রাজধানীর গুলশান থানায় মাদক আইনে করা মামলায় অনলাইন ক্যাসিনোর মূল হোতা সেলিম প্রধান ও তার দুই সহযোগীর ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। দুই সহযোগী হলেন- আক্তারুজ্জামান ও রোকন।
বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর হাকিম মইনুল ইসলাম শুনানি শেষে এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শুনানির আগে ঢাকা মহানগর হাকিম ধীমান চন্দ্র মণ্ডল মাদক মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।
এর আগে বুধবার ঢাকা মহানগর হাকিম ধীমান চন্দ্র মন্ডলের আদালতে তাদের গ্রেফতার দেখানোর আবেদন ও সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করেন গুলশান থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আমিনুল ইসলাম। আদালত শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেন।
অপরদিকে তার বিরুদ্ধে গুলশান থানার মানি লন্ডারিং ও মাদক আইনের মামলার এজাহার গ্রহণ করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৩ নভেম্বর দিন ধার্য করেন আদালত।
বুধবার গুলশান থানায় মানি লন্ডারিং আইন ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে সেলিম প্রধানের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র্যাব)।
এদিকে, সেলিম প্রধানের হেফাজত থেকে দু’টি হরিণের চামড়া উদ্ধারের ঘটনায় তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এই দণ্ডে তিনি এখন কারাগারে রয়েছেন।
দেশ ছেড়ে পালানোর সময় সোমবার দুপুরে শাহজালাল বিমান্দরের থাই এয়ারওয়েজের টিজি-৩২২ নম্বর ফ্লাইটটি ছাড়ার আগমুহূর্তে সেলিম প্রধানকে বিমান থেকে আটক করা হয়। তিনি বাংলাদেশে অনলাইনে ক্যাসিনো ব্যবসায়ের মূলহোতা বলে জানায় র্যাব।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর সোমবার রাত সাড়ে ৯টায় রাজধানীর গুলশান-২ এর ১১/এ রোডে সেলিম প্রধানের অফিসে অভিযান চালায় র্যাব। রাতভর অভিযানের পর মঙ্গলবার দুপুরে বনানীর আরেকটি অফিসে অভিযান চালানো হয়।
২০ ঘণ্টা ধরে তার চলা অভিযানে নগদ ২৮ লাখ ২৫ হাজার টাকা, ৭৭ লাখ ৬৩ হাজার টাকা সমমূল্যের ২৩ দেশের মুদ্রা, ৩২টি চেকবই, ১২টি পাসপোর্ট, ৪৮ বোতল মদ, তিনটি হরিণের চামড়া উদ্ধার করা হয়।
এ সময় র্যাবের হেফাজতে ক্যাসিনো সেলিম জানান, এক বছরে তিনি ৩২৪ কোটি টাকা বিদেশ পাচার করেছেন। তিনটি ‘গেটওয়ে’র মাধ্যমে গত এক বছরে অনলাইন ক্যাসিনো গুরু এই অর্থ পাচার করেন তিনি। সেলিম বলেছেন, একটি গেটওয়ে দিয়ে মাসে পাচার করতেন প্রায় ৯ কোটি টাকা।
এই গেটওয়ে-সংক্রান্ত কাগজপত্রও র্যাবের হাতে এসেছে। বাকি দুটির বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে।
এই তিনটি গেটওয়ের বাইরে সেলিম লন্ডনেও টাকা পাচার করছেন। গ্রেফতারের পর র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে প্রাথমিকভাবে তিনি এ স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।
তারেক রহমানের সহযোগী গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের সঙ্গে সেলিমের ঘনিষ্ঠতা আছে। ২০০১-০৬ সালের মধ্যে তিনি মামুনকে একটি বিএমডব্লিউ গাড়িও উপহার দেন। সোমবার গ্রেফতারের পর র্যাব তাকে অনেকটা সময় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩:৫৫:১০ ১২৪ বার পঠিত