এডিস মশা নির্মূলের লক্ষ্যে আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১০টায় গুলশানের শহীদ ডা. ফজলে রাব্বী পার্ক থেকে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) ‘ওয়ার্ডভিত্তিক এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংসকরণ ও বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযান’ উদ্বোধন করা হয়। ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ।
১৯নং ওয়ার্ড (গুলশান-বনানী এলাকা) থেকে এ অভিযানের পরীক্ষামূলক যাত্রা শুরু হলো। এ ওয়ার্ডকে ১০টি ব্লকে ভাগ করা হয়, আবার প্রতিটি ব্লককে ১০টি সাব-ব্লকে ভাগ করা হয়। ডিএনসিসির পরিচ্ছন্নতা কর্মীগণ স্থানীয় কমিউনিটির সাথে যুক্ত হয়ে আজ ১নং ব্লকের ১০টি সাব-ব্লকে ১০টি উপদলে বিভক্ত হয়ে এ অভিযান সম্পন্ন করবে। এভাবে আগামী ১০দিনে এ ওয়ার্ডটিতে এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংসকরণ ও বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযান সম্পূর্ণ হবে। এ ওয়ার্ডের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ডিএনসিসির অন্যান্য ওয়ার্ডেও এ অভিযান পরিচালনা করা হবে।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘ডেঙ্গু প্রতিরোধ করতে হলে এডিস মশার উৎপত্তিস্থল ধ্বংস করতে হবে। আমাদের বাসাবাড়ির ভিতরে এবং আশেপাশে এডিস মশার বংশবিস্তারের স্থানগুলো ধ্বংসের কাজটি নিয়মিত নগরবাসীদেরকে করে যেতে হবে’।
তিনি আরো বলেন, ‘পরিচ্ছন্ন হলেই আলোকিত মানুষ হওয়া যায়। অপরিচ্ছন্ন মানুষ আলোকিত মানুষ হতে পারে না। আমাদের মধ্যে নোংরামির অভ্যাস আছে। খুব অল্প কয়েকজনকে বাদ দিলে আমাদের কারোও বাড়িঘর পরিপাটি না। আমাদের সমাজেই একটা বিশৃঙ্খলা আছে। এসব থেকে নিস্তার পেতে হলে আশেপাশের সবকিছু আমাদেরকেই পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে’।
মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘স্থানীয় জনগণ এ অভিযানের সাথে সম্পৃক্ত হলেই অভিযানটি সফল হবে। তাই এ অভিযানে ডিএনসিসির সাথে স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত করা করা হয়েছে। আমরা বাসা-বাড়িতে গিয়ে এডিস মশার লার্ভা পেলে তাকে সতর্ক করবো এবং “সাবধান! এ বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গিয়েছে” লেখা একটি স্টিকার লাগিয়ে দেব। আমাদের বিশ্বাস এরপর তারা নিজেদের শুধরে নেবেন। যদি শুধরে না নেন, তাহলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’
অভিযান চলাকালে সিটি কর্পোরেশনের কর্মীদের সচেতনভাবে সহযোগিতা করার জন্য মেয়র বাড়ির মালিকদের প্রতি আহ্বান জানান।
উদ্বোধন শেষে মেয়র অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদকে সঙ্গে নিয়ে শহীদ ডা. ফজলে রাব্বী পার্কের নিকটস্থ গুলশান ১নং সড়কের ১নং বাড়িতে যান। এটি একটি বাণিজ্যিক ভবন। সেখানে ছাদে পরিত্যক্ত একটি কমোডের ফ্লাশে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। উপস্থিত ডিএনসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজিদ আনোয়ার স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন, ২০০৯ অনুযায়ী ভবনের মালিককে ১ লাখ টাকা অনাদায়ে বিনাশ্রম ৩০দিনের কারাদণ্ড প্রদান করেন। পরে মেয়র এবং অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বাড়ির সামনে একটি স্টিকার লাগিয়ে দেন।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল হাই, সচিব রবীন্দ্রশ্রী বড়ুয়া, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোমিনুর রহমান মামুন, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মঞ্জুর হোসেন, ওয়ার্ড কাউন্সিলর মফিজুর রহমান, বিভিন্ন সোসাইটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭:২৮:১৫ ১৫২ বার পঠিত