ওসি আব্দুস সাত্তার মিয়া শোনালেন সত্যের বানী

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » ওসি আব্দুস সাত্তার মিয়া শোনালেন সত্যের বানী
বৃহস্পতিবার, ২৯ মার্চ ২০১৮



--- আগের চেয়ে সিদ্ধিরগঞ্জের মাদক এখন নিয়ন্ত্রনে রয়েছে দাবী করলেও সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সাত্তার মিয়া ক্ষোভের সাথে বলতে বাধ্য হন, আমাদের থানায় কয়েক জন চোর ও বাটপার অফিসার রয়েছে। তারা সোর্সের সহায়তায় অপকর্ম করে বেড়ায় বলে অভিযোগ রয়েছে। যদি কোন পুলিশ কর্মকর্তা অথবা সোর্স সম্পর্কে কোন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকে তাহলে আমাকে জানাবেন আমি ব্যবস্থা নিব। আসুন সবাই মিলে সিদ্ধিরগঞ্জকে মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও ইভটিজার মুক্ত করে গড়ে তুলি।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার আয়োজনে ওপেন হাউজ ডে ও কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে আগত কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির নেতৃবৃন্দের অভিযোগমূলক বক্তব্যের জবাবে তিনি আত্নপক্ষ সমর্ন করতে গিয়ে এ বক্তব্য দেন।

সিদ্ধিরগঞ্জের প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে মাদকের ছড়াছড়ি, চেকপোষ্টেপুলিশ ও সোর্সের হয়রানী, সিএনজিতে নারী-পুরুণ দেখলেই পুলিশ দুইজনকে দু-জায়গায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ এবং স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিলেও কাবিননামা দেখতে চায় পুলিশ এমন নানা অভিযোগ উঠে আসে সিদ্ধিরগঞ্জে পুলিশের ওপেন হাউজডে’তে।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: শাহ আলমের সভাপতিত্বে ওপেন হাউজ ডে ও কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মতবিনিময় সভায় থানা কমিউনিটি পুলিশের উপদেষ্টা নাসিক ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র-২ আলহাজ্ব মতিউর রহমান মতি,সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর মনোয়ারা বেগম,সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নজরুল ইসলাম,৩নং ওয়ার্ড কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর টিপু,সাবেক সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর রেহেনা পারভীন,থানা কমিউনিটি পুলিশের সাধারন সম্পাদক তাজিম বাবু বক্তব্য রাখেন।

নাসিক কাউন্সিলর মতি আক্ষেপ নিয়ে বলেন, মাদক সেবী ও ব্যবসায়ীদের ধরে আমরা থানায় দেই, এক সপ্তাহ পরে দেখা যায় ওই লোক আগের চাইতে আরো ব্যাপকভাবে মাদক ব্যবসা করছে।

সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর মনোয়ারা বেগম জানান, নারায়ণগঞ্জ-শিমরাইল সড়কের আইটি স্কুলের মোড়ে চেক পোষ্টে তল্লাশীর নামে গাড়ীতে একসাথে নারী পুরুষ থাকলে পুলিশ তাদেরকে দু দিকে টানা হেচড়া করে নানাবিধ হয়রানী করে এবং মানিব্যাগে বেশী টাকা থাকলে সে টাকা হাতিয়ে নেয়ার জন্য মাদক দিয়ে মামলা দেওয়ার হুমকি প্রদর্শন করে যাত্রী সাধারনকে অহরহ হয়রানী করে বেড়াচ্ছে। এছাড়া আমার ৪ ও ৫ নং ওয়ার্ডের সিমান্তবর্তী এলাকার সোনামিয়া ষ্টেডিয়ামের আশে পাশে সন্ধ্যার পর মাদকের ছড়াছড়ি। এদেরকে প্রতিহত করতে টহল বৃদ্ধি করুন।

নাসিকের ৩নং ওয়ার্ড কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর টিপু বলেন, কতিপয় অসাধু পুলিশ কর্মকর্তা ও সোর্সের সহযোগিতায় এলাকায় এখন মাদকের ছড়াছড়ি। কিভাবে কার সহযোগিতায় সীমান্ত এলাকা থেকে মাদক পাচার হয়ে নারায়ণগঞ্জে প্রবেশ করছে তা অনুসন্ধান করুন এবং রাজধানী ঢাকায় প্রবেশের অন্যতম রোড কাঁচপুর ব্রীজে তল্লাশীর জন্য পুলিশ চৌকি বসান। তাহলেই আমাদের সন্তানদেরকে মাদকের ছোবল থেকে রক্ষা করা যাবে।

