রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ৯ ডিসেম্বর ‘বেগম রোকেয়া দিবস - ২০১৮’ ও ‘বেগম রোকেয়া পদক’ উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
“মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক ‘বেগম রোকেয়া দিবস - ২০১৮’ উদযাপন ও ‘বেগম রোকেয়া পদক’ প্রদানের উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন নারীমুক্তি, সমাজ সংস্কার ও প্রগতিশীল আন্দোলনের পথিকৃৎ। আজকের এই দিনে আমি তাঁর স্মৃতির প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা। বেগম রোকেয়া উন্নত মানসিকতা, দূরদর্শী চিন্তা, যুক্তিপূর্ণ মতামত প্রদান ও বিশ্লেষণ, উদার মানবতাবোধের অবতারণা এবং সর্বোপরি দৃঢ় মনোবল দিয়ে তৎকালীন নারী সমাজকে জাগিয়ে তোলেন। বাঙালি মুসলিম নারীদের অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি পর্দার অন্তরালে থেকেই নারীশিক্ষা বিস্তারে প্রয়াসী হন এবং মুসলমান মেয়েদের অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্তির পথ সুগম করেন। সামাজিক নানা বিধি-নিষেধ, নিয়ম-নীতির বেড়াজাল অগ্রাহ্য করে তিনি আর্বিভূত হন অবরোধবাসিনীদের মুক্তিদূত হিসেবে। বেগম রোকেয়ার জীবনাদর্শ ও কর্ম আমাদের নারী সমাজের অগ্রযাত্রায় পথপ্রদর্শক হয়ে থাকবে। বাংলাদেশে জনসংখ্যার অর্ধেকই নারী। নারী-পুরুষের সমান অংশীদারিত্ব ব্যতীত টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। সরকার নারী সমাজকে দেশের সার্বিক উন্নয়নে সম্পৃক্তকরণের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়নে নিরবচ্ছিন্ন কাজ করে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে প্রণয়ন করা হয়েছে জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি, ২০১১। ভিজিডি, বিধবা ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা, ল্যাকটেটিং মাদার সহায়তা কার্যক্রমসহ বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির মাধ্যমে নারীদের অর্থনৈতিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। শতভাগ উপবৃত্তি প্রদান ও অবৈতনিক শিক্ষা কার্যক্রমের ফলে শিক্ষাক্ষেত্রেও নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, প্রকৌশলসহ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জিং পেশায় আজ নারীদের অবাধ পদচারণা। নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ সারাবিশ্বে রোল-মডেল হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। দেশের উন্নয়নে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলেই সহযাত্রী হিসেবে কাজ করবেন। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলায় পরিণত হবে, বেগম রোকেয়া দিবসে - এ প্রত্যাশা করি। এ বছর ‘বেগম রোকেয়া পদক’ প্রাপ্ত সকলকে আমি আন্তরিক শুভেচ্ছা ওঅভিনন্দন জানাচ্ছি।
আমি ‘বেগম রোকেয়া দিবস - ২০১৮’ উদযাপন উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচি সফল হোক - এ কামনা করি।
খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”
বাংলাদেশ সময়: ২১:২৫:২৭ ১৮৮ বার পঠিত