এত সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করা সত্ত্বেও দেশের এই অবস্থা৷ ভাবতেই অবাক লাগছে যে তাহলে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করে লাভ কি হচ্ছে৷ বৃহস্পতিবার কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার ঘটনার পর এদিন কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে এই প্রশ্ন তোলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম৷ তিনি এদিন আরও জানান, ‘‘যখন তখন বিস্ফোরক নিয়ে ঢুকে যাচ্ছে জঙ্গিরা৷ যথেষ্ট উদ্বেগের সঙ্গে আছি৷’’
গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে পাকিস্তানের সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কলকাতার একটি এলাকাকে ‘মিনি পাকিস্তান’ বলে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন ফিরহাদ হাকিম৷ তিনিই এখন মেয়র৷ জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার পরিপ্রেক্ষিতে মেয়র জানান, এই ৫ বছরে জঙ্গি হামলার ঘটনায় প্রায় এক হাজার সেনা জাওয়ানকে হারিয়েছি আমরা৷ তারা প্রত্যেকেই আমাদের দেশের মানুষ৷ অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা৷ শহিদ জাওয়ানদের পরিবারের পাশে আছি আমরা৷
দেশের চৌকিদার তবে কি দেশ সামলাতে ব্যর্থ? যদিও এই প্রশ্নের স্পষ্ট উত্তর মেলেনি কলকাতার মহানাগরিকের কন্ঠে৷ তবে স্পষ্ট করে কিছু না বললেও তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন৷ বলেছেন, ২৫০ কেজি বিস্ফোরক নিয়ে কেউ হামলার ছক কষছে আর সকলের তা অজানা৷ এ কি করে সম্ভব? যদিও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কাশ্মীরের জঙ্গি হামলার ঘটনার যথেষ্ট নিন্দা করেছেন৷ এবং পাকিস্তানকে রীতিমত হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, এর ফল ভোগ করতে হবে তাদের৷
পাশাপাশি দেশের এই চরম পরিস্থিতিতে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীও প্রধানমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়েছেন৷ কংগ্রেসের কণ্ঠে এখনও তেমন বিরোধিতার সুর শোনা যায়নি৷
জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামাতে জঙ্গি হামলার ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে চল্লিশের বেশি সেনা জওয়ানের৷ তার মধ্যে বাংলার দুজন জাওয়ান রয়েছেন৷ একজন হাওড়ার বাউড়িয়ার চককাশীর বাসিন্দা বাবলু সাঁতরা ও অপরজন নদিয়ার সুদীপ বিশ্বাস৷ ঘটনার খবর পাওয়ার পরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাবলু সাঁতরার পরিবারের সঙ্গে ফোন করে কথা বলেন৷ লোকসভা ভোটে মহাজোটের জন্য তিনি এখন দিল্লিতে৷ শনিবার তাঁর ফেরার কথা৷ কিন্তু থেমে নেই মমতার মন্ত্রীবর্গ৷ এদিন সকালেই শহিদের বাড়ি গিয়ে সমবেদনা জানিয়েছেন লক্ষ্মীরতন শুক্লা৷ বিকেলে গিয়েছেন কলকাতা পুরসভার মেয়র তথা মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম৷ তাঁর দাবি, বাংলার মানবিক মুখ্যমন্ত্রী নিশ্চই শহিদের পরিবারের পাশে দাঁড়াবেন৷
যদিও, মুখ্যমন্ত্রী এদিন এলাকার বিধায়ক পুলক রায়ের ফোনেই ফোন করে কথা বলেন বাবলু সাঁতরার পরিবারের সঙ্গে৷ পাশে থাকারও আশ্বাস দেন৷ পরে স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চান৷ কিন্তু শহিদ জওয়ানের স্ত্রী মীতাদেবী কথা বলতে রাজি হননি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে৷ কারণ টিভিতে স্বামীর মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন তিনি৷
জঙ্গি হামলার ঘটনার প্রতিবাদে এদিন রাজ্যের একাধিক জায়গায় মিছিল মিটিং করা হয়৷ সিপিএম-এর ডাকে ধর্মতলা লেনিন মূর্তি থেকে মহাজাতি সদন পর্যন্ত একটি মিছিল করা হয়৷ কলেজ স্কোয়ারে একটি মিটিং করা হয় কংগ্রেসের তরফে৷
বাংলাদেশ সময়: ২০:৩৫:২৫ ১৬৪ বার পঠিত