গাজীপুর সিটি করপোরেশনে স্কুলছাত্র ইফতিয়াক হোসেন নিফাতকে অপহরণের পর হত্যার অভিযোগে পাঁচজনকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সিটি করপোরেশনের বাহাদুরপুর এলাকা থেকে তাদের আটক কারা হয়।
আটককৃতরা হলেন- নেত্রকোনা জেলার নোয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম, তার মা রোজিনা বেগম, স্ত্রী তানজিনা। এ ছাড়া একই এলাকার আলী আহম্মেদের স্ত্রী মাজেদা বেগম ও কবিরুল ইসলামের স্ত্রী মঞ্জুরা বেগম। তবে এ ঘটনায় আরেক অভিযুক্ত হারুন পলাতক রয়েছে।
এর আগে গত বুধবার ইফতিয়াক হোসেন নিফাত অপহৃত হয়। পরে গতকাল বৃহস্পতিবার অভিযুক্ত রফিকুল ইসলামের ভাড়া বাসার কাছে বাঁশ বাগান থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
র্যাব-১’র পোড়াবাড়ি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডর আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল রাতে র্যাবের একটি দল বাহাদুরপুর এলাকার ভাড়া বাসা থেকে হত্যাকাণ্ডে সঙ্গে জড়িত রফিকুল ইসলামসহ পাঁচজনকে আটক করা হয়।’
পরে র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা জানায়, অপহরণের দিন অভিযুক্ত রফিকুল পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী নিফাতকে খেলার ফাঁকে তার ভাড়া বাসায় নিয়ে আটক করে রাখে। কিন্তু ঘরের ভেতর আটকে থাকা নিফাত চিৎকার দিতে থাকে। আটক নিফাত ছাড়া পেলে তাদের কথা সবাইকে জানিয়ে দেবে এই ভয়ে তারা নিফাতকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেয়।
এক পর্যায়ে অভিযুক্ত রফিকুল প্রথমে নিফাতকে মাটিতে ফেলে গলায় ওড়না পেচিয়ে ধরে এবং পরে তার মা রেজিনাসহ তারা উভয়ে ভিকটিমের শরীরের ওপর বসে নিফাতের গলা টিপে ধরে হত্যা করে। হত্যাকাণ্ডের পর আলামত ধ্বংস করার জন্য নিফাতের পায়ের জুতা, গলায় পেচানো ওড়না এবং খেলার ব্যাট আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়।
র্যাবের ওই কর্মকর্তা আরও জানান, আটক রফিকুলের স্ত্রী ও মাকে নিয়ে গত ১০ বছর ওই এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করে বিভিন্ন গার্মেন্টসে চাকরি করে আসছিলেন। বিভিন্ন অপরাধ বিষয়ক সিনেমা, নাটক বিশেষত ক্রাইম পেট্রোলে দেখানো বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড থেকে উৎসাহিত হয়ে গত তিন মাস আগে আটককৃতরা এবং পলাতক হারুন এই অপহরণের পরিকল্পনা করে। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে নিফাতের সঙ্গে রফিকুল একসঙ্গে খেলাধুলা করত।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ ডিসেম্বর বাহাদুরপুর গ্রামের মো. হযরত আলীর ছেলে শিশু ইফতিয়াক হোসেন নিফাত অপহৃত হয়। অপহরণের আগে নিফাত এবং অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম একসঙ্গে ব্যাটমিন্টন খেলছিলেন। এক পর্যায়ে বাড়ির আশেপাশে নিফাতকে না দেখে তার বাবা-মা অনেক খোঁজাখুঁজি করে কোনো হদিস পায় না।
পরে অপহরণকারীরা নিফাতের বাবার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এ ঘটনায় নিহতের স্বজনরা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮:৪৪:০১ ২৩৬ বার পঠিত