যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য বিরোধ, ব্রেক্সিট, জলবায়ু সংকট, আমাজনের আগুন, নানা বিষয় নিয়ে উত্তপ্ত হতে চলেছে ফ্রান্সের বিয়ারিেস আয়োজিত এবারের জি-৭ সম্মেলন। এত মতভিন্নতা নিয়ে কখনোই শীর্য সম্মেলনে বসেনি জি-৭। সম্মেলন শেষে বিশ্বনেতারা এই সব ইস্যুতে একমত হবেন এমন আশা নিয়েই গতকাল শনিবার উত্তর ফ্রান্সে শুরু হয়েছে এ বছরের জি-৭ সম্মেলন। খবর ডয়চেভেলের।
ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক অবশ্য সতর্ক করে দিয়েছেন, এবারের সম্মেলনই হতে পারে রাজনৈতিক একতায় পৌঁছানোর শেষ সুযোগ। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে টাস্ক বলেন, মুক্ত বিশ্ব ও এর নেতৃবৃন্দের জন্য এবারের সম্মেলন এক কঠিন পরীক্ষা। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ জানিয়েছেন, এবারের সম্মেলনে তার অন্যতম লক্ষ্য সব নেতাদের এটা বোঝানো যে, পারস্পরিক উত্তেজনা বিশেষ করে বাণিজ্য সংকট সব দেশের জন্যই ক্ষতিকর। এদিকে প্রতি বছরের মতোই এবারও সম্মেলনস্থলের বাইরে জড়ো হয়েছেন প্রতিবাদকারীরা। বিয়ারিেসর পাশের শহর হেনদায়েতে জি-৭ সদস্য রাষ্ট্রগুলোর অর্থনৈতিক ও পরিবেশ নীতি পাল্টানোর দাবিতে চলছে বিক্ষোভ। জলবায়ু পরিবর্তন ও অন্যান্য ইস্যুতে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার দাবি তাদের।
বাণিজ্য সংকটের কেন্দ্রে ট্রাম্প
সম্মেলনে যোগ দিতে বিমানে ওঠার আগে ফ্রান্সকে হুমকি দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের ওপর ডিজিটাল কর বসানোর পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ফরাসি মদের ওপর নতুন কর বসানোর হুমকি দেন। টাস্ক দ্রুত পাল্টা জবাবে বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট তার হুমকি বাস্তবায়ন করলে ইইউ পাল্টা জবাব দিতে প্রস্তুত। স্ত্রী মেলানিয়াকে নিয়ে এরই মধ্যে ফ্রান্সে পৌঁছেছেন ট্রাম্প। শনিবার বিকেলে ট্রাম্প ও তার স্ত্রীকে আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনা জানান ফরাসি প্রেসিডেন্ট। সম্মেলনের পূর্বে বিভিন্ন কর বাড়ানোয় যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধ চরম রূপ নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার বাণিজ্য সংকটকেই পৃথিবীজুড়ে চলতে থাকা অর্থনৈতিক ধীরগতির অন্যতম কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, এ অবস্থা চলতে থাকলে আবার অর্থনৈতিক মন্দার মুখে পড়তে হতে পারে পৃথিবীকে।
আমাজন নিয়ে সরব ম্যাক্রোঁ
আলোচ্যসূচিতে দক্ষিণ আমেরিকার আমাজনে জ্বলতে থাকা দাবানলও বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনেরো কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে ইইউয়ের সঙ্গে দেশটির বাণিজ্য চুক্তি বাতিলের হুমকিও দিয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, আগুন থামাতে এবং পুনরায় বনায়নে শুধু আহ্বানই জানাবে না, আমাজোনিয়া অঞ্চলের অন্যান্য দেশকে সঙ্গে নিয়ে সর্বশক্তি প্রয়োগ করবো। মাক্রোঁর এই আহ্বানকে সমর্থন জানিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেলও।
বাংলাদেশ সময়: ১২:৫৬:০৭ ১৬২ বার পঠিত