোকজনের কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। এর জের ধরে তারা শুক্রবার সকালে ঢাল-সড়কি নিয়ে আমার লোকজনের ওপর হামলা চালায়। থানায় মামলার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
আলফাডাঙ্গা থানার ওসি নাজমুল করিম বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। বিকাল ৪টা পর্যন্ত কোন পক্ষই থানায় কোন অভিযোগ দেয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯:২৪:০৯ ২১৮ বার পঠিত