মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন পিছিয়ে দিতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরামর্শ প্রত্যাখ্যান করেছেন তার নিজ দল রিপাবলিকান পার্টির শীর্ষ নেতারা।
সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের নেতা মিচ ম্যাককনেল এবং প্রতিনিধি পরিষদের শীর্ষ রিপাবলিকান নেতা কেভিন ম্যাককার্থি নভেম্বরের নির্বাচন স্থগিতের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
ডাকযোগে ভোটিং ব্যবস্থায় কারচুপি ও ফল জালিয়াতির সম্ভাবনা থাকতে পারে মন্তব্য করে বৃহস্পতিবার ট্রাম্প নভেম্বরের নির্বাচন পিছিয়ে দেয়া যায় কিনা, তা নিয়ে আলাপ তুলেছিলেন।
মানুষের ভোট দেয়ার যথাযথ, সুরক্ষিত ও নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন পিছিয়ে দেয়ার পরামর্শ দেন ট্রাম্প।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডাকযোগে ভোটে জালিয়াতির যে যুক্তি দিচ্ছেন, তার পক্ষে তেমন শক্ত প্রমাণ নেই । রিপাবলিকান এ প্রেসিডেন্ট অবশ্য অনেকদিন ধরেই মেইল-ইন ভোটিংয়ের বিরোধিতা করে আসছেন।
ট্রাম্পের পরামর্শের প্রতিক্রিয়ায় ম্যাককনেল বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন এর আগে কখনোই পিছিয়ে দেয়া হয়নি। যুদ্ধ হোক, মন্দা, গৃহযুদ্ধ- ইতিহাসে কখনোই যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল নির্বাচন নির্দিষ্ট সময়ের পরে হয়নি।
তিনি বলেন, ৩ নভেম্বর নির্বাচন করতে আবারও আমরা নিশ্চয়ই একটা না একটা উপায় বের করবো।
ম্যাককনেলের কথার প্রতিধ্বনি শোনা গেছে প্রতিনিধি পরিষদের সংখ্যালঘু অংশের নেতা ম্যাককার্থির কণ্ঠেও। তিনি বলেন, নির্বাচন নির্ধারিত সময়েই হওয়া উচিত।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, নির্বাচন পিছিয়ে দেয়ার মতো সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা কেবল কংগ্রেসেরই রয়েছে। প্রেসিডেন্টের হাতে এমন কোনো কর্তৃত্ব নেই।
কাজেই ট্রাম্পের এই ধারনা উড়িয়ে দিয়েছেন তার সমালোচকেরা। এমনকি তার মিত্রদেরও কোনো সায় মেলেনি।
ওয়াশিংটন পোস্টের খবরে বলা হয়েছে, আগামী ৩ নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জনগণের আস্থা নষ্ট করতে ট্রাম্পের সর্বশেষ নাটকীয় চেষ্টা হিসেবে এই প্রস্তাব পেশ করেছেন।
তারা বলছেন, অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের খবর থেকে মানুষের মনোযোগ অন্যত্র সরিয়ে নিতেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এমন চেষ্টা করছেন।
অনেক আইন বিশেষজ্ঞের অভিমত, বারবার তিনি যে সমালোচনা করছেন, তাতে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় তার সমালোচকদের আস্থা নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র এখন বহুমুখী সংকটের মধ্যে আছে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে দেশটিতে দেড় লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। অর্থনৈতিক মন্দাও পিছু ছাড়ছে না। এদিকে বর্ণবাদ ও পুলিশি সহিংসতার বিরুদ্ধেও দেশজুড়ে প্রতিবাদ বিক্ষোভ চলছে।
ঠিক এ সময়ে টুইটারে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে নির্বাচন পিছিয়ে দেয়ার প্রস্তাব দিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
বৃহস্পতিবার সকালে মহামন্দার পর থেকে সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক সংকোচনের খবর দিল মার্কিন সরকার। গত এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত দেশটির অর্থনীতি ১০ শতাংশ কমে এসেছে। যেটা গত ৭০ বছরের মধ্যে রেকর্ড।
বাংলাদেশ সময়: ১৪:৫৭:১৯ ৮৪ বার পঠিত