নিউজটুনারায়ণগঞ্জঃ এদেশের ইতিহাস ঐতিহ্যকে ধারণ করে বাঙালী সংস্কৃতির চর্চা, সকল পর্যায়ের মানুষকে সুষ্ঠ সাংস্কৃতিক চর্চায় উদ্বুদ্ধ করা, সামগ্রিক জ্ঞান বিকাশ তথা শিশু-কিশোরদের বইমুখী করে সামাজিক অবক্ষয় প্রতিরোধে বলিষ্ঠ ও কার্যকরী ভূমিকা রাখাÑ এলাকার উন্নয়নের জন্য এসবকিছু অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে করে চলেছেন। কেবল এইটুকুতেই থেমে নেই তিনি। দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য চর্চার পাশাপাশি এলাকার অবকাঠামোগত উন্নয়ন সর্বোপরি দেশের সর্ববৃহৎ আইনসভা জাতীয় সংসদের একজন সংসদ সদস্য হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন তিনি। তিনি হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচিত সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।
উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর নাম বাদ গেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রাজনৈতিক ইতিহাস অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। কেননা সেই ছাত্রজীবন থেকেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রাজনৈতিক অঙ্গনে তাঁর বিচরণ। ছাত্র রাজনীতি থেকে শুরু করে মহান মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধে অংশগ্রহণ, স্বাধীন দেশে বঙ্গবন্ধু হত্যাসহ বিভিন্ন অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় বারবার কারাবরণ করে তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন এক অনন্য উচ্চতায়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট স্বপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর শুরু করেছিলেন প্রতিরোধ যুদ্ধ। এরপর সামরিক শাসনের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। আর ১৯৯৬ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর বিশ্বস্ততার সঙ্গে প্রধন্মন্ত্রীর একান্ত সচিবের দায়িত্ব পালন করেছেন।
জনগণের প্রিয় নেতা মোকতাদির চৌধুরী জনগণের ভাগ্যন্নোয়নে দিনরাত নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। এমন কোন সেক্টর নাই যেখানে তিনি উন্নয়ন পৌঁছাননি। শেখ হাসিনার স্নেহভাজন মোকতাদির চৌধুরীর নেতৃত্বে রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট নির্মাণ, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, স্কুল কলেজের ঊর্ধ্বমূখী সম্প্রসারণ, নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ, নদী-খাল খনন, ফ্লাইওভার/ওভারপাস নির্মাণসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে। ইতোমধ্যে তাঁর নির্বাচনী এলাকার দু’টি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুৎ নিশ্চিত করা হয়েছে। এতে বেড়েছে শিক্ষার হার এবং জনগণ পেয়েছে উন্নত জীবনের ছোঁয়া। ইতিহাস-ঐতিহ্য চর্চা কিংবা শিক্ষা-সংস্কৃতি বিকাশের হ্মেত্রেও উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর জুড়ি মেলা ভার। এলাকায় বহু প্রাচীনকাল থেকে চলে আসা নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে বন্ধ করে দেওয়া হয়। সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর মোকতাদির চৌধুরী মহা ধূমধামের সাথে পুনরায় তা চালু করেছেন। শুধু কি তাই? নিয়মিত উদ্যাপিত হচ্ছে পহেলা বৈশাখসহ বাঙালী সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত নানান উৎসব। প্রতি বছর আয়োজন করা হয় বই মেলা।
