সাকিব আল হাসানকে আইসিসি নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পর পরই আলোচনায় চলে আসেন ভারতীয় জুয়াড়ি দীপক আগারওয়াল। তার সম্পর্কে বেরিয়ে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। ইতিমধ্যে গোটা ক্রিকেট বিশ্বে পরিচিতি পেয়ে গেছেন তিনি।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোও সাগ্রহে আগারওয়ালের খবর প্রচার ও প্রকাশ করছে। এরই ধারাবাহিকতায় অনুসন্ধান চালিয়ে তার সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য বের করে এনেছে ভারতীয় প্রভাবশালী গণমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। অনলাইন পাঠকদের জন্য তা তুলে ধরা হলো-
আগারওয়ালের বাড়ি ভারতের হরিয়ানা রাজ্যে।তবে তিনি স্থায়ীভাবে বসবাস করেন দুবাইয়ে। স্বদেশে হোটেল ব্যবসা করতেন এ ভারতীয় নাগরিক। সেখানে বিশাল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে পাড়ি জমান মরুর দেশে। ইন্ডিয়ার ন্যাশনাল ক্যাপিটাল রিজিওনে ক্রিকেট একাডেমি আছে তার। নিয়মিত ক্রিকেটার তৈরি করে থাকেন তিনি। জুয়াড়ির চেয়ে ক্রিকেট কারিগর হিসেবেই বেশি পরিচিত দীপক।
আগারওয়াল আগে থেকেই আইসিসির রাডারে ছিলেন। তিনি নিজেকে টি-টোয়েন্টি লিগের প্রমোটার হিসেবে পরিচয় দেন। সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই শহরে রয়েছে আইসিসির সদরদফতর। ভারতীয় গণমাধ্যমটি জানায়, বেশ আগে আইসিসির দুর্নীতিবিরোধী বিভাগের রাডারে আসেন এ জুয়াড়ি। দুবাইয়ে একটি ম্যাচ চলাকালে তার গতিবিধি সন্দেহজনক হওয়ায় তাকে পর্যবেক্ষণের আওতায় আনে আকসু। সেই সূত্রে সাকিবের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে তার কথাবার্তার বিষয়টি বেরিয়ে আসে।
ম্যাচ ফিক্সিংয়ের বৈশ্বিক সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত নন আগারওয়াল। গোয়ালিয়রভিত্তিক জুয়াড়িদের সঙ্গে কাজ করেন তিনি। সেসব জুয়াড়িও আইসিসির নজরদারিতে আছে। তার মূল কাজ হচ্ছে খেলোয়াড়দের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলা।এক্ষেত্রে সিদ্ধহস্ত তিনি। এরপর টোপ দিয়ে সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড়ের দলের ভেতরের খবর বের করা।
আজকাল ছোটখাটো লিগেও ফিক্সিং চলে। সেগুলো ঘিরে সক্রিয় হাজার হাজার জুয়াড়ি। কোনো দলের ভেতরের সামান্যতম খবরও তাদের বিশাল কাজে দেয়।
আগারওয়াল প্রথমে একজন খেলোয়াড়কে পদে পদে অনুসরণ করেন।তার সম্পর্কে সবকিছু নখদর্পনে নিয়ে নেন। পরে ওই ক্রিকেটারের দুর্বল জায়গায় হাত দেন। নিজেকে লিগ কিংবা টুর্নামেন্টের এজেন্ট হিসেবে পরিচয় দেন। খেলোয়াড়কে তিনি বলেন, ওই লিগ বা টুর্নামেন্টে খেললে মোটা অংকের পারিশ্রমিক মিলবে।
স্বভাবতই অধিকাংশ ক্রিকেটাররা এ লোভ সামলাতে পারেন না। ফলে আগারওয়ালের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যান তারা। এর ফাঁকে তাদের সব খবরাখবর বের করে নেন তিনি। দলের ভেতরের তথ্য পেয়ে যান। পরে চালে জেনে নেন,উদ্দিষ্ট দলের সমন্বয়,সম্ভাব্য একাদশ, রান।স্বাভাবিকভাবে খেলোয়াড়ের ফোন নম্বরও পেয়ে যান।
এভাবেই চলতে থাকে ক্রিকেটারের সঙ্গে আগারওয়ালের নিয়মিত যোগাযোগ। এক্ষেত্রে ব্যবহার করেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। সময়ে অসময়ে নানা প্রলোভন দেখিয়ে তাদের প্রভাবিত করেন তিনি। এদের মধ্যে অধিকাংশই উদীয়মান মেধাবী ও প্রতিশ্রুতিশীল ক্রিকেটার। তার ফাঁদে পড়ে অনেকেরই ক্যারিয়ার ধ্বংস হয়েছে।
নিঃসন্দেহে আগারওয়াল উঠতি তরুণ খেলোয়াড়দের হুমকি। একই সঙ্গে সাকিব কাণ্ড তাদের জন্য সতর্কবার্তাও বটে। সবাই সাবধান!
বাংলাদেশ সময়: ১৫:১৭:৩৫ ২০৩ বার পঠিত