গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে আপিল শুনানিতে বিএনপির প্রার্থী হাসানউদ্দিন সরকারের আইনজীবী জয়নুল আবেদিন গাজীপুরবাসীকে ধানের শীষে ভোট দেয়ার অধিকার থেকে জনগণকে বঞ্চিত না করার অনুরোধ জানিয়েছেন।
নির্বাচনে স্থগিতাদেশ দিয়ে গত ৬ মে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চের আদেশের বিরুদ্ধে হাসানের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম এবং নির্বাচন কমিশনের আপিলের শুনানি আজ বৃহস্পতিবার একসঙ্গেই হয়। আর এই শুনানির পর ভোটের স্থগিতাদেশ বাতিল করে ভোট নেয়ার নির্দেশ দেয় আপিল বিভাগ।
হাইকোর্ট ভোটে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল সাভারের শিমুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবিএম আজহারুল ইসলাম সুরুজের এক আবেদনে। তবে সুরুজ এর এক মাস আগে ১০ এপিল উচ্চ আদালত থেকেই খালি হাতে ফিরেছিলেন। সে সময় তার আইনজীবী ছিলেন বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদ। আর সেদিন আদালতের সিদ্ধান্ত গোপন করে পরের রিটটি করা হয়।
আদালতে শুনানিতে কী বলেছেন, জানতে চাইলে হাসান উদ্দিন সরকারের আইনজীবী জয়নুল আবেদিন বলেন, ‘আমরা আদালতকে বলেছি, মাননীয় আদালত মানুষ দীর্ঘদিন পরে ধানের শীষে মানুষ একটা ভোট দেয়ার একটা অধিকার পেয়েছে, সুযোগ পেয়েছে। এই সুযোগ থেকে দয়া করে তাদের বঞ্চিত করবেন না।’
‘তাই আদালতের আদেশে আমরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করছি।’
‘হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ স্থগিত চেয়ে আমরা চেম্বারে (চেম্বার আদালত) শুনানি করেছিলাম। পরে মামলাটি ফুল কোর্টে (আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে) শুনানির জন্য দেয়া হয় এবং আজ সে আপিলের ওপর শুনানি হয়।’
‘আমরা আজ শুনানিতে বলেছি, যিনি রিট পিটিশন করেন তিনি ইতোমধ্যে নৌকা মার্কায় নির্বাচন করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি যে ওয়ার্ডগুলোর কথা বলেছেন সেখানে ইতিমধ্যেই ২০১৩ সালে নির্বাচন হয়েছে। কাজেই এই যে ছয়টি এলাকার কথা বলা হয়েছে সেই ছয়টি এলাকায় গাজীপুর সিটি করপোরেশনের আওতাধীন গেজেট নটিফিকেশন হয়েছে এবং সেই গেজেটের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে একাধিকবার তিনি মামলা করেছেন।’
‘তিনি হাইকোর্টের পৃথক দুটি বেঞ্চে একই বিষয়ে রিট দুটি করেছিলেন। তার পূর্বের রিট দুটির শেষেরটি হাইকোর্টের রুল অনুসারে সবকিছু বর্ণনা করে তৃতীয় আদালতে মামলা করতে পারেন। কিন্তু তারা সেটা সাপ্রেস (তথ্য গোপন) করেছেন। এই পয়েন্টগুলো আমরা আদালতে বলেছি। আদালতও আমাদের এই পয়েন্টগুলো বিবেচনা করেছেন।’
‘আমরা আদালতে আরও বলেছি নির্বাচনের পদ্ধতির নোটিফিকেশন হয়ে গেলে নির্বাচন পদ্ধতির নিয়ে চ্যালেঞ্জ করা যায় না। আমরা সিক্স ডিএলসির কথা বলেছি, ৪৮ ডিএলআর এর কথা বলেছি। আদালত আমাদের বক্তব্য শুনেছেন এবং অন্যপক্ষের (সুরুজ) আইনজীবীদের বক্তব্যও শুনেছেন।’
‘আদালত উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনে ঐক্যবদ্ধতার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচন হওয়া সম্ভব এবং এই সিডিউলেই নির্বাচন হওয়া দরকার। সে নির্বাচনের জন্য আমরা একটি সময় নির্ধারণ করে দিতে আদালতকে বলেছি।’
‘প্রথমে আমরা ১৫ মে নির্বাচন চেয়েছিলাম। পরে আবার বলেছি, যেহেতু আপনারা (বিচারপতিগণ) ও নির্বাচন কমিশন বলছে এই তারিখে (১৫ মে) নির্বাচন সম্ভব নয়। পরে আদালত রমজান ও ঈদের কথা চিন্তা করে এবং নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য শুনে বিচার-বিশ্লেষণ করে আগামী ২৮ জুনের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করতে বলেছেন।’
বাংলাদেশ সময়: ১৬:০৭:২৬ ৩৯৭ বার পঠিত