এসব অনুষ্ঠান আয়োজন করার পিছনে একটি বিশেষ উদ্দেশ্য রয়েছে উল্লেখ করে মোকতাদির চৌধুরী বলেন, মাঝখানের বেশ অনেক বছর এসব চর্চা থেকে দূরে সরে যাওয়ায় আমাদের যুব সমাজের মধ্যে নানান অবক্ষয় চোখে পড়ে। এসব অনুষ্ঠানগুলো যত বেশি আয়োজন করা যাবে ততই আমাদের দেশের সংস্কৃতি ইতিহাস ঐতিহ্য সম্পর্কে শিশু-কিশোররা জানতে পারবে। আর এর ফলে মাদক-জঙ্গীবাদের মতো ভয়াবহ ছোবল থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে অবস্থান করছে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে প্রবেশ করেছে। ২০৪১ সালের মধ্যে ক্ষুধা, দারিদ্রমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে। বর্তমান শেখ হাসিনা সরকারের নেতৃত্বে সারাদেশে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। উন্নয়ন সুবিধা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে তৃণমূল পর্যায়ে- নিশ্চিত করা হচ্ছে অর্ন্তভূক্তিমূলক উন্নয়ন। দেশব্যাপী এ উন্নয়নের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে চলেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া। সেখানে লেগেছে উন্নয়নের জোয়ার। বিশেষ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও বিজয়নগর উপজেলার চেহারা আমুল বদলে দিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য মোকতাদির চৌধুরী। তাঁর নির্বাচনী আসনের প্রতিটি ইউনিয়নে সুষম উন্নয়ন নিশ্চিত করেছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের যানজট নিরসনে প্রায় ৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করেছেন ফ্লাইওভার বা ওভারপাস। যা এলাকাবাসীর জন্য অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। তাঁর সার্বিক নির্দেশনা ও তত্ত্বাবধানে নির্ধারিত সময়ের অনেক পূর্বেই নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এতে যানজট নিরসণের পাশাপাশি বেড়েছে শহরের সৌন্দর্য্য। উন্নয়নের ছোঁয়ায় যখন দেশের বিভিন্ন পর্যায় এগিয়ে যাচ্ছে দুর্বার গতিতে এমন সময়েও খুব কম জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের মতো প্রতিটি ক্ষেত্রেই ব্যাপক উন্নয়নের গৌরব অর্জন করতে পেরেছেন। শুধু তাই নয়, খালপাড়ে ব্রিজ নির্মাণ ও শহরের সৌন্দর্য্য বর্ধণের জন্য নেওয়া হয়েছে নতুন নতুন পরিকল্পনা।
পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ মোকতাদির চৌধুরী তাঁর নির্বাচনী আসনের দু’টি উপজেলার মধ্যে যোগাযোগ সহজ করার জন্য প্রায় ৪০কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করছেন “শেখ হাসিনা সড়ক”। স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর মধ্যগঙ্গার দুই পারের মানুষকে এক সুতোঁয় গেঁথেছে বহু কাক্সিক্ষত ২৪ ফুট চওড়া প্রায় ৯ কিলোমিটার এই সড়কটি। এটিকে ঘিরে দুই উপজেলার প্রায় ৭ লাখ মানুষ নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে।
এবিষয়ে বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলী আফরোজ জানান, বিজয়নগরের সিমনা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়কের নির্মাণ কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। স্থানীয় জনগণের দাবি আর স্থানীয় সংসদ সদস্য উবায়দুল মোকতাদিরের আন্তরিক প্রচেষ্টায় সড়কটিকে “শেখ হাসিনা সড়ক” হিসেবে নামকরণ এবং ফলক উন্মোচন করেন তিনি। এই সড়কটিতে আরো তিনটি বড় ব্রিজ নির্মাণ করা হবে প্রায় শতকোটি টাকা ব্যয়ে। সড়কটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে অতি অল্প সময়ে বিজয়নগর উপজেলার জনগণ শহরে আসতে পারবে। যোগাযোগের ক্ষেত্রে আসবে বৈপ্লবিক পরিবর্তন।
এলাকাবাসী জানান, এমপি মোকতাদির চৌধুরী সুষম উন্নয়নের পাশাপাশি জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছেন। সাধারণ জনগণ দিনরাত নির্বিঘেœ চলাফেরা করছে, কারো মাঝে কোন শঙ্কা নেই। জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সেকারণে তিনি শুরু থেকেই এবিষয়ে ছিলেন আপোষহীন। তারঁ সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং বাস্তবায়নের ফলে শান্তির সুবাতাস পৌঁছে গেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ নির্বাচনী এলাকার প্রতিটি ঘরে।
