প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব ধরনের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে সতর্ক থাকার আহবান জানিয়ে বলেছেন, এখন সরকারের বিরুদ্ধে যে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে তা মূলত দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যেরই ক্ষতি সাধন করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কিছু লোক আছে অনবরত আমাদের বিরুদ্ধে বাইরে অপপ্রচার চালাচ্ছে, যারা আমাকে রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করতে চায়। এটা আপনাদের (ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দকে) চিহ্নিত করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে তাঁর তেঁজগাওস্থ কার্যালয়ে (পিএমও) বাংলাদেশ তৈরী পোশাক রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)-র নেতৃবৃন্দ সাক্ষাত করতে এলে তিনি একথা বলেন।
দেশের উন্নয়নে তৈরী পোশাক শিল্পের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পণ্য রপ্তানির জন্য এর আকর্ষণ বাড়াতে হলে আপনাদের পণ্যের বহুমুখীকরণের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।’
ইউরোপের বিভিন্ন দেশে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং হাইকমিশনারদের অংশ গ্রহণে গত জুলাই মাসে লন্ডনে অনুষ্ঠিত দূত সম্মেলনে তাঁর প্রদত্ত বক্তৃতার প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশী পণ্যের জন্য তাঁদেরকে নতুন বাজার খুঁজে বের করতে বলেছি।’
ব্রেক্সিট ইস্যু বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যে প্রভাব ফেলবে না, এমন অভিমত ব্যক্ত করে সরকার প্রধান বলেন, বিশেষ করে ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে সম্পাদিত রপ্তানি চুক্তির কারণে ব্রেক্সিট কোনক্রমেই বাংলাদেশের ব্যবসা, বিশেষ করে রপ্তানিকে ক্ষতিগ্রস্থ করবে না, এসব চুক্তির সঠিক বাস্তবায়নই চলবে।
বিজিএসইএ’র নব নির্বাচিত সভাপতি রুবানা হকের নেতৃত্বে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করেন এবং তাঁদের বিভিন্ন দাবিদাওয়া পেশ করেন।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক বিজিএমইএ সভাপতি আনিসুর রহমান সিনহা, আরওয়াল-উল-আলম পারভেজ এবং সিদ্দিকুর রহমান এবং প্রথম জেষ্ঠ্য সহ-সভাপতি মোহাম্মাদ আব্দুস সালাম এবং জেষ্ঠ্য সহ-সভাপতি ফয়সল সামাদ অন্যান্যের মধ্যে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান এবং প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এসময় উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তৈরী পোশাক খাতের উন্নয়নে সম্ভব সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করছি কেননা এটি আমাদের জন্য বিশাল কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিয়েছে, বিশেষকরে নারীদের জন্য। একই সঙ্গে এই খাত দেশের উন্নয়নেও ভূমিকা রাখছে।’
সরকার প্রধান এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘দেশের ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্পের সমস্যা সমাধানেও আমরা প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করেছি।’
বাংলাদেশকে একটি কৃষিপ্রধান দেশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা দেশকে সকল ক্ষেত্রেই এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। আর সেজন্য আমাদের কৃষি এবং শিল্পায়ন দুটি ক্ষেত্রকেই সমান গুরুত্ব দিতে হবে কেননা শিল্পায়ন ছাড়া দেশের সার্বিক উন্নতি হতে পারে না।’
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই দেশে শিল্প স্থাপনের গোড়াপত্তন করেন।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় বিজিএমইএ নেতৃবৃন্দকে পথের ধারে বা যত্রতত্র শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে না তুলে এর জন্য নির্দিষ্ট শিল্পাঞ্চলেই শিল্প কারখানা গড়ে তোলার আহবান জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১৮:৩২:২১ ১০৬ বার পঠিত