সিলেট টেস্টে জিম্বাবুয়ের কাছে হতাশাজনকভাবে হেরে গেছে বাংলাদেশ। হারটা একেবারে ছোটখাটো ছিল না। চারদিনে শেষ হওয়া ম্যাচটিতে বাংলাদেশ হেরেছিল ১৫১ রানে। দুই ম্যাচ সিরিজে বাংলাদেশের সামনে এবার সিরিজ বাঁচানোর চ্যালেঞ্জ। সিরিজের দ্বিতীয় তথা শেষ ম্যাচটি শুরু হচ্ছে আগামীকাল। এই ম্যাচে বাংলাদেশের জয়ের কোনো বিকল্প নেই। এমন চ্যালেঞ্জ সামনে রেখে হ্যামিলটন মাসাকাদজাদের বিপক্ষে আজ মাঠে নামবে টাইগাররা। মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠেয় ম্যাচটিতে প্রতিদিন খেলা শুরু হবে সকাল ১০টায়।
র্যাঙ্কিং ও শক্তি উভয় দিক থেকেই জিম্বাবুয়ের চেয়ে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে। আইসিসি টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে ৬৭ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশ এখন আছে নবম অবস্থানে। দুই পয়েন্ট নিয়ে দশম অবস্থানে আছে জিম্বাবুয়ে। ২০১৪ সালে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজে জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করেছিল টাইগাররা। কিন্তু এবার লজ্জাজনক পরাজয়ের মাধ্যমে সিরিজ শুরু করেছে বাংলাদেশ।
হারের পেছনে অন্যতম কারণ হচ্ছে এই সিরিজে সাকিব-তামিমের অনুপস্থিতি। তাছাড়া সিলেট টেস্টে মোস্তাফিজুর রহমানকে নিয়েও ঝুঁকি নিতে চাননি নির্বাচকরা। তাই তাকে একাদশের বাইরে রাখা হয়। সবমিলিয়ে সিলেট টেস্টে শক্তিমত্তার দিক থেকে দলে বেশ কিছু ঘাটতি ছিল। ঢাকা টেস্টে দৃঢ়ভাবে ফেরার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে টাইগাররা। এই ম্যাচে ফিরতে পারেন ‘কাটার মাস্টার’ মোস্তাফিজুর রহমান। মোস্তাফিজ ফিরলে দলের বোলিং আক্রমণ শক্তিশালী হবে।
মিরপুর টেস্ট সামনে রেখে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে টাইগার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বলেন, ‘আমরা সব প্রতিপক্ষকে সমানভাবে দেখি। ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়াকে যেভাবে দেখি জিম্বাবুয়েকেও একই চোখে দেখি। কারণ মাঠে গিয়ে ভালো খেলাটাই মূল লক্ষ্য। সেটা যদি আপনি করতে না পারেন তাহলে আপনারও খারাপ লাগবে। কারণ আপনি দেশের হয়ে ভালো করতে পারছেন না। এটা সবাইকে অনেক পীড়া দেয়। দ্বিতীয় ম্যাচ নিয়ে আমরা সবার সঙ্গে কথা বলেছি, টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গেও আলাপ হয়েছে। আমাদের এখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার মতো অবস্থা। আমাদের শক্তভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। এখানে জয় ছাড়া অন্য কোনো সুযোগ নেই।’
টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ে এখন পর্যন্ত ১৫ বার মুখোমুখি হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ জয় পেয়েছে পাঁচটি ম্যাচে। জিম্বাবুয়ে জয় পেয়েছে সাতটি ম্যাচে। তিন ম্যাচ ড্র হয়েছে।
বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের মধ্যে এখন পর্যন্ত যে কয়টি টেস্ট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে তার মধ্যে সেরা রান সংগ্রহকারী ব্যাটসম্যান জিম্বাবুয়ের হ্যামিলটন মাসাকাদজা। নয় ম্যাচে তার রান সংখ্যা ৮৪৪। দ্বিতীয় অবস্থানে আছেন জিম্বাবুয়ের ব্রেন্ডন টেইলর। নয় ম্যাচে তার সংগ্রহ ৮২৩ রান। ৫৭৮ রান সংগ্রহ করে তৃতীয় অবস্থানে আছেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার। ৫২৯ রান সংগ্রহ করে চতুর্থ অবস্থানে আছেন জিম্বাবুয়ের তাতেন্দা তাইবু। ৪৭৪ রান করে পঞ্চম অবস্থানে আছেন বাংলাদেশের সাকিব আল হাসান।
বোলারদের মধ্যে শীর্ষে আছেন টাইগার স্পিনার তাইজুল ইসলাম। তার উইকেট সংখ্যা ২৮টি। দ্বিতীয় অবস্থানে আছেন টাইগার অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। তার উইকেট সংখ্যা ২৬টি। ২১টি উইকেট শিকার করে তৃতীয় অবস্থানে আছেন বাংলাদেশের এনামুল হক জুনিয়র। ২০ উইকেট শিকার করে চতুর্থ অবস্থানে আছেন জিম্বাবুয়ের হিথ স্ট্রিক। ১৮ উইকেট নিয়ে পঞ্চম অবস্থানে আছেন জিম্বাবুয়ের তিনাসে পানিয়াঙ্গারা।
টেস্টে বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে পরিসংখ্যান
বাংলাদেশ:
মোট ম্যাচ: ১৫
জয়: ৫
হার: ৭
ড্র: ৩
এক ইনিংসে দলীয় সর্বোচ্চ স্কোর: ৫০৩
এক ইনিংসে দলীয় সর্বনিম্ন স্কোর: ১০৭
সর্বোচ্চ রান: হাবিবুল বাশার-৫৭৮ রান
এক ইনিংসে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রান: সাকিব আল হাসান-১৩৭ রান
বেশি সেঞ্চুরি: তামিম ইকবাল-২টি
বেশি ছক্কা: মোহাম্মদ রফিক-৬টি
বেশি উইকেট: তাইজুল ইসলাম-২৮টি
বেশি ডিসমিসাল: মুশফিকুর রহিম-২১টি
জিম্বাবুয়ে:
মোট ম্যাচ: ১৫
জয়: ৭
হার: ৫
ড্র: ৩
এক ইনিংসে দলীয় সর্বোচ্চ স্কোর: ৫৪২/৭ডি
এক ইনিংসে দলীয় সর্বনিম্ন স্কোর: ১১৪
বেশি রান: হ্যামিলটন মাসাকাদজা-৮৪৪ রান
এক ইনিংসে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রান: ব্রেন্ডন টেইলর-১৭১ রান
বেশি সেঞ্চুরি: হ্যামিলটন মাসাকাদজা ৩টি, ব্রেন্ডন টেইলর-৩টি
বেশি ছক্কা: হ্যামিলটন মাসাকাদজা-১২টি
বেশি উইকেট: হিথ স্ট্রিক-২০টি
বেশি ডিসমিসাল: তাতেন্দা তাইবু-২০টি
বাংলাদেশ সময়: ১৮:১২:৫৫ ২০১ বার পঠিত