প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, ‘মেজর গণির আদর্শ ও কর্ম প্রতিটি বাঙালীর জীবনে প্রাতঃস্মরণীয় হয়ে থাকবে।’
আজ শনিবার সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির শহিদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আগামীকাল ১১ নভেম্বর মেজর গণির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মেজর গনি পরিষদের সভাপতি আইনজীবী মো. হুমায়ুন কবিরের সভাপতিত্বে ও সাংবাদিক ফারুক খান এবং দিদারুল আলম দিদারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন মেজর জেনারেল (অব.) ইমামুজ্জামান বীর বিক্রম, এফবিসিআইআই’র পরিচালক হেলেনা জাহাঙ্গীর প্রমুখ।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন নতুন প্রজন্মকে মেজর গণির কীর্তিময় জীবন ও আদর্শ চর্চা করার জন্য আহ্বান জানিয়ে বলেন, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে তিনি বাঙালি জাতির কৃতি সন্তান হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ^াস করি। নতুন প্রজন্মকে আমি তার কীর্তিময় জীবন ও আদর্শ চর্চা করার জন্য অনুরোধ করব।
তিনি বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের অগ্র সেনানী দল ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের প্রতিষ্ঠাতা, ভাষা আন্দোলনের অগ্র সৈনিক, প্রাদেশিক আইন সভার সদস্য, জাতীয় বীর বঙ্গশার্দুল মেজর আবদুল গণি প্রকৃত দেশপ্রেমিক ছিলেন।
তিনি বলেন, মেজর আবদুল গণি ছিলেন একজন প্রকৃত দেশপ্রেমিক। তিনি বাঙালী জাতির অকুতোভয় সৈনিক, তার হাতে গড়ে উঠেছে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট। দ্বিতীয় বিশ^যুদ্ধে বার্মার রনাঙ্গণে মেজর গণি’র বীরত্বের কারণে বাঙালীদের নিয়ে আলাদা রেজিমেন্ট গঠনের সূত্রপাত হয়।
প্রধান বিচারপতি বলেন, শৈশবেই আবদুল গণি’র মানস কাঠামো শক্ত ভিতের উপর গড়ে উঠেছিল। তাঁর জীবনের উষা ও গোধুলিলগ্ন এক মহানুভব জীবনধারার স্বতঃম্ফূর্ত স্মারক চিহ্ন। তারুণ্যের শুরুতেই তিনি তরুণ সম্প্রদায়কে সুপথে পরিচালনায় ‘সবুজ কোর্তা’ নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন। তিনি একজন শিক্ষানুরাগী ছিলেন। শিক্ষা বিস্তার, সামাজিক ও অর্থনৈতিক মুক্তি এবং শোষণমুক্ত সমাজ বির্নিমাণে মেজর গণি গুরুত্বপূর্ন অবদান রেখে গেছেন।
অনুষ্ঠানে মেজর গণি’র আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া পরিচালনা করেন নাগাইশ দরবার শরীফের পীর মাওলানা মোশতাক ফয়েজী।
আগামীকাল ১১ নভেম্বর মেজর গণির ৬২তম মৃত্যুবার্ষিকী। মেজর আব্দুর গণির জন্ম ১৯১৫ সালের ১লা ডিসেম্বর কুমিল্লার ব্রাক্ষণপাড়া উপজেলার নাগাইশ গ্রামে রএক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে।
মেজর গণি ১৯ ৫৩ সালে সামরিক চাকরি থেকে বেরিয়ে যোগ দেন রাজনীতিতে। ১৯ ৫৪ সালে প্রাদেশিক আইন সভার নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নিজ জেলা কুমিল্লার বুড়িচং এলাকা থেকে তিনি বিপুল ভোটে আইন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৫৭ সালে জার্মানী সফর কালে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ৪২ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮:২৮:৩১ ১৮৮ বার পঠিত