সাবেক সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর রেহেনা পারভীন বলেন, কিছুদিন আগে ভুইগড়ে আমার মেয়ের বিয়ে হয়েছে। বিয়ের কয়েকদিন পর আমার মেয়ে তার স্বামীর সঙ্গে সিএনজি যোগে লিংকরোড দিয়ে নারায়ণগঞ্জ যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে জালকুড়ি বাসষ্ট্যান্ডে পুলিশ চেকপোষ্টে তাদের সিএনজিটি থামিয়ে মেয়ের জামাইকে নামিয়ে আমার মেয়েকে সিএনজিতে বসিয়ে পুলিশ দু’জনকে দু’ জায়গায় জিজ্ঞাসাবাদ করে। পুলিশের কাছে পরিচয় দেয়ার পরও তাদের কবে বিয়ে হয়েছে সে কাবিননামা চায়। আমার মেয়ে সিএনজি থেকে নামতে চাইলেও তারা তাকে নামতে দেয়নি। এসময় আমার মেয়ে আমাকে ফোন দিলে আমি এসে দেখি সে ভয়ে কাপছে। আমি পুলিশকে জিজ্ঞাসাবাদ করায় পুলিশ উত্তর দেয় আপা চেক পোষ্টে বিভিন্ন পরিবহনে তল্লাশী করা আমাদের ডিউটি। তখন কেন কাবিন নামা চাওয়া হলো জানতে চাইলে নানাবিধ গল্প শোনায়। রাস্তায় বের হলে যদি স্বামী স্ত্রীকে কাবিন নামা নিয়ে বের হতে হয় তাহলে আমরা যাবো কোথায়?

থানা কৃষকলীগের সাধারন সম্পাদক ইয়াছিন মিয়া বলেন, আমার ১০নং ওয়ার্ডের পাঠানটুলি নতুন আইলপাড়া এলাকায় মাদকের ছড়াছড়ি। কয়েকজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী এলাকাটি দাবরিয়ে বেড়াচ্ছে।

অপর এক কমিউনিটি পুলিশ নেতা বলেন, বর্তমানে সোর্সদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী। কিছু অসাধু পুলিশ অফিসার ও সোর্সদের সহায়তায় মাদক ব্যবসায়ীরা মাদক ব্যবসা করছে।

থানা কমিউনিটি পুলিশের সাধারন সম্পাদক তাজিম বাবু বলেন, ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা একটি নতুন ব্যাধী হিসেবে রূপ ধারন করেছে। সকাল, দুপুর ও রাতে নারায়ণগঞ্জ-শিমরাইল সড়কের কয়েকটি পয়েন্টে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়াও অহরহ ঘটছে সড়ক দূর্ঘটনা। থানা পুলিশের তৎপরতায় কিছু দিন বন্ধ থাকায় আমরা স্বস্থিতে ছিলাম। তাই এ থেকে উত্তরণে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নজরুল ইসলাম বলেন, গত ৯ মাসে ১০০ টিরও বেশী মাদক মামলা রুজু হয়েছে। এটাকে সহনীয় পর্যায়ে রাখার জন্য সম্মিলিত ভাবে কাজ করছি। সোর্সরা কিছু অপকর্ম করছে, তা অস্বীকার করার নেই। তবে কোথায় মাদক ব্যবসা হচ্ছে এবং কখন কার ঘরে মাদক আসছে তা সোর্সেরাই খবর রাখে। সেজন্য তাদের কাছ থেকে সহযোগিতা নিয়ে থাকি। যদি আমাদের কোন পুলিশ অফিসার অথবা সোর্স সম্পর্কে কোন অনৈতিক কাজের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে আমাদেরকে জানাবেন আমরা ব্যবস্থা নেব।

অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি (অপারেশন) আব্দুল আজিজ, মহানগর আওয়ামীলীগের সদস্য বদিউজ্জামান বদু, থানা আওয়ামীলীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক বাবু কালিপদ মল্লিক, থানা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারন সম্পাদক আমিনুল হক রাজু, গোদনাইল ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এমএ বারী, আব্দুল মতিন সাউদ, হাজী ইয়াকুব আলী প্রমূখ।

বাংলাদেশ সময়: ২১:২১:৪৫   ৫৫৫ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

ছবি গ্যালারী’র আরও খবর


সিলেটের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ
আজকের রাশিফল
আল কোরআন ও আল হাদিস
গুজব উপেক্ষা করে জনগণ ভ্যাকসিন নিচ্ছে
অর্পিত সম্পত্তি বিষয়ক চিহ্নিত সমস্যাগুলো যথাযথ সংশোধন করা হবে - ভূমি সচিব
৬টি সেক্টরকে শিশুশ্রমমুক্ত ঘোষণা করলো সরকার
ফসল উৎপাদন বাড়াতে অঞ্চল ভিত্তিক ‘জোন ম্যাপ’ প্রণয়নের ওপর গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর
দেশের সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভাগুলোতে জনস্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র - এলজিআরডি মন্ত্রী
হঠাৎ অজানা কারণেই বেড়ে গেলো পেঁয়াজের দাম
স্পীকারের সাথে বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত অ্যালেজান্ড্রা বের্গ ভন লিনডে-র সৌজন্য সাক্ষাৎ

আর্কাইভ