আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস আজ। বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় এ বছর দিবসটি পালন করা হচ্ছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী বিশ্বের সকল দেশের শান্তিরক্ষীদের অসামান্য অবদানকে এই দিনে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হবে। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সূচিত পররাষ্ট্রনীতির অনুসরণের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ আজ বিশ্ব দরবারে শান্তি ও সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় ‘আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস-২০১৯’ পালনের উদ্যোগকে রাষ্ট্রপতি স্বাগত জানান। এ উপলক্ষে তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে কর্মরত বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের সকল শান্তিরক্ষীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। বিশ্বশান্তি রক্ষার মহান দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আত্মোত্সর্গকারী বীর শান্তিরক্ষী সদস্যদেরও তিনি পরম শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরিতা নয়’- জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এ আদর্শ অনুসরণে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি পরিচালিত হচ্ছে।
বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের পেশাদারিত্ব সারাবিশ্বে ব্যাপক প্রশংসিত হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের পেশাদারিত্ব, আন্তরিক সেবা, কঠোর পরিশ্রম, আত্মত্যাগ, নিঃস্বার্থ মনোভাব ও সাহসিকতা আজ সারাবিশ্বে ব্যাপক প্রশংসিত হচ্ছে।’ বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের পক্ষ থেকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের প্রতি তাঁর সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, ‘জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে শান্তিরক্ষী প্রেরণে বাংলাদেশ বর্তমানে অন্যতম শীর্ষস্থানীয় দেশ। শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালনকালে বাংলাদেশের সদস্যগণ বিপদসংকুল এবং সংঘাতপূর্ণ এলাকায় নিয়োজিত থাকেন।’ শান্তিরক্ষী সদস্যগণ তাদের দক্ষতা, পেশাদারিত্ব ও আন্তরিকতা দ্বারা সারাবিশ্বে শান্তিরক্ষায় আরো কার্যকর ভূমিকা রাখবেন এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরো উজ্জ্বল করবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যাঁরা শহীদ হয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী তাঁদের আত্মার শান্তি ও মাগফেরাত কামনা করে তাঁদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস উদ্যাপনে বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয়ভাবে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। সকালে শান্তিরক্ষীদের স্মরণের মাধ্যমে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। বিকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শহীদ শান্তিরক্ষীদের নিকট-আত্মীয় এবং আহত শান্তিরক্ষীদের জন্য সংবর্ধনা এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের ওপর বিশেষ উপস্থাপনার আয়োজন করা হয়েছে। সকালে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাহফুজুর রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে ‘কমেমরেশন’অনুষ্ঠান উদ্বোধন করবেন। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শহীদ শান্তিরক্ষীদের নিকট-আত্মীয় এবং আহত শান্তিরক্ষীদের জন্য সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বিটিভি ওয়ার্ল্ড সংবর্ধনা অনুষ্ঠানটি সরাসরি সমপ্রচারের ব্যবস্থা নিয়েছে।
এদিকে দিবসটির তাত্পর্য তুলে ধরার লক্ষ্যে বিশেষ জার্নাল ও জাতীয় দৈনিকসমূহে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হয়েছে এবং বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ বিভিন্ন বেসরকারি চ্যানেলে বিশেষ টক-শো প্রচারিত হবে। এছাড়াও শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশের কার্যক্রমের ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ অন্যান্য বেসরকারি চ্যানেলে প্রচারিত হবে। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদের সদস্যগণ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাগণ, তিন বাহিনী প্রধানগণ, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও), পুলিশের মহাপরিদর্শক, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বসহ ঊর্ধ্বতন সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তাগণ উপস্থিত থাকবেন ।
বাংলাদেশ সময়: ১২:১২:৩১ ১৬৮ বার পঠিত