মশার কামড় থেকে বাঁচার জন্য জনগণকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, এ বছর ডেঙ্গুর উপদ্রব একটু বেশি। তাই দেশের জনগণকে আহ্বান জানাচ্ছি, আপনারা মশার কামড় থেকে নিজেদের রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। সময়মতো স্বাস্থ্য সেবা নিলে ডেঙ্গুতে ঝুঁকি নেই।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে আগামী ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালনের কর্মসূচির প্রস্তুতি সভায় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এখন বর্ষার দিন, বর্ষার কারণে মশার উপদ্রব বেড়ে গেছে। মশার উপদ্রবের কারণে ডেঙ্গু হচ্ছে। হাসপাতালে ডেঙ্গুর চিকিৎসার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমাদের ডাক্তার-নার্সদের অবহিত করা হয়েছে, তারা যাতে চিকিৎসাটা ভালভাবে দিতে পারেন সেই প্রশিক্ষণও তাদের দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রন্ত রোগীর সংখ্যা বাড়লেও আমাদের চেষ্টা অনুযায়ী চিকিৎসা আমরা দিচ্ছি। আমাদের চেষ্টা থাকবে, হাসপাতালে যাতে কোনো মৃত্যু না ঘটে, কোনো অবহেলার কারণ নেই। আমরা হাসপাতালগুলোতে অতিরিক্ত বেডের ব্যবস্থা করেছি।
মশার উপদ্রব কমাতে দুই সিটি করপোরেশনকে মশক নিধন কার্যক্রম আরো জোরেশোরে চালানোর আহ্বান জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে দুই সিটি করপোরেশন যাতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। তাদের নিয়েও মিটিং করেছি। তাদের আহ্বান জানিয়েছি বেশি করে স্প্রে করুন, যাতে মশার উৎপত্তিস্থল ধংস করা হয়। তাতে ডেঙ্গু কন্ট্রোল করা যাবে, মশা কন্ট্রোল করা যাবে।
তিনি বলেন, আমি মনে করি আরো জোরেশোরে কাজ হওয়া প্রয়োজন, যাতে মশার সংখ্যা কমে যায়, তাতে ডেঙ্গু আক্রান্ত লোকের সংখ্যাও কমে যাবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এটাও বলছি- জ্বর হলে কেউ যাতে দেরি না করেন, তাড়াতাড়ি যাতে স্বাস্থ্য সেবাটা গ্রহণ করেন। সময়মতো স্বাস্থ্য সেবা নিলে ডেঙ্গুতে ঝুঁকি নেই, দেরি করলেই সমস্যা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাটা বেশি থাকে।
জ্বর হলেই অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ডেঙ্গু পরীক্ষা করানোর আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, এ বছর দুই হাজার ৬২৬ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন এবং তারা রিলিজ পেয়েছেন। এই মুহূর্তে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৫৫১ জন।
গত ৫ জুলাই হাসপাতালে ভর্তি ছিল ৯৮ জন, ৬ জুলাই ১৬৪ জন, ৭ জুলাই ১২৪ জন, ৮ জুলাই ১৩০ জন এবং ৯ জুলাই দুপুর পর্যন্ত ১০৫ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলে জানান তিনি।
সরকারি-বেসরকারি সব হাসপাতালে ডেঙ্গু চিকিৎসার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা আছে জানিয়ে আবুল কালাম আজাদ বলেন, জ্বর হলে অনেক সময় সাধারণ জ্বর মনে করি। ডেঙ্গু জ্বরও রোগীর কাছে সাধারণ জ্বর মনে হবে। যে কোনো জ্বর হলে আপনারা সাধারণ জ্বর মনে না করে, অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেন এবং পরীক্ষা করেন।
সভায় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব শেখ ইউসুফ হারুন, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হাবিবুর রহমান খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২২:০৬:০৩ ১৩৬ বার পঠিত