জ্ঞানভিত্তিক শিল্পায়নের জন্য চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুবিধা কাজে লাগাতে চীন বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারীত্বের ভিত্তিতে কাজ করতে আগ্রহী। বৃহস্পতিবার শিল্প মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ঝাং জু শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের সঙ্গে বৈঠককালে তার দেশের এ আগ্রহের কথা জানান।
চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বাংলাদেশের শিল্পখাতে ডিজিটালাইজেশন, তথ্য প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং নতুন প্রযুক্তি স্থানান্তরে চীন সহায়তা করবে। ইতিমধ্যে তিন শতাধিক চীনা কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগ করেছে।’
সাক্ষাতকালে শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৫২ ও ১৯৫৭ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চীন সফরের মাধ্যমে দুইদেশের মধ্যে অর্থবহ দ্বিপাক্ষিক উন্নয়ন সম্পর্কের সূচনা হয়। এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ- চীন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন, প্রযুক্তির আধুনিকায়নসহ সম্ভাবনাময় অনেক খাতে চীনের সহায়তা রয়েছে।’
তিনি দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার সম্পর্ক ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে শিল্পখাতে সহায়তার ক্ষেত্র বাড়াতে চীনের আগ্রহের প্রেক্ষিতে শিল্প মন্ত্রণালয় একটি সমঝোতা চুক্তির রূপরেখা চূড়ান্ত করছে। এটি চূড়ান্ত করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে চীনা কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত প্রেরণ করা হবে। পরবর্তীতে দ্বিপাক্ষিক সমঝোতার মাধ্যমে এ চুক্তি স্বাক্ষর করা হবে। এর মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ ও বাণিজ্যের নতুন সুযোগ উন্মোচিত হবে। বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে গুণগতমান এবং প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতার বিষয়টি অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।’
রাষ্ট্রদূত ঝাং জু চীনের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রজেক্ট’ বাস্তবায়নে বাংলাদেশের সহায়তা কামনা করেন। তিনি বলেন, ‘চীনের উদ্যোক্তারা বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় শিল্পখাতে বিনিয়োগে আগ্রহী। গতবছর শতাধিক চীনা উদ্যোক্তা বাংলাদেশ সফর করে চীনা পণ্য বাজারজাতকরণের বিষয়ে এ দেশের উদ্যোক্তাদের সঙ্গে সংলাপে মিলিত হয়েছেন।’ তিনি পণ্য বিপণনের জন্য এ ধরণের সংলাপ আরও বেশি করে আয়োজনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে পারস্পরিক সহযোগিতার সম্পর্ক অব্যাহত রাখার ওপর গুরুত্ব দেন।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব বেগম ইয়াসমিন সুলতানা, চীনা দূতাবাসের পলিটিক্যাল ডিভিশনের পরিচালক জেং তিয়াংজুসহ শিল্প মন্ত্রণালয় ও চীনা দূতাবাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করা হয়। এ সময় বাংলাদেশের শিল্পখাতে চীনা বিনিয়োগ বৃদ্ধি, প্রযুক্তি স্থানান্তর, চীনের স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ফর মার্কেটিং রেগুলেশনের সাথে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরসহ অন্যান্য বিষয়ে আলোচনায় স্থান পায়।
বাংলাদেশ সময়: ২১:৫১:৪৯ ১২৯ বার পঠিত