জলবায়ু চুক্তি প্রত্যাহার যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ঐতিহাসিক ভুল

প্রথম পাতা » আন্তর্জাতিক » জলবায়ু চুক্তি প্রত্যাহার যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ঐতিহাসিক ভুল
বুধবার, ৬ নভেম্বর ২০১৯



---

পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও সোমবার (৪ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, প্যারিস চুক্তি (জলবায়ু চুক্তি) থেকে নিজেদের প্রত্যাহারের জন্য জাতিসংঘে একটি আনুষ্ঠানিক চিঠি জমা দিয়েছেন।

এটি প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু করবে যা এক বছর পর্যন্ত সময় নেবে। তার এই বক্তব্যের মাধ্যমে আমেরিকায় কার্বন দূষণের ব্যাপার স্পষ্ট হয়ে ওঠে। তারা দাবি করছে প্যারিস চুক্তি আমেরিকার অর্থনীতির জন্য একটি বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এ পর্যন্ত প্রায় ২০০ দেশ জলবায়ু চুক্তিতে স্বাক্ষর করে যার মধ্যে প্রতিটি দেশ জলবায়ু পরিবর্তনের লক্ষ্যে তাপমাত্রা নির্গমন রোধে নিজস্ব প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

এক আন্তর্জাতিক জলবায়ু আলোচনায় পম্পেও বলেছিলেন, আমরা একটি বাস্তবসম্মত এবং যৌক্তিক প্রস্তাব দিতে চাই, যার ফলে কার্বন নিঃসরণ কম হবে এবং অর্থনৈতিক ক্ষতি হবে না। নিরাপদ জ্বালানি শক্তিরও প্রস্তাব থাকবে।

এই প্রথম কোন দেশ আমেরিকা যারা বৈশ্বিক জলবায়ু চুক্তিতে স্বাক্ষর করার পরও নিজেদের নাম কর্তন করতে চাচ্ছে। তবে এ ব্যাপারে চূড়ান্তভাবে কী হবে তা এখনো বলা যাচ্ছে না। পরে এ সংক্রান্ত ব্যাপারে বিশদ বিবরণীসহ জানানো হবে বলে জাতিসংঘের উপ-মুখপাত্র ফারহান হক জানিয়েছেন।

চুক্তি অনুযায়ী কোন দেশ চুক্তির ৩ বছরের মধ্যে অংশীদারিত্ব প্রত্যাহার করতে পারবে না। সে অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের ২০২০ সালের নির্বাচনের আগে এ প্রত্যাহার কার্যকর হবে না। উল্লেখ্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত দুই বছর ধরেই জলবায়ু চুক্তি প্রত্যাহারের কথা বলে আসছেন তবে কখনো করতে পারেননি যা সোমবার করেছেন।

এই প্রত্যাহারকে সাবেক নিউ ইয়র্ক সিটি মেয়র এবং পরিবেশবিদ মাইকেল ব্লুমবার্গ ট্রাম্পের অদক্ষতাজনিত ব্যর্থতা বলে মন্তব্য করলেন।
সিয়েরা ক্লাবের নির্বাহী পরিচালক মাইকেল ব্রুন বলেন, আজকের প্রত্যাহারের প্রেক্ষিতে যদি ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্র জলবায়ু চুক্তি থেকে বাদ পড়ে এবং তা যদি আগামী নির্বাচনের পরে হয় তবে, ট্রাম্পের বিদায়ের পরে তা বাস্তবায়িত হওয়ার জন্য প্যারিস চুক্তি প্রত্যাহার যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ঐতিহাসিক ভুল বলেই বিবেচিত হবে।

উল্লেখ্য ২০০৫ সাল থেকে গ্রীনহাউস গ্যাস নিঃসরণ রোধে শীর্ষ ১০ দেশের তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রের ঠাই হয়নি। যুক্তরাজ্য , ফ্রান্স, সুইডেন, স্পেন, পর্তুগাল, ইতালি, আয়ারল্যান্ড, হাঙ্গেরি, গ্রীস, চেক রিপাবলিক এবং অন্যান্য দেশগুলি যুক্তরাষ্ট্র থেকে অনেক ভাল করেছে বলে বিশেষজ্ঞদের মত।

অপরদিকে পম্পেও বলছেন, ২০০৫ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে গ্রীনহাউস গ্যাস নির্গমন ১৩ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে ফলে তাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ১৯ শতাংশ। আবার ২০১৮ সালে বিরুপ আবহাওয়া এবং অর্থনৈতিক কারণে ২.৭ শতাংশ কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন বেড়েছে।

কলম্বিয়া ল স্কুলের প্রধান মাইকেল জেরার্ড বলছেন, দীর্ঘ দিন কম কয়লা ব্যবহার করায় আমেরিকার জলবায়ু একটা শিথীল পর্যায়ে আসছে অথচ এই মুহূর্তে কয়লার ব্যবহার বাড়াতে ডোনাল্ড ট্রাম্প চাপ সৃষ্টি করছে।

তিনি আরো বলেন, পৃথিবীর ২য় কার্বন নিঃসরণকারী দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ১৩ শতাংশ নয় ৮০ শতাংশ নির্গমন হ্রাস করা উচিত। তাছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের জলবায়ু চুক্তি প্রত্যাহার অন্যান্য দেশগুলোকেও অনুপ্রাণিত করছে।

সূত্র: ব্যাংকক পোস্ট

বাংলাদেশ সময়: ১৭:০৭:৪২   ১৪৮ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আন্তর্জাতিক’র আরও খবর


কানাডায় এলোপাথাড়ি গোলাগুলি, চার বাংলাদেশি আহত
মিয়ানমারের সামরিক অভ্যুত্থান ব্যর্থ করতে চায় জাতিসংঘ - গুতেরেস
ব্রাজিলে করোনায় ২ লাখ ২৭ হাজার ৫৬৩ জনের মৃত্যু
করোনায় বিশ্বে মৃত্যুর সংখ্যা ২২ লাখ ৭৬ হাজার ছাড়াল
ঘরের মাঠে টানা দ্বিতীয় হার লিভারপুলের
ফেসবুক বন্ধ করল মিয়ানমারে সামরিক জান্তা
করোনার বিরুদ্ধে ৯২ শতাংশ কার্যকর স্পুটনিক ভি
করোনার ছোবলে থামছে না প্রাণহানি, মৃত্যুর সংখ্যা ২২ লাখ ৪৭ হাজার
মিয়ানমার ইস্যুতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক আজ
তুর্কি নিয়ন্ত্রিত উত্তর সিরিয়ায় গাড়ি বোমা বিস্ফোরণে ১২ জন নিহত

আর্কাইভ