প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা, চিত্রনাট্যকার ও লেখক মৃণাল সেন আর নেই। রোববার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০ টায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে কলকাতার ভবানীপুরে নিজ বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তার বয়স হয়েছিলো ৯৫ বছর।
মৃণাল সেনের নির্মাণ করা অধিকাংশ চলচ্চিত্রই আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব থেকে পুরস্কৃত হয়েছে। ভারত এবং ভারতের বাইরের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সাম্মানিক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করেছে।
১৯৫৫ সালে মৃণাল সেনের প্রথম পরিচালিত সিনেমা ‘রাতভোর’ মুক্তি পায়। এটি খুব বেশি আলোচিত না হলেও দ্বিতীয় সিনেমা ‘নীল আকাশের নীচে’ মাধ্যমে তিনি সমাদৃত হন। এছাড়া মৃণাল সেন ‘বাইশে শ্রাবন’ সিনেমার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পরিচিতি পান।
এই নির্মাতা ‘ইন্টারভিউ’ (১৯৭১), ‘ক্যালকাটা ৭১’ (১৯৭২) এবং ‘পদাতিক’ (১৯৭৩) সিনেমার মাধ্যমে তৎকালীন কলকাতার অস্থির অবস্থাকে তুলে ধরেছিলেন।
বাংলা সিনেমার পাশাপাশি মৃণাল সেন- হিন্দি, ওড়িয়া ও তেলেগু ভাষায়ও চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন। ১৯৬৬ সালে ওড়িয়া ভাষায় নির্মাণ করেন ‘মাটির মনীষ’, যা কালীন্দিচরণ পাণিগ্রাহীর গল্প অবলম্বনে নির্মিত হয়।
১৯৬৯-এ বনফুলের কাহিনী অবলম্বনে হিন্দি ভাষায় নির্মাণ করেন ‘ভুবন সোম’। ১৯৭৭ সালে প্রেম চন্দের গল্প অবলম্বনে তেলেগু ভাষায় নির্মাণ করেন ‘ওকা উরি কথা’। ১৯৮৫ সালে নির্মাণ করেন ‘জেনেসিস’ যা হিন্দি, ফরাসি ও ইংরেজি তিনটি ভাষায় তৈরি হয়।
চলচ্চিত্রশিল্পে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতস্বরুপ মৃণাল সেনকে- ১৯৮১ সালে ভারত সরকার তাকে পদ্মভূষণ পুরস্কার, ২০০৫ সালে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার প্রদান করেন।
এছাড়া ফরাসি সরকার তাকে কমান্ডার অফ দি অর্ডার অফ আর্টস অ্যান্ড লেটারস সম্মানে ভূষিত করেন। এই সম্মান ফ্রান্সের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান। আর ২০০০ সালে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তাকে অর্ডার অফ ফ্রেন্ডশিপ সম্মানে ভূষিত করেন।
গুণী এই নির্মাতা ১৯২৩ সালের ১৪ মে বাংলাদেশের ফরিদপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি পড়াশোনার জন্য কলকাতায় আসেন এবং স্কটিশ চার্চ কলেজ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থ বিজ্ঞানে পড়াশোনা সম্পন্ন করে লেখালেখি-নির্মাণে মনোনিবেশ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:৫২:৫৪ ২০১ বার পঠিত