কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক বলেছেন, কৃষক ধান-আলুর আবাদ করে লাভ করতে পারবেন না, ন্যায্যমূল্য পাবেন না, তার সন্তানকে লেখাপড়া করাতে পারবেন না- সেই বাংলাদেশ তো আমরা চাইনি। এজন্য বাংলাদেশকে আমরা স্বাধীন করিনি। সেটিকে আমরা সোনার বাংলা বলি না। তাই কৃষককে ধানের ন্যায্যমূল্য দেব।
শনিবার বিকাল ৩টায় রাজশাহী জেলা শিল্পকলা অ্যাকাডেমি মিলনায়তনে বরেন্দ্র বহুমুখি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) আয়োজিত দিনব্যাপি এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের চেহারা পরিবর্তন করেছেন মাত্র ১০ বছরে। আমি সাংবাদিকদের বন্ধুদের বলছি, ইনশাল্লাহ আমরাও আমাদের কৃষককে ধানের নায্যমূল্য দেব। বাংলাদেশের কৃষিকে লাভজনক করব এবং কৃষিকে আধুনিকীকরণ, যান্ত্রিককরণ করব।
তিনি আরও বলেন, কৃষিকে বাণিজ্যিকরণ করতে হবে। কৃষিকে শিল্পায়ন করতে হবে। অ্যাগ্রো প্রসেসিং, অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ- এগুলো করতে হবে। এগুলো শুরু হয়েছে। আমরা গ্রামে দেখতাম, পাঁচ লিটার দুধ হলে লোকে গাভী দেখতে যেত। আজকে সেই দেশে ২২ লিটার দুধ পেয়েছে। চাষি দাঁড়িয়ে বলে, আমি ২৮ লিটার পেয়েছি। এমন দেশে প্রযুক্তির দিক থেকে পিছিয়ে থাকলে চলবে না।
মন্ত্রী বলেন, আমরা দুটি চ্যালেঞ্জের কথা বলছি। পুষ্টিসম্মত এবং নিরাপদ খাবার দেওয়া তার একটি। যারা কৃষির সঙ্গে জড়িত তাদের জন্য এটা একটা চ্যালেঞ্জ। দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ হলো- কৃষিকে বাণিজ্যিকীকরণ এবং যান্ত্রিকীকরণ। চারটি সম্ভাবনা নিয়ে এই সরকার কাজ করছে। ইনশাল্লাহ আমরা আগামী পাঁচ বছরে এই চারটি লক্ষ্যই আমরা অর্জন করব। সে জন্য আমি সবার সহযোগিতা চাই।
‘বারিন্দ অ্যাগ্রো-ইকো ইনোভেশন রিসার্চ প্ল্যাটফর্ম’ শীর্ষক এই সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও রাজশাহী-১ আসনের এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নাসিরুজ্জামান, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. এমএ সাত্তার মণ্ডল ও রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার নূর-উর-রহমান।
অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন রাজশাহী-৫ আসনের এমপি ডা. মনসুর রহমান, সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি আদিবা আনজুম মিতা, গম ও ভুট্টা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ইসরাইল হোসেন, ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক শাহজাহান কবির, ফেরদৌস বায়োটেক প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফেরদৌসি বেগম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক হামিদুর রহমান, জেলা প্রশাসক হামিদুল হক প্রমুখ।
সেমিনারে বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষি ও প্রকৃতি নিয়ে নিজেদের গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক ড. চৌধুরী সরওয়ার জাহান সজল, বিএমডিএ’র প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী পরিচালক ড. আসাদুজ্জামান, সরকারের উপ-সচিব ড. রাজ্জাকুল ইসলাম ও বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি ড. জাহাঙ্গীর হোসাইন। সভাপতিত্ব করেন বিএমডিএ চেয়ারম্যান ড. আকরাম হোসেন চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য দেন নির্বাহী পরিচালক আবদুর রশীদ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯:৫৮:০৯ ২৬৪ বার পঠিত