রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ২০ জুন কবি সুফিয়া কামালের
জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বাণী প্রদান করেছেন :
“নারী জাগরণের অন্যতম পথিকৃৎ বেগম সুফিয়া কামালের ১০৭তম
জন্মবার্ষিকীতে আমি তাঁর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই।
কবি সুফিয়া কামালের জন্ম ১৯১১ সালের ২০ জুন বরিশালের শায়েস্তাবাদের
এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে। তৎকালে বাঙালি মুসলমান নারীদের লেখাপড়ার সুযোগ
একেবারে সীমিত থাকা সত্বেও তিনি নিজ চেষ্টায় লেখাপড়া শেখেন এবং শৈশব
থেকেই কবিতাচর্চা শুরু করেন। তাঁর কবিতায় ব্যঞ্জনাময় ছন্দে ফুটে উঠত
সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখ ও সমাজের সার্বিক চিত্র। কবির প্রথম কবিতা
‘বাসন্তী’ প্রকাশিত হয় সওগাত পত্রিকায় ১৯২৬ সালে। প্রথম কাব্যগ্রন্থ
‘সাঁঝের মায়া’ ১৯৩৮ সালে প্রকাশিত হলে রবীন্দ্রনাথ এ কাব্য পড়ে ভূয়সী
প্রশংসা করেন। এ কাব্যের ভূমিকা লিখেন কাজী নজরুল ইসলাম। সুদীর্ঘকাল ধরে
তিনি সাহিত্যচর্চা, সমাজসেবা ও নারী কল্যাণমূলক নানা কর্মকা-ে জড়িত
ছিলেন। কবি সুফিয়া কামাল ছিলেন বাংলাদেশের নারী সমাজের এক উজ্জ্বল ও
অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব।
নারী জাগরণের পথিকৃৎ বেগম রোকেয়ার সাথে সুফিয়া কামালের সাক্ষাৎ
ঘটে ১৯১৮ সালে কলকাতায়। বেগম রোকেয়া ছিলেন তাঁর অনুপ্রেরণার উৎস।
তিনি নারী সমাজকে কুসংস্কার আর অবরোধের বেড়াজাল থেকে মুক্ত করতে আমৃত্যু
সংগ্রাম করে গেছেন। তিনি ছিলেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা
সভাপতি। দেশের সকল প্রগতিশীল আন্দোলন-সংগ্রামে তিনি সক্রিয়ভাবে যুক্ত
ছিলেন। নারীদের সংগঠিত করে মানবতা, অসাম্প্রদায়িকতা, দেশাত্মবোধ ও
গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সমুন্নত রাখতে তিনি ছিলেন সর্বদা সচেষ্ট।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নারী-পুরুষের সমতাপূর্ণ একটি মানবিক সমাজ ও রাষ্ট্র
প্রতিষ্ঠা ছিল সুফিয়া কামালের জীবনব্যাপী সংগ্রামের প্রধান লক্ষ্য।
কবি সুফিয়া কামাল রচিত সাহিত্যকর্ম নতুন প্রজন্মকে গভীর
দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ ও অনুপ্রাণিত করে। কবির জীবন ও আদর্শ এবং তাঁর অমর
সাহিত্যকর্ম নতুন প্রজন্মের প্রেরণার চিরন্তন উৎস হয়ে থাকবে। আমি এ
মহীয়সী নারীর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।
খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”
বাংলাদেশ সময়: ১৩:১৫:২৮ ৩৮১ বার পঠিত