এক সময়ের প্রভাবশালী সরকারী কর্মকর্তা মোকতাদির চৌধুরীর ২০১১ সালে অনুষ্ঠিত উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য হন। এরপর ২০১৪ সালে একই আসনে পুননির্বাচিত হন। তিনি দায়িত্ব গ্রহণের পর মাত্র আট বছরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চেহারা যেন পাল্টে গেছে। এমন কোন সেক্টর নাই যেখানে উন্নয়ন পৌঁছায়নি বলে মন্তব্য করেন এলাকার বিশিষ্টজনরা। কারণ স্বাধীনতার পর থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনটি ছিল অবহেলিত ও উন্নয়ন বঞ্চিত। কিন্তু তিনি জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর তার নির্বাচনী এলাকার সকল ইউনিয়নকে উন্নয়নের মূল¯্রােতে সম্পৃক্ত করে অন্তর্ভূক্তিমূলক উন্নয়ন নিশ্চিত করেছেন। এই সময়ে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আরো কয়েকশো কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। এমনকি ভবিষ্যৎ উন্নয়ন পরিকল্পনাও করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও বিজয়নগর উপজেলায় প্রায় ৫৭ কোটি ৪৮লাখ টাকা ব্যয়ে ১৬৪টি প্রাথমিক স্কুলের অবকাঠামো উন্নয়ন, ভবন মেরামত ও সংস্কার করা হয়েছে। দুই উপজেলায় মাধ্যমিক, মাদ্রাসা ও কলেজ পর্যায়ে ৮২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রায় ১০৫ কোটি ৮৩ লাখ ৪১ হাজার টাকা ব্যয়ে অবকাঠামো উন্নয়ন, ভবন মেরামত ও সংস্কার করা হয়। এছাড়া প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজ, অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, গভঃ মডেল গার্লস বিদ্যালয় ও সাবেরা সোবহান সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে দশতলা ও ছয়তলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবন নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে সরকারি কলেজে একাডেমিক ভবন, প্রশাসনিক ভবন ও মহিলা হোস্টেলের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়াও কাজী শফিকুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স কোর্স চালু হয়েছে। কাজী রফিকুল ইসলাম স্কুল এন্ড কলেজের কলেজ অংশ চালু করা হয়েছে। চম্পকনগর স্কুল এন্ড কলেজে নতুন ভবন এবং আরো দু’টি ভবন নির্মিত হয়েছে। দাউদপুর উচ্চ বিদ্যালয়কে সরকারি করণ করা হয়েছে। সেখানে নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। অতি সম্প্রতি চান্দুরা আখাউড়া আন্ত:উপজেলা সড়কলিংক প্রস্তুতকরণ পুনগঠনের জন্য ২৪ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। প্রতিটি মাদ্রাসায় নতুন ভবন হচ্ছে। এপর্যন্ত ২৭টি কমিটিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করা হয়েছে। ভারত সরকারের অর্থায়নে একটি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণের কাজ চলছে। অধিকাংশ প্রাইমারী স্কুল ও উচ্চ বিদ্যালয়ের নতুন ভবন, প্রতিটি ইউনিয়নে আইসিটি সেন্টার, স্কুলে মাল্টিমিডিয়া ক্লাস চালু এবং ৪টি গ্রামে নতুন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে।
