নিউজটুনারায়ণগঞ্জঃ সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে ফের ‘বাংলাওয়াশ’ করলো টাইগাররা। ইমরুল-সৌম্যের ঝড়ো সেঞ্চুরিতে অতিথিদিরে বিপক্ষে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে জয় পায় বাংলাদেশ।
চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেন টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। তিনটি পরিবর্তন নিয়ে আজ মাঠে নামে স্বাগতিক বাংলাদেশ। ফজলে রাব্বী, মেহেদী হাসান মিরাজ ও মোস্তাফিজুর রহমানের পরিবর্তে দলে সুযোগ পেয়েছেন সৌম্য সরকার, আরিফুল হক ও আবু হায়দার রনি। এদিকে এ ম্যাচে দু’টি পরিবর্তন নিয়ে দল সাজায় মাসাকাদজার দল। তেন্ডাই চাতারা ও ব্র্যান্ডন মাভুতার পরিবর্তে দলে ফিরেছেন রিচার্ড নগারভা, ওয়েলিংটন মাসাকাদজা।
ব্যাট করতে নেমে দলীয় ৬ রানের মাথায় দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে জিম্বাবুয়ে। সেখান থেকে দলকে টেনে তোলেন ব্রেন্ডন টেইলর ও শন উইলিয়ামস। টেইলর ও উইলিয়ামসের ব্যাট থেকে আসে ১৩২ রানের পার্টনারশিপ যা জিম্বাবুয়েকে ঘুরে দাঁড়াতে ভিত্তি গড়ে দেয়।শন উইলিয়ামসের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে শেষ ম্যাচে বাংলাদেশকে ২৮৭ রানের টার্গেট দিলো জিম্বাবুয়ে। সুতরাং বাংলাদেশকে জিততে হলে ২৮৭ রান করতে হবে। শন উইলিয়ামস ১৪৩ বল খেলে ১০ চার ও ১ ছয়ে ১২৯ রান করে অপ্ররাজিত থাকেন।
জিম্বাবুয়ের শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন বাংলাদেশি অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। ইনিংসের ২য় ওভারের ৩য় বলে বোল্ড আউট হয়ে সাজ ঘরে ফিরে যান কেফা জুহওয়ো। তিনি করেন শূন্য রান।
দ্বিতীয় আঘাত হানেন পেসার আবু হায়দার রনি। তার ব্যক্তিগত দ্বিতীয় ওভারের ৪র্থ বলে বোল্ড আউটের শিকার হন জিম্বাবুয়ে ওপেনার হ্যামিল্টন মাসাকাদজা। তিনি করেন ২ রান।
নাজমুল ইসলাম অপুর বলে ৭৫ রান করে মুশফিকের হাতে ক্যাচ দিয়ে টেইলর সাজ ঘরে ফিরেন। আউট হবার আগে টেইলর ৭২ বলে ৮ চার ও ৩ ছয় মেরে এই রান করেন।
এরপর সিকান্দার রাজাকে নিয়ে এগিয়ে চলেন শন উইলিমস। চতুর্থ উইকেটে দুজন মিলে গড়ে তুলেন ৮৪ রানের পার্টনারশিপ। দুজনের ব্যাটে ৩৮ ওভারে জিম্বাবুয়ের দুইশ স্পর্শ করে জিম্বাবুয়ে। প্রতিরোধ গড়তে থাকা এই জুটিও ভাঙেন অপু্। ৪২তম ওভারের প্রথম বলে অপুর বলে সৌম্যর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন রাজা। সাজঘরে ফেরার আগে ৫১ বলে ১ ছয় ও ২ বলে ২০ রান করেন এই অলরাউন্ডার।
পিটার মুরের সঙ্গে জুটি বাঁধেন উইলিয়ামস। রাজা ফেরার পরেই সেঞ্চুরি পূরণ করেছেন তিনি। এটি তার ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। এরপর আরিফুল হকের সরাসরি থ্রোয়ে রান আউট হয়ে ফিরে যান পিটার মুর। শেষের ৬২ রানের পঞ্চম উইকেট জুটি ভাঙলে চিগাম্বুরার নেমে ১ রান যোগ করেন।
উইলিয়ামসের ক্যারিয়ার সেরা ১০ চার ১ ছক্কায় গড়া ইনিংসের উপর ভর করে ইনিংসে শেষে ২৮৬ রানে পুঁজি পায় জিম্বাবুয়ে।
বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে ৮ ওভারে ৫৮ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন নাজমুল অপু। বাকি একটি করে উইকেট সংগ্রহ করেন আবু হায়দার রনি এবং মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।
বাংলাওয়াশের লক্ষে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। প্রথম বলেই ফিরে যান লিটন দাস। এরপর থেকেই শুরু হয় ইমরুল-সৌম্যের তাণ্ডব। জিম্রবাবুয়ের বোলারদের যেন পাড়ার বোলার বানিয়ে ফেলেছিলেন দুই টাইগার ব্যাটসম্যান ইমরুল কায়েস ও সৌম্য সরকার।
সৌম্য সরকার ও ইমরুল কায়েসের সেঞ্চুরির সুবাদে ৪২.১ ওভারে সাত উইকেট হাতে রেখে ম্যাচ জিতে নেয় টাইগাররা।
সৌম্য সরকার দলে সুযোগ পেয়েই আজ দুর্দান্ত একটি ইনিংস খেলেছেন। ৯২ বলে ১১৭ রান করে আউট হন তিনি। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এটি তার দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। এই রান করার পথে তিনি নয়টি চার মারেন ও ছয়টি ছক্কা হাঁকান। সাড়ে তিন বছরেরও বেশি সময় পর সেঞ্চুরি দেখা পেলেন এই টাইগার ক্রিকেটার।
গত দুই ম্যাচে ভালো খেলা ইমরুল কায়েস আজ ১১৫ রান করে আউট হন। ওয়ানডেতে এটি তার চতুর্থ সেঞ্চুরি। এই সিরিজের প্রথম ম্যাচেও ইমরুল কায়েস সেঞ্চুরি করেছিলেন। ওই ম্যাচে ১৪৪ রান করেছিলেন তিনি। এরপর দ্বিতীয় ম্যাচে ৯০ রান করে আউট হন কায়েস।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:৪৯:৪০ ২১২ বার পঠিত