নিউজটুনারায়ণগঞ্জঃ বাংলাদেশকে এখন আর কেউ ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ বলার ধৃষ্টতা দেখায় না। বরং বিশ্বের অনেক বড় নেতা, থিংকট্যাংক, অর্থনীতিবিদ বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা করছেন। বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে আখ্যায়িত করছেন। মূলত গত ১০ বছরে বাংলাদেশে উন্নয়নের যে গতিধারা সূচিত হয়েছে, তা কিভাবে সম্ভব হয়েছে, সেটিই এখন অনেকের কাছে বিস্ময়ের ব্যাপার। অবকাঠামো খাতে বিপ্লব সাধিত হয়েছে। বিদ্যুতের অভাবে কলকারখানা বন্ধ হয় না। গড়ে উঠছে নতুন নতুন কলকারখানা। কর্মসংস্থান দ্রুত বাড়ছে। দেশের চাহিদা মিটিয়ে অনেক পণ্য বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে।
রপ্তানি আয় ৪০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৪ বিলিয়ন ডলারের বেশি। দারিদ্র্যের হার ৪০ থেকে ২১ শতাংশে নেমে এসেছে। উন্নয়নের সূচকগুলোতে বাংলাদেশের অবস্থান দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশের চেয়ে ভালো। বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত থেকে আজ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনই এক পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে গত বুধবার উদ্যাপিত হয়েছে সশস্ত্র বাহিনী দিবস। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
বিকেলে সেনাকুঞ্জে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের উন্নয়নে এবং দেশকে এগিয়ে নিতে আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি। আমরা কতটুকু সফল হয়েছি, তা দেশবাসী বিবেচনা করবে। সামনে নির্বাচন। জনগণ ভোট দিলে উন্নয়নের সেই ধারাকে আরো এগিয়ে নেওয়ার সুযোগ পাব। সুযোগ না পেলেও কোনো আক্ষেপ থাকবে না।’ একজন প্রকৃত নেতার যথার্থ উক্তি।
বাংলাদেশ শুধু যে অর্থনৈতিকভাবেই এগিয়েছে, তা নয়। গণতন্ত্র, সুশাসন, দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনসহ সামাজিক সূচকগুলোতেও বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। ভারতের সঙ্গে ছিটমহল সমস্যার সমাধান হয়েছে। দুই দেশের সম্পর্ক অনেক বন্ধুত্বপূর্ণ ও সহযোগিতামূলক হয়েছে। মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে বিবাদ মিটিয়ে বিশাল সমুদ্রসীমায় বাংলাদেশের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ব্লু ইকোনমি সম্প্রসারণের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। পরিবর্তিত অবস্থায় দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার বিষয়টিও জরুরি হয়ে উঠেছে। গত ১০ বছরে সশস্ত্র বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধির দিকেও ব্যাপক গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে আমাদের প্রতিরক্ষা বাহিনীগুলোর সক্ষমতা অনেক ভালো।
বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে যুক্ত হয়েছে দুটি অত্যাধুনিক সাবমেরিনসহ অনেক জাহাজ ও সরঞ্জাম। বিমানবাহিনীতে যুক্ত হয়েছে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমানসহ সর্বাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতেও অত্যাধুনিক ট্যাংক, ক্ষেপণাস্ত্র, এভিয়েশন শাখাসহ বহু যুদ্ধায়োজন যুক্ত হয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী এখন স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও দেশের স্বার্থ রক্ষায় পরিপূর্ণ সক্ষমতা অর্জন করেছে। এর পরও আধুনিকায়ন ও সক্ষমতা বৃদ্ধি একটি চলমান প্রক্রিয়া।
সেটি উপলব্ধিতে নিয়েই প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, সশস্ত্র বাহিনীর এই আধুনিকায়ন চলবে। উত্তরোত্তর বাহিনীগুলোর শক্তি বৃদ্ধিতে সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। গণতান্ত্রিক দেশে একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর নির্বাচন আসবে। জনগণ তাদের পছন্দের সরকারকেই ক্ষমতায় বসাবে। আমরা আশা করি, উন্নয়নের যে গতিধারা সূচিত হয়েছে, তা অব্যাহত থাকবে এবং দেশ উত্তরোত্তর এগিয়ে যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭:৪০:২৭ ১৬৪ বার পঠিত