রাজবাড়ীতে একুশে বইমেলাসহ ৩দিনের অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » রাজবাড়ীতে একুশে বইমেলাসহ ৩দিনের অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন
মঙ্গলবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০১৮



---মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপনের লক্ষ্যে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে গতকাল ১৯শে ফেব্রুয়ারী বিকাল সাড়ে ৪টায় ৩দিনব্যাপী অমর একুশে বইমেলা ও দেয়ালিকা প্রদর্শনী উদ্বোধন অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ খুশি রেলওয়ে ময়দানে অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে বইমেলার উদ্বোধন করেন ও বক্তব্য রাখেন রাজবাড়ী-২ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ জিল্লুল হাকিম।
জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলীর সভাপতিত্বে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন একুশে পদকপ্রাপ্ত চিত্রশিল্পী অধ্যাপক(অবঃ) মনসুর-উল-করিম, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফকীর আব্দুল জব্বার, পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি অতিরিক্ত সুপার(সদর সার্কেল) মোঃ রেজাউল করিম এবং সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ রহিম বক্স।
এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব) মোঃ আব্দুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(শিক্ষা ও আইসিটি) মোঃ সাদেকুর রহমান, গোয়েন্দা সংস্থার এনএসআই’র উপ-পরিচালক মোঃ জিল্লুর রহমান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা নুরমহল আশরাফী, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার কামরুল ইসলাম গোলদার, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সৈয়দ সিদ্দিকুর রহমান, দৈনিক মাতৃকণ্ঠের সম্পাদক ও রাজবাড়ী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক খোন্দকার আব্দুল মতিন ও জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সাধারণ সম্পাদক অসীম কুমার পালসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীগণসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি রাজবাড়ী-২ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ জিল্লুল হাকিম তার বক্তব্যে বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারী মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে কি ঘটেছিল সে সম্পর্কে আমাদের সকলেরই কম-বেশী জানা। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারী মাতৃভাষার জন্য আন্দোলন যদি সফল না হতো তাহলে আমরা আমাদের মাকে মা বলে ডাকতে পারতাম না বা আজকে আমরা যে ভাষায় কথা বলি সেই বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারতাম না। সেদিন ভাষার জন্য আন্দোলন সফল হওয়ার কারণে তার থেকে অনুপ্রেরণা পেয়ে বাঙালী তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বিভিন্ন আন্দোলনসহ ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে নয় মাসব্যাপী যুদ্ধের পর ৩০লক্ষ শহীদের রক্ত ও ২লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় অর্জন করেছিল। সুতরাং ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারীর ভাষা আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছিলেন আজকের এই দিনে আমি তাদের রূহের মাগফেরাত কামনাসহ গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি এবং ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী যারা এখনো বেঁচে আছেন তাদেরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম আমাদের মায়ের ভাষা বাংলাকে গবেষণা ও চর্চার মাধ্যমে আরো বেশী সমৃদ্ধ করবে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অনেক উচ্চে পৌঁছে দিবে। বক্তব্যের শেষে তিনি ১৯-২১শে ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত ৩দিনব্যাপী অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী তার বক্তব্যে বলেন, ১৯৫২ সালের পর থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত একুশে ফেব্রুয়ারীকে বাঙালী জাতি শহীদ দিবস হিসেবে পালন করতো। ১৯৯৯ সালে ২জন কানাডা প্রবাসী বাঙালীর ও সরকারের প্রচেষ্টায় জাতিসংঘের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইউনেস্কো ২১শে ফেব্রুয়ারীকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের পর থেকে বাংলাদেশের ন্যায় সারা বিশ্বে একুশে ফেব্রুয়ারীকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করা হচ্ছে। বর্তমানে ইউনেস্কো কর্তৃক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত পৃথিবীর একমাত্র আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট বাংলাদেশেই স্থাপন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, আলোচনা সভার পূর্বে প্রধান অতিথি অনুষ্ঠানস্থলে এসে পৌঁছালে জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী তাকে স্বাগত জানান। এরপর তিনিসহ অন্যান্য অতিথিগণ বেলুন ও শান্তির প্রতিক কবুতর উড়িয়ে বইমেলার উদ্বোধন করেন। এছাড়াও অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিদেরকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্রেস্ট উপহার প্রদান করা হয়। আলোচনা সভার শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ৩দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার মধ্যে আরো রয়েছে ঃ আজ ২০শে ফেব্রুয়ারী বিকাল ৫টায় আলোচনা অনুষ্ঠান ও সন্ধ্যা ৬টা হতে রাত ১২টা পর্যন্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ২১শে ফেব্রুয়ারী রাত ১২টা ১মিনিটে সরকারী, আধা-সরকারী, স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সর্বস্তরের জনগণ কর্তৃক কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পন, সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সরকারী, আধা-সরকারী, স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তি মালিকানাধীন ভবনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতভাবে উত্তোলন, সুবিধামত সময়ে ভাষা শহীদদের রূহের মাগফেরাত কামনা করে সকল মসজিদ, মন্দির, গীর্জা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা, বিকাল ৩টায় ডাঃ আবুল হোসেন কুইজ প্রতিযোগিতা, বিকাল ৪টায় স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচী, বিকাল সাড়ে ৪টায় একুশের প্রেক্ষিত শীর্ষক আলোচনা, সন্ধ্যা ৬টায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় সমাপন ও পুরস্কার বিতরণ।
২১শে ফেব্রুয়ারী সমাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী(কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ) আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী,এমপি। সম্মানিত বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন রাজবাড়ী-২ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ জিল্লুল হাকিম ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য কামরুন নাহার চৌধুরী লাভলী। বিশেষ অতিথি হিসেবে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফকীর আব্দুল জব্বার, পুলিশ সুপার সালমা বেগম পিপিএম-সেবা, সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ রহিম বক্স, রাজবাড়ী পৌরসভার মেয়র মহম্মদ আলী চৌধুরী, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডঃ এম.এ খালেক এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ নুরুজ্জামান উপস্থিত থাকবেন। সভাপতিত্ব করবেন জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী।

বাংলাদেশ সময়: ১৩:০৯:২০   ৫৭১ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

ছবি গ্যালারী’র আরও খবর


সিলেটের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ
আজকের রাশিফল
আল কোরআন ও আল হাদিস
গুজব উপেক্ষা করে জনগণ ভ্যাকসিন নিচ্ছে
অর্পিত সম্পত্তি বিষয়ক চিহ্নিত সমস্যাগুলো যথাযথ সংশোধন করা হবে - ভূমি সচিব
৬টি সেক্টরকে শিশুশ্রমমুক্ত ঘোষণা করলো সরকার
ফসল উৎপাদন বাড়াতে অঞ্চল ভিত্তিক ‘জোন ম্যাপ’ প্রণয়নের ওপর গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর
দেশের সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভাগুলোতে জনস্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র - এলজিআরডি মন্ত্রী
হঠাৎ অজানা কারণেই বেড়ে গেলো পেঁয়াজের দাম
স্পীকারের সাথে বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত অ্যালেজান্ড্রা বের্গ ভন লিনডে-র সৌজন্য সাক্ষাৎ

আর্কাইভ