‘তোতাপাখি’র ডানা ছাটলেন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু৷ তদন্তের স্বার্থে যখন তখন রাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে না কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই৷ তার জন্য আগে থেকে রাজ্য সরকারের অনুমিত নিতে হবে তদন্তকারী দলকে৷ অনুমতি মিললে তবেই তদন্তের কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে সিবিআই৷ চন্দ্রবাবু অতীতে বহুবার অভিযোগ তুলেছেন সিবিআই ও ইনকাম ট্যাক্সকে কাজে লাগিয়ে বিজেপি সরকার রাজ্যে অস্থিরতার পরিবেশ তৈরি করতে চাইছে৷
অন্যদিকে সিবিআই সূত্রে খবর, এখনও অবধি তাদের কাছে রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা এসে পৌঁছয়নি৷ তবে এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে আইনি পথে যাওয়ার কথা ভাবছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা৷ সূত্রের খবর, নোটিশ হাতে পাওয়ার পরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে৷ চন্দ্রবাবু সরকারের এই সিদ্ধান্তে খুশি হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তিনি জানান, চন্দ্রবাবু উচিত কাজ করেছে৷ সিবিআই বিজেপির নির্দেশে ওঠাবসা করে৷
অন্ধ্র সরকারের স্বরাষ্ট্র দফতরের প্রধান সচিব এ আর অনুরাধার সই করা বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশ পায় ৮ নভেম্বর৷ সিবিআই যাতে রাজ্যে এসে স্বাধীনভাবে তদন্ত চালিয়ে যেতে পারে তার জন্য ‘জেনারেল কনসেন্ট’ বা সম্মতি দিয়েছিল অন্ধ্রপ্রদেশ৷ ‘জেনারেল কনসেন্ট’ সিবিআইকে দেওয়া রাজ্য সরকারের বিশেষ ক্ষমতা৷ সেই ক্ষমতাবলে সিবিআই রাজ্যে যখন তখন এসে তদন্তের কাজ করতে পারে৷ কিন্তু বিজ্ঞপ্তি জারি করে সেই অধিকার রাজ্য সরকার সিবিআইয়ের কাছ থেকে এবার কেড়ে নিচ্ছে৷
কোনও রাজ্য সরকার এই সম্মতি প্রত্যাহার করে নিতে পারে কিনা সেই নিয়ে উঠছে প্রশ্ন৷ যদিও সিবিআইয়ের এক অফিসার জানিয়েছে, সরকার চাইলে সেটা করতে পারে৷ দিল্লি স্পেশাল পুলিশ এসটাবনিশমেন্ট অ্যাক্ট ১৯৪৬ এর ৫ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে তদন্তের স্বার্থে সিবিআই দেশের যেকোনও প্রান্তে যেতেই পারে৷ আবার ৬ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, এক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের আপত্তি থাকলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা কিন্তু সেই রাজ্যের ত্রিসীমানার মধ্যেও ঢুকতে পারবে না৷
জানা গিয়েছে, সিবিআইয়ের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করেই চন্দ্রবাবু নাইডুর সরকারের এই সিদ্ধান্ত৷ এই সিদ্ধান্তের কারণ হিসাবে সিবিআইয়ের গৃহযুদ্ধকে দায়ী করা হয়েছে৷ বলা হয়েছে, সিবিআইয়ের এক ও দুই নম্বর ব্যক্তি যেভাবে একে অপরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছেন তারপর এই সংস্থার প্রতি আস্থা রাখা যায় না৷ তাই ‘জেনারেল কনসেন্ট’ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত৷ তবে যতই রাজ্য সরকার এই সিদ্ধান্তের পিছনে সিবিআইয়ের প্রতি অনাস্থাকে ঢাল করেছে, কিন্তু তেলেগু দেশম পার্টির সুপ্রিমোর এই নির্দেশে পিছনে কাজ করছে রাজনৈতিক কারণ৷
বাংলাদেশ সময়: ০:০৭:৩৭ ১৯৩ বার পঠিত