দুই মামলায় খালেদার জামিন নামঞ্জুর

প্রথম পাতা » আইন আদালত » দুই মামলায় খালেদার জামিন নামঞ্জুর
বৃহস্পতিবার, ৫ জুলাই ২০১৮



---যুদ্ধাপরাধীদের মদদ দেয়া ও ভুয়া জন্মদিন পালনের পৃথক দুই মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার রাজধানীর বকশীবাজার আলিয়া মাদরাসা মাঠে ঢাকা মহানগর হাকিম আহসান হাবীব এ আদেশ দেন।

আদালতে খালেদার পক্ষে আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার ও রাষ্ট্রপক্ষে মহানগর পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আবু উপস্থিত ছিলেন। মামলা দু’টির পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২ আগস্ট দিন ধার্য করা হয়েছে।

২০১৭ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর তেজগাঁও থানার ওসি (তদন্ত) এবিএম মশিউর রহমান যুদ্ধাপরাধীদের মদদ দেওয়া সংক্রান্ত মামলায় প্রতিবেদন দাখিল করেন।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি জয়লাভ করলে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মন্ত্রিপরিষদ গঠন করেন। ওই মন্ত্রিপরিষদে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের যারা প্রকাশ্য ও আত্মস্বীকৃত পাকিস্তানের দোসর হিসেবে নিজেদের পরিচয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন- সেই জামায়াত, ছাত্রশিবির, আলবদর ও আলশামস সদস্যদের মন্ত্রী ও এমপি বানান।

তাদের মধ্যে খালেদা জিয়ার সরকারের মন্ত্রিত্বপ্রাপ্ত মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের মুত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। কিন্তু তারা ক্ষমতায় থাকাকালে মন্ত্রিত্বের সুবিধা নিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা তাদের বাড়ি-গাড়িতে ব্যবহার করেছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া স্বাধীনতাবিরোধী ব্যক্তিদের তার মন্ত্রিসভায় মন্ত্রিত্ব দেওয়ার মাধ্যমে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত পতাকাকে ওই স্বাধীনতাবিরোধীদের গাড়িতে তুলে দিয়ে সত্যিকারের দেশপ্রেমিক জনগণের মর্যাদা ভুলুণ্ঠিত করেছেন। তাই তার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৫০০ ধারার মানহানির অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। অন্যদিকে প্রচলিত আইনে মৃত ব্যক্তির বিচারের সুযোগ না থাকায় সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে অব্যাহতির প্রদানের সুপারিশ করা হলো।

তার আগে ২০১৬ সালের ৩ নভেম্বর এবি সিদ্দিকী ‘স্বীকৃত স্বাধীনতাবিরোধীদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দিয়ে দেশের মানচিত্র ও জাতীয় পতাকার মানহানি ঘটানোর অভিযোগে ঢাকার সিএমএম আদালতে মানহানির মামলাটি দায়ের করেছিলেন।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর কলঙ্কিত মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান ৭ নভেম্বর সিপাহী বিপ্লবের মাধ্যমে সামরিক সরকারের দায়িত্ব দখল করে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে কলঙ্কিত করেছেন। ১৯৮১ সালের ১৭ মে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এলে তাকে হুমকি দিয়ে তার বাবার বাড়িতে প্রবেশ করতে দেননি। এছাড়া খালেদা জিয়া ২০০১ সালে ক্ষমতা গ্রহণ করে স্বাধীনতাবিরোধী আলবদর-রাজাকারদের হাতে মন্ত্রিত্ব তুলে দেন। যার মাধ্যমে স্বীকৃত স্বাধীনতাবিরোধীদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দিয়ে দেশের মানচিত্র ও জাতীয় পতাকার মানহানি ঘটিয়েছেন।

১৫ আগস্ট ভুয়া জন্মদিন পালনের অভিযোগে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ৩০ আগস্ট ঢাকার সিএমএম আদালতে অপর মামলাটি দায়ের করেছিলেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক গাজী জহিরুল ইসলাম।

বাদী মামলায় অভিযোগ করেন, খালেদা জিয়ার জন্মদিন নিয়ে ১৯৯৭ সালে ১৯ ও ২২ আগস্ট দু’টি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে মেট্রিক পরীক্ষার মার্কশিট অনুযায়ী খালেদা জিয়ার জন্ম তারিখ ৫ সেপ্টেম্বর ১৯৪৬ সাল, ১৯৯১ সালে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে একটি দৈনিকে তার জীবনী নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ১৯ আগস্ট ১৯৪৫ সাল, বিবাহের কাবিননামায় ৪ আগস্ট ১৯৪৪ সাল ও ২০০১ সালে মেশিন রিডেবল পার্সপোর্ট অনুযায়ী তার জন্মদিন ৫ আগস্ট ১৯৪৬ সাল বলে উল্লেখ করা হয়।

প্রসঙ্গত, গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে। রায়ের পরই নাজিমুদ্দিন রোডে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হয় খালেদাকে। ওই কারাগারটি বর্তমানে বিশেষ কারাগারে হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬:২৬:০৭   ২৩৫ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আইন আদালত’র আরও খবর


এমসি কলেজে দলবেঁধে ধর্ষণ: আদালত পরিবর্তন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন
পিকে হালদারের সহযোগী শঙ্খ ব্যাপারী কারাগারে
নির্বাচন কমিশনারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ফের রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি
আর্থিক বিচারে এখতিয়ার বাড়লো সিভিল কোর্টের
সাবেক বিচারক শাহবাগ থানায় মেয়ের বিরুদ্ধে জিডি করলেন
কারাগারে ফরিদপুরের দুই ইউপি চেয়ারম্যান
নারী সাক্ষীর সঙ্গে অশোভন আচরণ করায় বিচারক প্রত্যাহার
রাজধানীতে মা-ছেলে হত্যা মামলায় স্বামীসহ ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড
বিকৃত যৌন আচরণের শিকার হচ্ছে নারী ও শিশুরা
মাদক মামলায় পাপিয়া ও তার স্বামীর বিচার শুরু

আর্কাইভ