চিনের পরিবর্তে সমুদ্র সৈকত দিঘা!
নাহ্, লাল কাঁকড়া কিংবা সমুদ্র জলরাশির বিশালাকার মুহুর্মুহু ঢেউয়ের টানে নয়৷ প্রশাসনিক বৈঠক উপলক্ষ্যে শীঘ্রই পূর্ব মেদিনীপুরের সমুদ্র তটে পা রাখতে চলেছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান৷
নবান্ন সূত্রের খবর, সব কিছু ঠিক থাকলে চলতি মাসের ২৬ তারিখ সড়ক পথে আস্ত নবান্নকে সঙ্গে নিয়ে সমুদ্র শহরে পা রাখবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ পরের দিন অর্থাৎ ২৭ তারিখ সেখানেই হবে প্রশাসনিক বৈঠক৷ ২৮ তারিখ প্রশাসনিক সভা, যে সভা থেকে একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন, শিলান্যাসের পাশাপাশি বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুবিধে উপভোক্তাদের হাতে তুলে দেবেন তিনি৷
গত বছর চিনের কুনমিংয়ে যাওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রন জানিয়েছিল চিনের সরকার৷ কিন্ত নিরাপত্তার প্রশ্নে চূড়ান্ত ছাড়পত্র দেয়নি কেন্দ্র৷ ফলে সেবারে মমতার চিন যাওয়া হয়নি৷ এবারে ২২ জুন রাত ১১.৫৫ মিনিটের বিমানে চিন উড়ে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর৷ চিনে গিয়ে কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে বৈঠক করার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রীর। কিন্তু সে গুড়ে বালি! কিন্তু শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত চিনের তরফে কোনও তথ্য না জানানোয় রীতিমতো সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রীর চিন সফর বাতিলের কথা জানিয়ে দেন অমিত মিত্র৷
নবান্ন সূত্রের খবর, ঘরে বসে থাকা না-পসন্দ মুখ্যমন্ত্রীর৷ পঞ্চায়েত ভোট মিটতেই ইতিমধ্যে দার্জিলিং-কালিম্পং ও হাওড়ায় প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ সেখানে রীতিমতো স্কুলের দিদিমণির মতো প্রতিটি দফতরের শীর্ষ আধিকারিকদের দাঁড় করিয়ে উন্নয়নের হাল হকিকতের বিস্তারিত খোঁজখবর নেওয়ার পাশাপাশি আগামী সাতদিনের মধ্যে উন্নয়েনর কাজ শুরু করার নির্দেশ দেন তিনি৷
একই সঙ্গে গোষ্ঠী কোন্দল ঠেকাতে ওই সভাতেই জন প্রতিনিধিদের কড়া হুঁশিয়ারিও দিতে দেখা গিয়েছিল রাজ্যের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে৷ একই সঙ্গে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছিলেন, জেলা পরিষদের সভাধিপতি কে হবেন তা তিনি নিজে ঠিক করবেন৷ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মনোনীত করবেন রাজ্য নেতৃত্ব ও জেলা নেতৃত্ব প্রধান ঠিক করবেন৷
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, জিতেও স্বস্তিতে নেই শাসকদল৷ কারণ, নির্বাচিতদের সিংহভাগই চাই পদ পেতে৷ কিন্তু সকলকে যে পদ দেওয়া সম্ভব নয় তা বিলকুল অজানা নয় রাজ্য নেতৃত্বর৷ অগত্যা, প্রশাসনিক বৈঠকের আড়ালে দিদিমণি ‘এক ঠিলে দুই পাখি’ মারতে চাইছেন বলেই ওই মহলের অভিমত৷ রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই মুহুর্তে দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা, হুগলি সহ দক্ষিণের বেশ কয়েকটি জেলায় দলের কোন্দল চরমে৷ সে
ই সব জেলা ছেড়ে মুখ্যমন্ত্রী পূর্ব মেদিনীপুরকেই বেছে নিলেন কেন? একাংশের মতে, দিঘা সুন্দরীকে আরও ‘অনন্যা’ করে তুলতেই এই উদ্যোগ৷ কোনও কোনও মহলের মতে, পঞ্চায়েত ভোটকে ঘিরে অনেক মানসিক টানাপোড়েন গিয়েছে৷ প্রশাসনিক বৈঠকের আড়ালে একটু ‘মানসিক প্রশান্তি’ খুঁজে নিতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিঘা সফর৷
বাংলাদেশ সময়: ২০:৩৬:৩৯ ৩১১ বার পঠিত