বিদ্যানুরাগী এই সংসদ সদস্য নিজের নির্বাচনী এলাকায় উন্নয়নের ছোঁয়া পায়নি এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুঁজে পাওয়া কঠিন। ভবন নির্মাণ সংস্কারের পাশাপাশি বিতরণ করা হয়েছে শিক্ষা উপকরণ। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ২০১১ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বিতরণকৃত বইয়ের সংখ্যা ৪৩ লাখ ৯৪ হাজার ৪৫টি। আর বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে উপবৃত্তির অর্থ বিতরণ করা হয়েছে ৩২ কোটি ৪৯ লাখ ৪ হাজার ৫৪৫ টাকা। দুই উপজেলায় ল্যাপটপ প্রদান করা হয়েছে ২২৪টি বিদ্যালয়ে, প্রজেক্টর দেওয়া হয়েছে ৮৭টি বিদ্যালয়ে এবং ডিজিটাল কন্টেন্ট এর পাঠদানকৃত বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৮৭টি। এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর শিক্ষার মান উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নয়ন হয়েছে। ২০১১ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত দুই উপজেলায় ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে ১১২৬ জন শিক্ষার্থী এবং সাধারণ বৃত্তি পেয়েছে ১১২০ জন শিক্ষার্থী।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও বিজয়নগর উপজেলায় ইতোমধ্যে ২২২ কোটি ৭০লাখ টাকা ব্যয়ে সদর উপজেলায় ৭৯৪ কিলোমিটার এবং বিজয়নগর উপজেলায় ৫১৬ কিলোমিটার নতুন বিদ্যুৎ লাইন সংযোগ করা হয়েছে। যার মধ্য দিয়ে তার নির্বাচনী আসনের দু’টি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুৎ নিশ্চিত করা হয়েছে। আর দুই উপজেলায় প্রায় ১১৬ কোটি ৪৭ লাখ ০৮ হাজার টাকা ব্যয়ে ১০৯টি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। সদর ও বিজয়নগর উপজেলার সরাসরি সংযোগ রোড শেখ হাসিনা সড়কে প্রায় শত কোটি টাকা ব্যয়ে ৩টি সেতু নির্মাণ কাজের টেন্ডার হয়েছে এবং সড়কটি নির্মাণে আরো প্রায় ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
সরেজমিনে দেখাগেছে, পুলিআউট মোড় থেকে রামরাইল ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত সেতু পর্যন্ত ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়ক পুনগঠন ও প্রস্তুতকরণ সমাপ্তির পথে। বিশ্বরোডের মোড় থেকে উজালী শহর পর্যন্ত সড়কটি ১৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে। সবগুলো ব্রিজ নতুন করে নির্মিত হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-লালপুর সড়কটি ৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে সম্প্রসারণ ও পুনগঠনের কাজ করা হয়েছে। এছাড়াও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর-আখাউড়া সড়কের ব্রিজ এবং মজলিশপুর ইউনিয়নে ভেড়িবাঁধের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
জনগণের প্রিয় এমপি মোকতাদির চৌধুরী সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে এলাকার মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য আরো অনেক ব্রিজ-কালভার্ট নির্মিত হয়েছে। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- চান্দুরা ইউনিয়নে চান্দুরা-বুধন্তি রাস্তায় লৌহ নদীর উপর ব্রিজ নির্মাণ, হরষপুর ইউনিয়নে বুল্লা-পাঁচগাঁও রাস্তায় লৌগ নদীর উপর ব্রিজ নির্মাণ, চম্পকনগর ইউনিয়নে চম্পকনগর-আউলিয়া বাজার রাস্তায় শরীফপুর আইড় ব্রিজ পুন:নির্মাণ, পত্তন ইউনিয়নে শেখ হাসিনা রোড হতে বড়পুকুর পাড় সংযোগ ব্রিজ, হরষপুর ইউনিয়নে এক্তারপুর কাইজার খালের উপর ব্রিজ, বিষ্ণুপুর ইউনিয়নে কদমতলী বাজারের দক্ষিণ পাশে কালাছড়া নদীর উপর ব্রিজ, বিষ্ণুপুর ইউনিয়নে বিষ্ণুপুর গ্রামের দক্ষিণ পাশে খালদু নদীর উপর ব্রিজ, মজলিশপুর ইউনিয়নে মজলিশপুর খরমপুর রাস্তায় দেওদিনা খালের উপর ব্রিজ নির্মিত হয়েছে। এছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক বিভাগের সুলতানপুর, চিনাইর ও আখাউড়া রাস্তা ৪৮ কোটি ৬৫লাখ টাকা ব্যয়ে উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। প্রায় ১২২ কোটি টাকা ব্যয়ে বিশ^রোড মোড় থেকে ধরখার পর্যন্ত মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ কাজ টেন্ডারের অপেক্ষায় আছে।
