জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) আজ ১৪ হাজার ২৫০ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয় বাংলাদেশ রেলওয়ের জয়দেবপুর থেকে ঈশ্বরদী পর্যন্ত ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন করেছে।
একনেক চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আজ রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে চলতি অর্থবছরে একনেকের ত্রয়োদশ সভায় এ অনুমোদন দেয়া হয়।
সভা শেষে পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল সাংবাদিকদের বলেন, আজকের বৈঠকে মোট ৩৯টি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে। এ জন্য আনুমানিক ব্যয় হবে ৮৬ হাজার ৬৮৬ কোটি ৯৫ লাখ টাকা।
তিনি বলেন, ‘মোট ব্যয়ের ৬৬ হাজার ৪৬৬ কোটি ৫১ লাখ টাকার যোগান দিবে বাংলাদেশ সরকার, ৩১৩ কোটি ২১ লাখ টাকা সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো নিজস্ব তহবিল থেকে এবং বাকি ১৯ হাজার ৯০৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা প্রকল্প সহায়তা হিসেবে পাওয়া যাবে।
অনুমোদিত ৩৯টি প্রকল্পের মধ্যে ৩১টি নতুন এবং বাকি ৮টি সংশোধিত প্রকল্প।
আ হ ম মুস্তাফা কামাল জানান, অক্টোবর মাসে মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৪০ শতাংশ, সেপ্টেম্বর মাসে এই হার ছিল ৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
পরিকল্পনামন্ত্রী আরো বলেন, পল্লী অবকাঠামো, দারিদ্র্য বিমোচন এবং গ্রামীণ সড়ক নির্মাণে বেশ কিছু প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, বৃহত্তর ঢাকার পল্লী অবকাঠামো উন্নয়নে আলাদা আলাদা প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। তিন পার্বত্য জেলার ক্ষতিগ্রস্ত পল্লী সড়ক অবকাঠামো উন্নয়ন, কুড়িগ্রাম ও জামালপুরে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন, গ্রামীণ সড়কে ১৫ মিটার দৈর্ঘ্য সেতু-কালভার্ট নির্মাণ, গ্রামীণ মাটির রাস্তাগুলো টেকসই করতে হেরিংবোন এবং গ্রাম সড়ক উন্নয়নের প্রকল্পগুলোও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কুমিল্লা জেলার পাঁচটি পৌরসভা, ফরিদপুর শহরের টেপাখোলা লেক উন্নয়ন, টাঙ্গাইল জেলার অবকাঠামো উন্নয়ন, সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপন, জয়দেবপুর থেকে ঈশ্বরদী পর্যন্ত ডুয়েলগেজ ডাবল লাইন নির্মাণের নতুন প্রকল্পও অনুমোদন পেয়েছে আজকের একনেকে।
পরিকল্পনামন্ত্রী আরো জানান, ঢাকায় কর্মরত পুলিশের সব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের আবাসিক ভবন নির্মাণ এবং অভিযানে সক্ষমতা বাড়াতে যানবাহন ক্রয়সহ মোট পাঁচ প্রকল্প উঠছে আজ। এ ছাড়া র্যাবের প্রযুক্তি ও কারিগরি সক্ষমতা বাড়াতে ওঠানো হচ্ছে আরেকটি প্রকল্প। বাংলাদেশ পুলিশের অভিযানের সক্ষমতা বাড়াতে ৯৯৪টি যানবাহন কেনার প্রস্তাব দিয়েছে জননিরাপত্তা বিভাগ। এসব গাড়ি ক্রয়ে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৫০ কোটি টাকা। এ ছাড়া পুলিশের ৫০ হাজার জনবল বাড়ানোর প্রক্রিয়া চলমান আছে। এ অবস্থায় পুলিশের সক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধির অন্যতম বাধা যানবাহনের এই ঘাটতি অতিদ্রুত পূরণ করার লক্ষ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের প্রস্তাব করা হয়েছে। ২০২০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। পুলিশ সদস্যদের আবাসিক সংকট নিরসনে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় নয়টি আবাসিক টাওয়ার ভবন নির্মাণ প্রকল্পও একনেকে ওঠানো হচ্ছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৭৫ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় বর্তমানে ৩৩ হাজারের বেশি পুলিশ সদস্য কর্মরত আছেন। কিন্তু ঢাকায় কর্মরত এ বিশাল পুলিশ বাহিনীর জন্য চাহিদার তুলনায় আবাসন সুবিধা অপ্রতুল। এ কারণে প্রকল্পের আওতায় নয়টি আবাসিক ভবন নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে ২০ তলা ভবন নির্মাণ হবে চারটি, একটি ১৫ তলা ও দুটি ২০ তলা। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জন্য ঢাকার গুলশানে আবাসিক ভবন নির্মাণে ১১৯ কোটি টাকার আরও একটি প্রকল্পও একনেকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জন্য নির্মাণ করা হবে ১৬ তলা ভিতে ১৪ তলা আবাসিক ভবন। এসব ভবনে মোট ফ্ল্যাটের সংখ্যা হবে ৫২টি। বাংলাদেশ পুলিশের সন্ত্রাস দমন ও আন্তর্জাতিক অপরাধ প্রতিরোধ কেন্দ্র নির্মাণে ৩৫৪ কোটি টাকার আরেকটি প্রকল্প প্রস্তাবও একনেকে উঠছে। অন্যদিকে, হাইওয়ে পুলিশের সক্ষমতা বাড়াতেও একটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
image_print
বাংলাদেশ সময়: ২৩:৩৫:১৪ ১৬৯ বার পঠিত