এই বেলজিয়ামকে আটকাবে কে? প্রশ্নের উত্তরটা ভালোভাবেই বোধহয় এতক্ষণে জেনে গেছে তিউনিসিয়া। প্রথম ম্যাচে পানামাকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দেওয়ার পর তিউনিসিয়ার বিপক্ষে আরো আক্রমণাত্মক বেলজিয়াম। দ্বিতীয় ম্যাচে আফ্রিকান দেশটিকে গুনে গুনে ৫টি গোল দিল ইউরোপের দেশটি। ৫-২ গোলের বড় জয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডও নিশ্চিত করে ফেললো রবার্তো মার্টিনেজের দল। জোড়া গোল করে লুকাকু এবং হ্যাজার্ড দলের জয়ে বড় ভূমিকা রাখেন।
প্রথম ম্যাচে শক্তিশালী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ সময়ের গোলে হেরেছিল তিউনিসিয়া। এই ম্যাচেও তাদের পারফরম্যান্স ছিল উজ্জ্বল। কিন্তু ম্যাচের শুরুতেই আক্রমণ করতে থাকে বেলজিয়াম। ৫ম মিনিটে পেনাল্টি পেয়ে যায় তারা। হ্যাজার্ডকে ডি বক্সের একদম লাইনে ফাউল করেন বেন ইউফেফ। রেফারি সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন।
স্পট কিক থেকে গোল করে দলকে প্রথমবারের মতো এগিয়ে দেন চেলসি তারকা এডিন হ্যাজার্ড। ১৩ মিনিটে আবারো সুযোগ পেয়েছিলেন হ্যাজার্ড কিন্তু তার শট রুখে দেন তিউনিসিয়ার গোলরক্ষক। ১৫ মিনিটে বা-পাশ থেকে কারাসকোর দূর পাল্লার শট দুর্দান্ত ভঙ্গিমায় রুখে দেন বেন মুস্তাফা।
১৬ মিনিটে আবারো এগিয়ে যায় বেলজিয়াম। মার্টেনসের বাড়ানো বল থেকে ডি বক্সের সামান্য বাইরে থেকে বা-পায়ের কোনাকুনি দুর্দান্ত গোল করেন লুকাকু। মেজর টুর্নামেন্টে এটি লুকাকুর ষষ্ঠ গোল এবং এবারের বিশ্বকাপে এটি তার তৃতীয় গোল। কিন্তু এই গোলের ঠিক দুই মিনিট পরেই এক গোল শোধ দেয় তিউনিসিয়া।
খাজরির সেট পিস থেকে দুর্দান্ত হেডে দলের হয়ে এক গোল শোধ দেন ব্রন। এক গোল দিয়ে বেশ উজ্জীবিত হয়ে খেলতে থাকে তিউনিসিয়া। ৩১ মিনিটে তিউনিসিয়ার সাসির শট একটুর জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৪০ মিনিটে বেন ইউসেফ দূরপাল্লার ভলি নিলে সেটিও গোলবারের বাইরে দিয়ে চলে যায়। প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ের তিন মিনিটের মাথায় মুনিয়ারের বাড়ানো ক্রসে গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে দারুণ ট্যাপ ইনে ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন লুকাকু। এই গোলের মাধ্যমে বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় যুগ্মভাবে শীর্ষে উঠে আসলেন লুকাকু। ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় বেলজিয়াম।
দ্বিতীয়ার্ধেও চলে বেলজিয়াম শো। ৫১ মিনিটে অ্যাল্ডারওয়েল্ডের কাছ থেকে বল পেয়ে ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন এডিন হ্যাজার্ড। ৬১ মিনিটে কারাসকোর দুর্দান্ত শট গোলবারের উপ দিয়ে চলে যায়। ৭৬ মিনিটে ডি বক্সের ভেতর হ্যাজার্ডের পরিবর্তে নামা বাতশুয়াই গোলরক্ষককে পরাস্ত করে উন্মুক্ত গোলবারে শট নিলেও গোললাইন থেকে তা রক্ষা করেন।
৮০ মিনিটে আবারো গোলের সুযোগ পান বাতশুয়াই। এবার গোলবার তাকে গোলবঞ্চিত রাখেন। ডি বক্সের ভেতর কারাসকোর শট গোলরক্ষক রুখে দিলে রিবাউন্ড থেকে বল গোলবারে মারেন বাতশুয়াই। ৮১ মিনিটে গোল মিসের হ্যাটট্রিক করেন বাতশুয়াই। মাত্র ৬ গজ দূর থেকে শট নিলে গোলরক্ষক দুর্দান্ত ভঙ্গিমায় তা রুখে দেন।
তবে শেষ পর্যন্ত আশাহত হননি বাতশুয়াই। ম্যাচের ৯০ মিনিটে গোলের দেখা পান তিনি। তেলেমানসের বাড়ানো দূরপাল্লার বাড়ানো ক্রসে দারুণ শটে গোল করেন বাতশুয়াই। তখনই শেষ হয়নি ম্যাচ। ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ের শেষ মিনিটে তিউনিসিয়ার হয়ে আরেকটি সান্ত্বনা সূচক গোল করেন খাজরি। ৫-২ গোলের জয়ে দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত করলো বেলজিয়াম অন্যদিকে দুই হারে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিল তিউনিসিয়া।
বাংলাদেশ সময়: ২০:১১:৫৬ ২৭৫ বার পঠিত