গণপূর্ত বিভাগের আওতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও বিজয়নগর উপজেলায় প্রায় ১৭০ কোটি ৫০ লাখ ৬৪ হাজার টাকা ব্যয়ে অবকাঠামো উন্নয়ন কাজ সমাপ্ত হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন, কারিগরি প্রশিহ্মণ কেন্দ্র, হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল নির্মাণ, জেলা রেজিস্ট্রি ভবন এবং আঞ্চলিক পাসপোর্ট ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এনএসআই ভবন নির্মাণাধীন রয়েছে। বিজয়নগর উপজেলা প্রশাসন কমপ্লেক্স, ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল, পশু চিকিৎসালয়, থানা ভবন, ফায়ার সার্ভিস স্টেশন, মিনি স্টেডিয়াম, পুলিশী তদন্ত কেন্দ্র ও পুলিশ ফাঁড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। রামপুর-মনিপুর সড়ক (মোকতাদির চৌধুরী সড়ক) নির্মিত হয়েছে। যা চান্দুরা, ইসলামপুর ও পত্তন ইউনিয়নকে শেখ হাসিনা সড়কের মাধ্যমে শহরে যুক্ত করেছে। দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের শিশুদের জন্য একটি হোষ্টেল ভবন নির্মাণসহ অনেক প্রকল্প সম্পন্ন হয়েছে। আরো কিছু চলমান রয়েছে।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পুত্র শেখ কামালের বিশেষ ঘনিষ্টচর মোকতাদির চৌধুরী ১৯৭০ সালে তৎকালীন পূর্বপাকিস্তান ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সকল আন্দোলন-সংগ্রামে ছিলেন সামনের কাতারে। একইসাথে ১৯৬৯-৭০ সালে ঢাকা কলেজ ছাত্র সংসদে সরাসরি নির্বাচনে প্রথম বারের মত নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৩-৭৪ সালে ছাত্রলীগ ও ছাত্র ইউনিয়নের সমন্বয়ে গঠিত ছাত্র সমাজের শিক্ষা কমিশনের সদস্য মনোনীত হয়েছিলেন তিনি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালে বাকশাল গঠনের সময় ২১ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। এরপর ৭৫ এর ১৫ আগস্টে জাতির পিতাকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলন গড়ে তোলার অপরাধে কারাবরণ করেন এই নেতা। হাইকোর্টে রিটের মাধ্যমে ১৯৭৮ সালে জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর ছাত্রলীগকে সংগঠিত এবং আওয়ামী লীগকে পুরুজ্জীবিত করতে কাজ শুরু করেন।
লড়াকু এই রাজনীতিক পরবর্তীতে সরকারী চাকরিতে যোগদান করেন। চাকুরী জীবনে তিনি দেশে নিপা থেকে আইন প্রশিক্ষণ, বিপিএটিসি থেকে বুনিয়াদী প্রশিক্ষণ, বিএমএ থেকে সামরিক প্রশিক্ষণ এবং সার্ভে এন্ড সেটেলমেন্ট অধিদপ্তর থেকে সার্ভে এন্ড সেটেলমেন্ট প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। এছাড়াও থাইল্যান্ডের এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে (এআইটি) প্রশিক্ষণসহ ১৯৮১ সনে বুলগেরিয়ার জর্জি দিমিত্রিভ ইনস্টিটিউট অব লেবার ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। তিনি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত সচিব থাকাকালীন ১৯৯৬ ও ২০০০ সালে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে গঠিত প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ, ১৯৯৬-এ দিল্লীতে গঙ্গার পানি চুক্তি সম্পাদনে এবং ১৯৯৭ সনে লাহোরে অনুষ্ঠিত ওআইসি’র বিশেষ অধিবেশনে অংশগ্রহণ করেন। কর্মজীবনে তিনি শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, জর্দান, সিরিয়া, মরক্কো, ভারত, জার্মানী, ইন্দোনেশিয়া, বেলজিয়াম, তাজিকিস্তান, ফিলিপাইন, জাপান, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র সফর করেন। তবে ২০০১ এর ক্ষমতার পালা বদলের পর স্বাধীনচেতা এই মানুষটি সরকারি চাকুরি নামক গোলামী ছেড়ে জনসেবার উদ্দেশ্যে ফিরে যান নিজের জন্মস্থান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চিনাইর গ্রামে। এলাকার উন্নয়ন এলাকাবাসীর কল্যাণে আত্মনিয়োগ করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অত্যন্ত আস্থাভাজন মোকতাদির চৌধুরী নবম জাতীয় সংসদের উপ-নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর অত্যন্ত দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে। একইভাবে দশম সংসদের একজন নির্বাচিত এই সদস্য পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে ইতিমধ্যেই সফলতা রেখেছেন। এছাড়াও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন।
