শুক্রবার জগন্নাথ দর্শন হল না পুরীর দর্শনার্থীদের৷ সকাল থেকে অপেক্ষা করেও মন্দিরে প্রবেশ করতে পারলেন না ভক্তরা৷ কারণ সারাদিনই বন্ধ রইল জগন্নাথ মন্দিরে প্রবেশের দরজা৷
ঝামেলার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার৷ জগন্নাথ মন্দিরের সেবায়েত ভবানি শংকর মহাপাত্র তিন দর্শনার্থীকে নিয়ে মন্দিরের মূল দরজা দিয়ে প্রবেশ করছিলেন৷ তখনই তাঁদের পথ আটকায় পুলিশ৷ পুলিশের ধারণা ছিল এই দর্শনার্থীরা কেউ হিন্দু নন৷ আর হিন্দু না হলে জগন্নাথ মন্দিরে প্রবেশ করা যায় না৷ কিন্তু সেবায়েত দাবি করেন ওই তিন দর্শনার্থী বাঙালি৷ তবে সেই দাবি মানতে চায়নি পুলিশ৷
সেখান থেকে ঝামেলার শুরু৷ সেবায়েত ও পুলিশ বচসায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি৷ সেবায়েত মহাপাত্রের অভিযোগ তাঁর কথা কোনওভাবেই বিশ্বাস করতে চায়নি পুলিশ৷ এমনকী তাঁর সঙ্গে রীতিমত দুর্ব্যবহার করা হয়েছে৷ সেবায়েতের এই অভিযোগ পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে মন্দিরের সেবায়েত সম্প্রদায়৷ মন্দির কর্তৃপক্ষ সেবায়েতদের অধিকারে হস্তক্ষেপ করছে বলে অভিযোগ ওঠে৷ এই ধরণের ঘটনা কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া হবে না বলে সেবায়েতদের পক্ষ থেকে জানানো হয়৷ সেবায়েত ও পুলিশের পক্ষ থেকে সিংহদ্বার থানায় একে অপরের বিরুদ্ধে দুটি পৃথক এফআইআর দায়ের করা হয়েছে৷
সেই ঘটনার জের গড়িয়েছে শুক্রবারও৷ এদিন সকাল থেকেই বন্ধ রাখা হয়েছে মন্দিরের দরজা৷ ফলে জগন্নাথের দর্শন না পেয়ে খালি হাতেই ফিরে আসতে হয়েছে ভক্তদের৷ এমনকী জগন্নাথের ভোগও রান্না হয়নি এদিন৷ সব মিলিয়ে পুরী মন্দিরের আপাতত চূড়ান্ত অচলাবস্থার মধ্যে পড়তে হচ্ছে দর্শনার্থীদের৷ শুক্রবার সকালে পুরীর ডিস্ট্রিক্ট কালেকটর জ্যোতি প্রকাশ দাস পুরী মন্দিরে যান৷ কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন৷ কিন্তু সেভাবে কোনও লাভ হয়নি বলেই খবর৷
প্রসঙ্গত, ১৯৮৪ সালে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকেও পুরীর মন্দিরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি৷ কারণ তিনি একজন পারসিকে বিয়ে করেছিলেন৷ এমনকি সুইশ নাগরিক এলিজাবেথ জিগলার পুরীর মন্দিরে ২০০৬ সালে ১ কোটি ৭৮ লক্ষ টাকা অনুদান দেন৷ তাঁকেও এই মন্দিরে প্রবেশের অধিকার দেওয়া হয়নি, কারণ তিনি খ্রিস্টান ছিলেন৷
বাংলাদেশ সময়: ১৯:০০:০৪ ২০০ বার পঠিত