শারীরিকভাবে অক্ষম ও বয়স্কদের কারাভোগ থেকে বাদ দেওয়া যায় কি-না, তা খতিয়ে দেখতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার নির্দেশে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালও।
২১শে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত প্রস্তুতি সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা জানান।
জাহালম নামে টাঙ্গাইলের এক পাটকল শ্রমিক ৩৩টি মামলার ভুল আসামি হিসেবে তিন বছর কারাভোগ করে সম্প্রতি মুক্তি পান। এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ সংক্রান্ত আমাদের একটি সংস্থা আছে, কেউ এভাবে ভিকটিম থাকলে তারা তাকে শনাক্ত করার চেষ্টা করে। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, যারা অচল হয়ে গেছে, বয়স্ক বা দীর্ঘদিন জেলে আছে, তাদের বিবেচনা করার জন্য- শনাক্ত করে মুক্তি দেওয়া যায় কি-না, তার ব্যবস্থা করার জন্য বলেছেন।
তবে জাহালমের ঘটনার জন্য কে দায়ী সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং অনুসন্ধান করে দায়ীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
গত কয়েকদিনে নয় জনের মতো মানুষ সীমান্তে নিহত হয়েছেন। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে খাঁন কামাল বলেন, সীমান্তে যেন এ ধরনের হত্যাকাণ্ড না হয় এবং বিএসএফ কেন এ হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছে, সে বিষয়ে আমাদের বিজিবি আলোচনা করছে। গত কয়েক বছর সীমান্তে ‘জিরো কিলিং’র যে বিষয়টি- সেটি বিরাজমান ছিল। কিন্তু নতুন করে কেন এ সমস্যা হচ্ছে, সেটি নিয়ে আরও উচ্চপর্যায়ে আলোচনা হবে। এ ধরনের হত্যাকাণ্ড যেন আর না হয় সেটি নিয়েই আলোচনা করবো।
মিয়ানমার থেকে নতুন করে সেখানকার বিতাড়িত জনগোষ্ঠী বাংলাদেশে আসছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর নজরে আনলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিজিবি জানিয়েছে সীমান্তে সব রকম প্রস্তুতি রয়েছে। মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের কিছু দুর্গম এলাকা রয়েছে। সেখানে আমাদের বিজিবি সতর্কাবস্থানে আছে। যেভাবে আমরা শুনছি, তেমন আসেনি। যারাই অসুকক, তাদের আসা বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছি।
২১শে ফেব্রুয়ারিতে সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমরা গত কয়েকবছর ধারাবাহিকভাবে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে পেরেছি। শহীদ মিনারের দায়িত্ব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিয়ে থাকে, তাদের নিরাপত্তার জন্য আমাদের বাহিনী কাজ করে। এবার বিএনসিসির পাঁচশ’ সদস্য সেখানে থাকবে। নিরাপত্তার জন্য পুলিশ-র্যাব, গোয়েন্দা এবং প্রয়োজনে বিজিবি-আনসার কাজ করবে।
ওই এলাকায় কোনো হকার বা অস্থায়ী দোকান বসা যাবে না জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পুরো এলাকা সিসিটিভির আওতায় আনা হবে। সেদিন সাদা পোশাকধারী পুলিশও নিয়োজিত থাকবে। দেশি-বিদেশি যারাই আসবে, প্রতিবারের মতো এবারও তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কিছু কিছু স্থানে খোঁড়াখুঁড়ি চলছে এবং বইমেলাও চলছে, সব মিলিয়ে একটি ট্রাফিক ব্যবস্থা আমরা করবো, সেজন্য রোডম্যাপ তৈরি করবো। সারাদেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে। সবাই যেন নির্বিঘ্নে দিবসটি উদযাপন করতে পারে। সরস্বতী পূজার সময়ও নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:০০:০০ ১৬৮ বার পঠিত