‘সাড়ে ৫ ফুট হতে ৬ ফুট দীর্ঘদেহী কয়েকজন ব্যক্তি চিকিৎসা সেবার জন্য শহরের খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালের বর্হি বিভাগে টিকেটের জন্য রোগীদের লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। এর মধ্যেই এক যুবক গিয়ে বললেন এখানে ভালো চিকিৎসা হয় না। ভালো চিকিৎসা পেতে হলে আমার সঙ্গে আসেন। কোথায় আসবে জানতে চাইলে ওই যুবক বলেন প্রাইভেট ক্লিনিক আছে। সেখানে বড় ডাক্তার এসে বসে। কম খরচে ভালো সেবা পাবেন। এতে যুবকের লাভ জানতে চাইলে যুবক বলেন, হাসপাতাল থেকে কমিশন পাবেন। এ কথা জানার সঙ্গে সঙ্গেই নিজেকে র্যাব পরিচয় দিয়ে ওই দালাল যুবককে আটক করে। গতকাল বৃহস্পতিবার ১৮ জুলাই সকাল পৌনে ১১টা থেকে দুুপুর ২টা পর্যন্ত ৩০০ শয্যা হাসপাতালে এভাবে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দালালদের আটকের বিষয়ে জানান র্যাব-১১ এর সহকারী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান। মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ‘বিভিন্ন বেসরকারী ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দালাল চক্র হাসপাতালে রোগীদের হয়রানি করছিল, এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাবের কিছু সদস্য সাদা পোশাকে রোগী সেজে অভিযান শুরু করে। পরে তাদের দুই ঘণ্টা তদারকি করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় চলাফেলা ও কর্মকান্ড সন্দেহজনক হওয়ায় ১৯জনকে আটক করা হয়। পরে যাচাই বাছাই শেষে চূড়ন্ত ভাবে ১০ জন নিজেদের অপরাধ স্বীকার করেছে। তারা জানিয়েছে, বিভিন্ন কৌশলে সরকারি হাসপাতাল থেকে তারা রোগীদের বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে কিংবা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যায়। সেখানে রোগীরা প্রতারণা সহ অর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আটক ১০জনের মধ্যে একজনের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ায় তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। তবে একজন নারী সহ ৯জনকে ৭ দিনের সশ্রম কারাদন্ড দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত। বাকি ৯ জন ভবিষ্যতে অপ্রয়োজনে হাসপাতালে আসবেন না কিংবা রোগীদের বিরক্ত করবেন না এ মর্মে মুচলেকা দিলে, তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।’ কারাদন্ডপ্রাপ্তরা হলেন দুলাল হোসেন, মঞ্জুরুল ইসলাম, ফরিদ, আব্দুল খালেক, রিপন, ইব্রাহীম, বাদল মিয়া, মাকসুদা ও আব্বাস উদ্দিন। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় ছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোসুমী মান্নান ও শেখ মেজবাহ উল সাবেরিন। তাঁদের সহযোগীতায় ছিলেন র্যাব-১১ এর সহকারী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান ও হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক সামসুদ্দৌহা সহ ব্যাবের কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ সময়: ২১:৩৩:১৩ ১৯৬ বার পঠিত