কোকা লিফ বা পাতা থেকে কোকা এবং কোলা নাট থেকে আগে কোলা তৈরি করা হতো। তবে এখন আর তা হয় না। তাই সফট ড্রিংকস মানে শুধুই কোলা। এর প্রধান উপাদানগুলো হলোÑ কার্বোনেটেড ওয়াটার, সুগার, ক্যাফেইন, ফ্লেভার, কালারিং এজেন্ট ও প্রিজারভেটিভ।
কার্বোনেটেড ওয়াটার : এতে কার্বন-ডাই অক্সাইড উচ্চচাপে পানির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়। এর আরেক নাম সোডা। বোতলের ছিপি খোলার পর চাপ কমে যায়। ফলে বুদবুদ আকারে কার্বন-ডাই অক্সাইড বের হয়ে আসে। এটি হজমশক্তি বাড়িয়ে তোলে। কার্বন-ডাই অক্সাইড ও পানি মিলে কার্বোনিক অ্যাসিড তৈরি করে। অ্যাসিড খাদ্যনালিতে ক্ষত সৃষ্টি করতে পারে বা অ্যাসিডিটি করে। বিশেষ করে শিশুর ক্ষেত্রে এটি বেশি প্রযোজ্য। যাদের আইবিএস আছে, তাদের জন্য এটি ক্ষতিকর।
সুগার : এতে লো ক্যালরি সুইটনার বা হাই ফ্রোক্টোজ কর্ন সিরাপ ব্যবহার করা হয়। এগুলোর মধ্যে এসপার্টেম, এসিসালফেম, সুক্রালেজ, নিউটেম বা সাইক্লামেট ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। সাইক্লামেট বর্তমানে আমেরিকায় নিষিদ্ধ। এটি সাধারণ সুগারের চেয়ে অনেক গুণ বেশি মিষ্টি এবং পরিমাণে কম হলেই চলে। এটি লিভারের ক্ষতি করে। এটি পার্কিনসন, আলজেইমার্স, মাল্টিপল স্কেরোসিস বা মৃগীরোগে আক্রান্তের জন্যও ক্ষতিকর; যাদের মাইগ্রেনের ব্যথা আছে, তাদের জন্যও।
ফ্লেভারিং : ফ্লেভারিং এজেন্ট হিসেবে ফসফরিক অ্যাসিড এবং কোলার বিশেষ কালার আনার জন্য ক্যারামেল ব্যবহার করা হয়। কোলা যখন মুখে থাকে, বিশেষ করে শিশুরা যখন অনেকক্ষণ মুখে ধরে রাখে, তখন এটি নিউট্রাল করতে ফসফরিক অ্যাসিড ক্যালসিয়ামের সঙ্গে যুক্ত হয়। আর এ ক্যালসিয়ামের জোগান দেয় দাঁত। ফলে সাদা রঙের এনামেল অংশ ক্ষয় হয়ে যায়। শিশুর নতুন দাঁত ওঠার সময় বা অন্য সময়ে দীর্ঘদিন এ অবস্থা চলতে থাকলে দাঁতের রঙ বাদামি হয়ে যায়। একই প্রক্রিয়া হাড়ের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। ক্যালসিয়ামের জোগান দেয় হাড়। ফলে হাড়ে মিনারেল ডেনসিটি কমে গিয়ে হাড় দুর্বল হয়।
শিশুরা ক্ষতিগ্রস্ত হয় : অতিরিক্ত ক্যালরির জন্য শিশু মুটিয়ে যায়। দাঁতের এনামেল নষ্ট হয়ে দাঁত বাদামি হয়ে যায়। দীর্ঘস্থায়ী পেটব্যথা বা ক্রনিক অ্যাসিডিটিতে ভোগে। চঞ্চল প্রকৃতির শিশুরা অধিকতর চঞ্চলতায় ভোগে। মেয়েরা অধিকত ক্ষতিগ্রস্ত হয় যেভাবে : ক্যালসিয়াম লস করে বা অস্টিওপোরোসিসে ভোগে। গেস্টেশনাল বা গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেশি থাকে।
সচেতনতা প্রয়োজন : ডায়াবেটিস রোগী, শিশু, গর্ভবতী, স্তন্যদানকারী, লিভার ও কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি, আলঝেইমার্স, পারকিনসন, মৃগী রোগী, হাইপারটেনশনে আক্রান্ত ব্যক্তি, মাইগ্রেন ও আইবিএস আছে যার।
লেখক : প্রাক্তন সহযোগী অধ্যাপক, জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল
চেম্বার : আইডিয়াল আই কেয়ার সেন্টার
৩৮/৩-৪, রিং রোড, শ্যামলী, ঢাকা
বাংলাদেশ সময়: ১১:২৪:৫৩ ২৫৩ বার পঠিত