আজ মঙ্গলবার জামাইষষ্ঠী, পঞ্চব্যঞ্জনে জামাইদের বরণ করে নেয়ার রেয়াজ বহুপ্রাচীন। সেই উপলক্ষে বাজারে প্রায় সব জিনিসের দামই আজ আকাশছোঁয়া। সকাল থেকেই মিষ্টির দোকান ও মাংসের দোকনে পরে গেছে লাইন। এ উপলক্ষে রাজ্য সরকার অর্ধদিবসের ছুটি ঘোষণা করেছে। অর্থাৎ সরকারি কর্মচারীরা মঙ্গলবার দুপুর ২টার পরই পাবেন ছুটি।
জামাইষষ্ঠী মানেই বাঙালিদের কাছে কার্যত উৎসব। জামাই-এর মঙ্গলার্থে ধান-এর ব্যবহার। কারণ, ধান সমৃদ্ধির ও বহু সন্তানের প্রতীক। দুর্বা ব্যবহৃত হয় চির সবুজ ও চির সতেজের প্রতীক হিসেবে। এর মানে জামাই-এর দীর্ঘায়ু কামনা। এখানেই শেষ নয়, জামাই-কে আশীর্বাদ করে ষাট-ষাট বলাটাও শাশুড়িদের নিয়মের মধ্যে পড়ে। মনে রাখবেন, এর সমস্তটাই হচ্ছে শুধু জামাই-এর জন্য। আসলে মেয়ের জন্য মঙ্গলচিন্তা এবং তার সংসার অঁটুট রাখার প্রার্থনাতেই এত আয়োজন হয়।
এছাড়াও নতুন পাখার উপর আমের পল্লব এবং আম ও তৎসহ পাঁচ ধরনের ফল সাজিয়ে জামাই-এর মঙ্গল কামনায় শাশুড়ির দল ‘জামাইষষ্ঠী’র দিনে যে ব্রত রক্ষায় ব্রতী হন তার নাম জামাইষষ্ঠী। ১০৮টি দুর্বাবাঁধা আঁটি দিয়ে পুজোর উপকরণ সাজাতে হয়। করমচাসহ পাঁচ থেকে সাত বা নয় রকমের ফল কেটে কাঁঠাল পাতার উপর সাজিয়ে রাখতে হয় শাশুড়িকে।
পুজোর শেষে জামাইকে পাখা হাওয়া আর শান্তি জলের ছিটা দেয়া! এমনকী, মা ষষ্ঠীর আশীর্বাদ বলে জামাইয়ের হাতে হলুদ মাখানো সুতো পরিয়ে দেয়া! এসবই মেয়ের মঙ্গল কামনার উদ্দেশ্যে।
আসল কথা মেয়ে যাতে সুখে-শান্তিতে দাম্পত্যজীবন কাটাতে পারে, তাই জৈষ্ঠ্য মাসে নতুন জামাইকে আদর করে বাড়িতে এনে আম-দুধ খাইয়ে আশীর্বাদ হিসাবে উপহার দেয়া এসবই এই উৎসবের বিশেষতার পর্যায়ে পড়ে।
এসব কিছুর পেছনেই আছে গভীর স্বার্থ। আর এই স্বার্থটা হল জামাইকে তোষামেদ। কারণ, এতে মেয়ে ভাল থাকবে। তাই জামাইকে আপ্যায়নের মানে মেয়েকে ভাল রাখা। তাই হাজারো লোকাচার। হাজারো বিধি পালনের হিড়িক। বলাই বাহুল্য, বহু জামাই আছেন এমন দিনে ধুতি-পাঞ্জাবি পরে হাতে মিষ্টির ঝোলা ও বিশাল মাছ হাতে শ্বশুর বাড়িতে হাজির হতে পছন্দ করেন।
অপরদিকে জামাইষষ্ঠীর দিনও আশার খবর শোনাতে পারেনি আবহাওয়া দপ্তার। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, দিনজুড়ে কলকাতাসহ দক্ষিণবঙ্গে তাপপ্রবাহ চলবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩:২৯:৩১ ৩৭৯ বার পঠিত