মুক্তিযুদ্ধের উপঅধিনায়ক এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) একে খন্দকার ভুল তথ্যের জন্য ক্ষমা চাওয়ার পর তার লেখা ‘১৯৭১ : ভেতরে বাইরে’ বইটি বাজার থেকে তুলে নেয়ার কথা জানিয়েছে প্রথমা প্রকাশন।
রোববার প্রথমা প্রকাশনের ব্যবস্থাপক জাফর আহমদ রাশেদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
তবে বইটি প্রত্যাহারের কথা জানালেও বিজ্ঞপ্তিতে একে খন্দকারের অভিযোগের বিষয়ে কিছু বলেনি প্রথমা প্রকাশন।
একে খন্দকারের অভিযোগ, বইটি প্রকাশের পর ভুল সংশোধনের অনুরোধ করলেও তখন সাড়া দেয়নি প্রথমা প্রকাশন।
২০১৪ সালে প্রথমা থেকে প্রকাশিত বইটিতে একে খন্দকার লিখেছিলেন- বঙ্গবন্ধু তার ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণটি শেষ করেছিলেন ‘জয় পাকিস্তান’ বলে। বইটি প্রকাশের পর সমালোচনার মুখে পড়লেও নীরব ছিলেন তিনি।
সাড়ে চার বছরের নীরবতা ভেঙে গত মাসের ২৬ তারিখ যমুনা টেলিভিশনকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে নিজের লেখা বইয়ে ভুল তথ্য দেয়ার জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চান শেখ হাসিনার ২০০৯-১৪ সরকারের মন্ত্রী একে খন্দকার।
এর পাঁচ দিন পর গত শনিবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করেন একে খন্দকার।
সংবাদ সম্মেলনে নিজের লেখা বইয়ে ভুল তথ্য দেয়ার জন্য ক্ষমা চেয়ে তিনি বলেন, ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে বঙ্গবন্ধু ‘জয় পাকিস্তান’ বলেননি।
প্রথমা প্রকাশন বইয়ের ৩২ পৃষ্ঠার বিতর্কিত অংশটুকু বাদ দিয়ে পুনঃমুদ্রণ করবে বলে আশা প্রকাশ করেন একে খন্দকার।
ওই সংবাদ সম্মেলনের কথা উল্লেখ করে প্রথমা প্রকাশনের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সেখানে তিনি বলেছেন, এই বইয়ের একটি অনুচ্ছেদে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ সম্পর্কে তিনি একটি ভুল তথ্য পরিবেশন করেছেন। সে ভুল তথ্যসহ পুরো অনুচ্ছেদটি তিনি বইটি থেকে প্রত্যাহার করে নিতে চান।
‘১৯৭১ : ভেতরে বাইরে’ বইয়ের লেখক একে খন্দকার। তার বইয়ের যে কোনো অংশ গ্রহণ-বর্জন- পরিমার্জনের পূর্ণ অধিকার তার আছে। লেখকের ইচ্ছার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আমরা বইটি বাজার থেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছি।’
সংবাদ সম্মেলনে একে খন্দকারের স্ত্রী ফরিদা খন্দকার বলেছিলেন, বইটি প্রকাশের পর তথ্য সংশোধন করতে চাইলেও প্রথমা প্রকাশনের কারণে তা করতে পারেননি।
তিনি বলেন, বইটি প্রকাশের পরের দিনই ও (একে খন্দকার) এবং আমি সংশোধন করার কথা ভাবি। কিন্তু উনারাই আমাদের তা করতে দেয়নি। বরং তারা বলেছেন, বন্দুকের গুলি একবার ছুড়লে আর তার পেছনে ছুটে লাভ কী!
ফরিদা খন্দকার আরও বলেন, এর পর প্রথমা প্রকাশনের প্রকাশক মতিউর রহমানকেও আমি ফোনে চেষ্টা করি, কিন্তু পাইনি। একবার পেয়ে বলি যে, এত বড় ভুল কীভাবে হলো? তখন তিনি বললেন, ‘এটা তো আমি দেখি না। এর বানান, ব্যাকরণগত ভুল এগুলো দেখার জন্য আলাদা লোক আছে’। এর পর আর তাকে পাইনি, আর সংশোধনও করতে পারিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১১:২৬:৪৩ ২১৭ বার পঠিত