লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের সঙ্গ পেতে চান তাঁরা৷ কোনও রাখঢাক না রেখে কয়েকদিন আগে সেকথা জানিয়েছেন মালদহের দুই সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী ও মৌসম নূর৷ রাহুল গান্ধীর কানেও সেকথা নিজেরাই তুলেছেন৷ আর তাতেই বেজায় চটেছে প্রদেশ কংগ্রেসের একটা অংশ৷ এবিষয়ে নিজেদের ঘনিষ্ট মহলে ক্ষোভ জানিয়েছেন অধীর চৌধুরী ও আব্দুল মান্নানরা৷
৬ জুলাই কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর ডাকে দিল্লি যাওয়ার আগে বরকত গণিখান চৌধুরীর পরিবারে দুই সংসদ সদস্য আবু হাসেম খান চৌধুরী ও মৌসম নূর লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের হাত ধরতে চেয়েছেন৷ তাঁরা প্রকাশ্যে বলেছেন, ‘‘আমরা কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিতে চাই না। কিন্তু বিজেপিকে জাতীয় স্তরে সরাতে গেলে কংগ্রেসের মমতাকে প্রয়োজন বলে মনে করছি।’’ এমনকি, রাহুল গান্ধীর কাছেও ডালুবাবু সেকথা জানিয়েছেন৷ সূত্রের খবর, কংগ্রেসের প্রাক্তন সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর কাছেও তৃণমূলের সঙ্গে আসন সমঝোতার জন্য তদ্বির করেন ডালুবাবু৷
মৌসম ও ডালুবাবুর এহেন তৃণমূলপ্রীতি ভালো চোখে দেখছেন না প্রদেশ কংগ্রস সভাপতি অধীর চৌধুরী ও কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান৷ এমনিতে এই দুজনের সম্পর্কে দূরত্ব থাকলেও একটি বিষয়ে তাঁরা দুজনেই একমত৷ অধীর ও মান্নান, দুজনেই আলাদা আলাদাভাবে একাধিকবার রাহুল গান্ধীর কাছে সিপিএমের সঙ্গে জোটে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন৷ তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুজনেই সুর চড়িয়ে যাচ্ছে তখন মাঝপথে হঠাৎ করে দলের দুই সাংসদ উল্টোপথে হাঁটায় অস্বস্তিতে পড়েছেন তারা৷
সূত্রের খবর, অধীর চৌধুরী ও আব্দুল মান্নান ঘনিষ্ট মহলে ক্ষোভ জানিয়েছেন৷ অধীররঞ্জন চৌধুরী ও আব্দুল মান্নান আগেই জানিয়ে দিয়েছেন, রাজ্যে তৃণমূলের সঙ্গে আসন সমঝোতা হলে মূল বিরোধী দল হিসেবে বিজেপি ফায়দা লুটবে৷
অধীর চৌধুরীর ঘনিষ্ট এক নেতার কথায়, “পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে আলোচনা করতে বিধানভবনে প্রদেশ সভাপতি দলের বিধায়ক, সাংসদ ও জেলা সভাপতিদের নিয়ে একটা বৈঠক করেছিলেন৷ সেই বৈঠকে ডালুবাবু তো তৃণমূলের বিরোধীতাই করেছিলেন৷ হঠাৎ তার মন ঘুরে গেল কেন বুঝতে পারছি না৷”
উল্লেখ্য, সম্প্রতি গণিখান চৌধুরীর পরিবারে এইদুই সংসদ সদস্যের তৃণমূলে যোগদান ঘিরে জল্পনা তৈরি হয়েছে৷ যদিও দুজনেই সেই জল্পনা উড়িয়ে দিয়েছেন৷ প্রদেশ কংগ্রেসের এক নেতার কটাক্ষ, “আসলে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ওনারা নিজেদের এলাকায় তৃণমূলের বাড়বাড়ন্তটা টের পেয়েছেন৷ লোকসভায় নিজেদের আসনটা নিশ্চিত করতেই তাই তৃণমূলের দিকে এখন ঝুঁকে কথা বলছেন৷ দলের স্বার্থের কথা ভুলে গিয়ে এখন নিজেদের স্বার্থের কথা ভাবছেন৷” রাজনৈতিক মহলের মতে, প্রদেশ কংগ্রেসের এই ঘরোয়া কোন্দল আখেরে তৃণমূলের হাত শক্ত করছে৷
বাংলাদেশ সময়: ১৬:২১:২২ ৩৪০ বার পঠিত