জাতির জনকের স্নেহভাজন মোকতাদির চৌধুরী দেশী-বিদেশী বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানের দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশন বোর্ড অব গভর্নের্সের গভর্নর এবং আন্তর্জাতিক ইসলামিক ত্রাণ সংস্থার জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য। এছাড়াও জীবন সদস্য হিসেবে রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রেজিষ্টার্ড গ্রাজুয়েট, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া পাবলিক লাইব্রেরী, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া ইসলামিক সেন্টার, আশুগঞ্জ গণ-গ্রন্থাগার, আশুগঞ্জ সমন্বিত সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্র, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জাতীয় অন্ধ কল্যাণ সমিতি, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া সমাজ কল্যাণ সংসদ এবং বাংলা একাডেমী। তিনি চিনাইর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কলেজ, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া আইন কলেজ ও ব্রাহ্মণবাড়ীয়া পৌর ডিগ্রি কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি এবং ব্রাহ্মণবাড়ীয়া শহর সমাজ সেবা প্রকল্প সমন্বয় পরিষদ ও ব্রাহ্মণবাড়ীয়া সুইড বাংলাদেশের পৃষ্ঠপোষক এবং আজীবন সদস্যসহ ব্রাহ্মণবাড়ীয়া বিশ্বরঞ্জন সেন চরকা ও কুঠির শিল্প প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও সুহিলপুর এইচ আর কলেজ, চম্পকনগর কলেজ ও নরসিংসার কলেজের গভার্নিং বডির নির্বাচিত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য বিদ্যানুরাগী এই নেতা এলাকায় শিক্ষা বিস্তারে অনেক দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীর লেখাপড়ার খরচ বহন করছেন। তিনি দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় চিনাইর শিশু মেধাবৃত্তি ফাউন্ডেশন, মোকতাদির-ফাহিমা কল্যাণ ট্রাস্ট, দুরুখশাবানু, হালিমা খাতুন চৌধুরী, শহীদ শেখ কামাল, আব্দুল হাই এবং সাফিয়া খাতুন স্মৃতি বৃত্তি ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠা করেছেন। এছাড়াও তিনি চিনাইর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ডিগ্রি কলেজ, গৌতমপাড়া বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়, ঘাটিয়ারা মাদ্রাসা এবং চিনাইর আব্দুর রউফ চৌধুরী স্মৃতি আদর্শ কিন্ডার গার্টেনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা।
মানব কল্যাণে জীবন উৎসর্গকারী এই সংসদ সদস্য নানা ব্যস্ততার মধ্যেও নিয়মিত বই পড়েন। জ্ঞানচর্চায় নিয়োজিত থাকার পাশাপাশি সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে বেশ কিছু গ্রন্থ রচনা করেছেন। তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে ‘বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা এবং বিবিধ প্রসঙ্গ’, ‘ইসলাম, সন্ত্রাসবাদ,রাজনীতি ও প্রশাসন’, ‘সময়ের কথকতা’, ‘দুরারোগ্য সময় এবং গণতন্ত্রের অভিযাত্রা’, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জীবন ও কর্ম’, ‘ইসলামের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল’,‘স্বাধীনতা গণতন্ত্র ও সময়ের কথা’ এবং ‘সময়ের সাহসী সন্তান’ অন্যতম।
বাংলাদেশ সময়: ০:০৩:১৮ ৩৩৭ বার পঠিত