অভিষেকেই ভেলকি দেখালেন নাঈম হাসান। অসাধারণ কৃতিত্ব দেখিয়েছেন ১৭ বছর বয়সী এই স্পিনার। চট্টগ্রাম টেস্টে তার ৫ উইকেট এবং অধিনায়কের ৩ উইকেট শিকারে ২৪৬ রানে অলআউট ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এখনও ৭৮ রানে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ।
এদিন প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ৩২৪ রানের টাগেটে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো করতে পরেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শুরুতেই ফরে যান কাইরন পাওয়েল। বাংলাদেশকে প্রথম উইকেট উপহার দেন তাইজুল ইসলাম। এলবিডব্লিউ করে ফেরান ক্যারিবীয় ওপেনারকে। এর কিছুক্ষণ পর সাকিবের জোড়া আঘাতে চাপে পড়ে উইন্ডিজ। বোল্ড হয়ে ফেরেন শাই হোপ। কয়েক মিনিটের ব্যবধানে সাকিবের বলে সৌম্য সরকারের তালুবন্দি হয়ে ফেরেন ক্রেগ ব্র্যাথওয়েট।
চাপের মুখে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন রোস্টন চেজ। সুনিল আমব্রিসকে নিয়ে ধীরে ধীরে চাপ কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করেন তিনি। তাকে যথার্থ সঙ্গ দিতে থাকেন আমব্রিসও। তবে তাদের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ান নাঈম হাসান। দুর্দান্ত ডেলিভেরিতে শর্ট লেগে ইমরুল কায়েসের তালুবন্দি করে চেজকে (৩১) ফেরান তিনি। অভিষেক ম্যাচে এটি তার প্রথম উইকেট। এতে সফরকারীদের ওপর চাপ অব্যাহত থাকে। একটু পরেই আমব্রিসকে (১৯) এলবিডব্লিউ করে ফেরান এ অফস্পিনার। ফলে মহাবিপর্যয়ে পড়ে সফরকারীরা।
এ পরিস্থিতিতে নেমে আপাতদৃষ্টিতে ধীরে চলো নীতিগ্রহণ করার কথা একজন ব্যাটসম্যানের। তবে ঠিক উল্টো পথে হাঁটেন শিমরন হেটমায়ার। ক্রিজে এসেই ঝড় তোলেন তিনি। তাতে এলোমেলো হয় বাংলাদেশের বোলিং লাইনআপ। তবে মোটেই দমে যাননি টাইগাররা। চেষ্টা চালিয়ে যান তারা। অবশেষে থামতে বাধ্য হন হেটমায়ার। রূদ্রমূর্তি ধারণ করা ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। দুর্দান্ত ডেলিভেরিতে মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসবন্দি করে তাকে ফেরান তিনি। তাতে ভাঙে ৯২ রানের জুটি। ফেরার আগে টি-টোয়েন্টি মেজাজে ৪৭ বলে ৫ চার ও ৪ ছক্কায় ৬৩ রান করেন হেটমায়ার।
তিনি ফিরলেই পথ হারায় ক্যারিবীয়রা। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে ফিরিয়ে দেন কেমার রোচ ও দেবেন্দ্র বিশুকে। দুজনকেই এলবিডব্লিউ করে সোজা ড্রেসিংরুমের পথ ধরান তিনি। পরক্ষণেই জোমেল ওয়ারিক্যানকে বোল্ড করে গড়েন অভিষেকে ৫ উইকেট নেয়ার কীর্তি। এ নিয়ে নাঈমুর রহমান দুর্জয়দের কাতারে বসেন এ অফস্পিনার।
টাইগারদের হয়ে অভিষেক টেস্টেই ৫ উইকেট নেয়ার কীর্তি আছে নাঈমুর রহমান দুর্জয়, মঞ্জুরুল ইসলাম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, ইলিয়াস সানি, সোহাগ গাজী, তাইজুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজের। অষ্টম বোলার হিসেবে এ নজির স্থাপন করেন নাঈম।
প্রতিপক্ষ শিবিরে শেষ পেরেকটি ঠুকেন সাকিব। গ্যাব্রিয়েল শ্যাননকে মাহমুদউল্লাহর ক্যাচ বানিয়ে তাদের গুটিয়ে দেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। বাংলাদেশের হয়ে অভিষিক্ত নাঈম নেন ৫ উইকেট; সাকিবের শিকার ৩টি।
এর আগে প্রথম দিনের ৮ উইকেটে ৩১৫ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। তাইজুল ইসলাম ৩২ এবং নাঈম হাসান ২৪ রান নিয়ে খেলা শুরু করেন। যতটা সম্ভব সংগ্রহ বাড়িয়ে নেয়া লক্ষ্য ছিল টাইগারদের। এজন্য তাইজুল ইসলাম এবং নাঈম হাসানের দিকে তাকিয়ে ছিল।
তবে এদিন খুব বেশি দূর যেতে পারেনি এ জুটি। শুরুতেই জোমেল ওয়ারিক্যানের বলে শাই হোপকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন নাঈম (২৬)। খানিক বাদেই একই বোলারের এলবিডব্লিউ ফাঁদে পড়ে ফেরেন মোস্তাফিজুর রহমান। এতে ৩২৪ রানে গুটিয়ে যায় স্বাগতিকরা। ৩৯ রানে অপরাজিত থাকেন তাইজুল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ৪টি করে উইকেট শিকার করেন শ্যানন গ্যাব্রিয়েল ও জোমেল ওয়ারিক্যান।
বাংলাদেশ সময়: ২২:২৭:০২ ১৯৮ বার পঠিত