চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম শুরুর মধ্য দিয়ে চালু হলো বিশ্বের বৃহত্তম বার্ণ ইনস্টিটিউট ‘শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ণ ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট’।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর চানখারপুল এলাকায় ১৮ তলা বিশিষ্ট এই বিশেষায়িত ইনস্টিটিউটের চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম শুরুর উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে হাসপাতালের সেবা কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।
এরপর হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম ও বিভিন্ন বিভাগগুলো পরিদর্শন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। পরিদর্শন শেষে উদ্বোধনী আলোচনা অনুষ্ঠানে অংশ নেন তিনি। আলোচনায় দেশের মঙ্গল কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ঢামেকে ৫ শয্যা দিয়ে বার্ণ ইউনিট শুরু হয়েছিল, প্রধানমন্ত্রীর প্রচেষ্টায় এখন এটি ৫০০ শয্যার প্রতিষ্ঠান। প্রধানমন্ত্রী প্রতিষ্ঠানটি উদ্বোধনের সময় দ্রুত সেবা কার্যক্রম শুরুর নির্দেশ দিয়েছিলেন। আমরা সেই চেষ্টাই করেছি।
জাহিদ মালেক বলেন, প্রতি বছর আগুনে, বিদ্যুতে বা কোনো না কোনোভাবে ৬ লাখ লোক পুড়ে যায়। সেই পোড়া রোগীদের জন্য আজ এখানে সেবা কার্যক্রম শুরু হল। এখানে বিভিন্ন ধরনের সুবিধা রয়েছে। পুড়ে যাওয়া রোগীদের সব ধরনের চিকিৎসা এই প্রতিষ্ঠান থেকে দেওয়া হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও কল্যাণ বিভাগের সচিব ইউসুফ হারুন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ণ ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন।
রাজধানীর চাঁনখারপুলে ৯১২ কোটি টাকা ব্যয়ে এক দশমিক ৭৬ একর জমিতে নির্মিত ১৮ তলাবিশিষ্ট এই বার্ণ ইনস্টিটিউট গতবছর ২৪ অক্টোবরে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই ইনস্টিটিউটে বার্ণ ইউনিট, প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট এবং একাডেমিক উইং মিলে তিনটি ব্লক থাকছে। নির্মাণ কাজ পরিচালিত হয় সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে।
২০১৫ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় প্লাস্টিক সার্জারি বিষয়ক এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে আন্তর্জাতিক মানের একটি বার্ণ ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট স্থাপনের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
২০১৫ সালের নভেম্বরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এই ইনস্টিটিউটের অনুমোদন দেওয় হয়।
২০১৬ সালের ৬ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চাঁনখারপুলে এই ইনস্টিটিউটের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২৭ এপ্রিল বাংলদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোর এর নির্মাণ কাজ শুরু করে।
১৯৮৬ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একটি ওয়ার্ডে ৫ টি বেড নিয়ে বার্ণ বিভাগ চালু করেন দেশের প্রথম প্লাস্টিক সার্জন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ। অধ্যাপক ডা. সামন্ত লালের প্রচেষ্টায় ২০০৩ সালে সেটি ৫০ বেডের পূর্ণাঙ্গ ইউনিট হিসেবে কাজ শুরু করে।
২০১০ সালের ৩ জুন পুরান ঢাকার নিমতলীতে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ১২৭ জনের মৃত্যুর পর বার্ণ ইউনিটের সক্ষমতা আরও বাড়ানোর বিষয়টি গুরুত্ব পায়। এ ইউনিটের বেড বেড়ে প্রথমে ১০০ ও পরে ৩০০ হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২১:৩১:১২ ১৩১ বার পঠিত