জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ সংরক্ষণে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। আজ পরিবেশ অধিদপ্তরে
বিশ্ব পরিবেশ দিবসের সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে
তিনি এ আহ্বান জানান। পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. সুলতান আহমেদের
সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু
পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. বিল্লাল হোসেন, ইউএনডিপি’র কান্ট্রি
ডিরেক্টর সুদীপ্ত মুখার্জী ও বিপিজিমএ’র সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দীন।
মন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি দ্রুত শিল্পায়ন ও নগরায়ণের
ফলে প্রকৃতি ও পরিবেশের ওপর চাপ ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। প্রকৃতি হারাচ্ছে তার
প্রকৃত রূপবৈচিত্র্য আর পরিবেশ হারাচ্ছে ভারসাম্য। প্রকৃতির অফুরান সম্পদ মাটি,
বায়ু, পানি এখন স্বকীয়তা হারিয়ে ভয়াবহ দূষণের কবলে পড়ছে। দূষণের কারণে যে
জীববৈচিত্র্য কিছুদিন আগেও দৃশ্যমান ছিল তা এখন অবলুপ্ত হতে চলেছে। মানুষের
জীবন জীবীকার যোগান যে জীববৈচিত্র্য থেকে আসতো সে বৈচিত্র্য নিঃশব্দে হারিয়ে
যাচ্ছে। যে প্রাকৃতিক সম্পদকে ঘিরে শিল্প কারখানার বিকাশ, যথেচ্ছ ব্যবহারে সে
সম্পদও নিঃশেষ হতে চলেছে। যে জলরাশি একসময় ছিল অফুরান সম্পদের ভা-ার তা আজ
সম্পদশূন্য হতে চলেছে। যে বাতাসে মানুষের বুক ভরে নিঃশ্বাস নেয়ার কথা বিষাক্ত
রাসায়নিক পদার্থের মিশ্রণে সে বাতাস আজ ভারি। যে মাটিতে অনায়াসে সোনা
ফলত সে মাটি তার উর্বরতা শক্তি হারাচ্ছে। যে জলবায়ু পৃথিবীর সৃষ্টিলগ্ন থেকেই
মানুষ, গাচ-গাছালি আর প্রাণীর জন্য অকাতরে বৃষ্টি ঝরাত মৌসুমের নির্দিষ্ট সময়ে,
সে জলবায়ুর আজ ছন্দপতন দেখছি আমরা। পৃথিবীর প্রায় সব জায়গায় একইভাবে
জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অঞ্চলভেদে পৃথিবীর যে স্থানে যে পরিমাণ বৃষ্টি
হবার কথা তা আর হচ্ছে না। পুরোটা বিষয় আজ পৃথিবীর জন্য, মানব সমাজের জন্য
উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ জন্য বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর দায়ভারই বেশি।
মন্ত্রী বলেন, এ বছরের প্রতিপাদ্য, ‘আসুন প্লাস্টিক দূষণ বন্ধ করি’। আর এবার
বিশ্ব পরিবেশ দিবেসের স্লোগান হচ্ছে, ‘প্লাস্টিক পুনঃব্যবহার করি, না পারলে বর্জন
করি’। তিনি বলেন, আমাদের দেশের বিপন্ন প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রে এবারের
প্রতিপাদ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্লাস্টিক আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সাথে
ওতপ্রোতোভাবে জড়িয়ে আছে। গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত সবখানেই প্লাস্টিকের বহুল
ব্যবহার রয়েছে। ঘরের দরজা জানালাও আজকাল প্লাস্টিক পাওয়া যাচ্ছে। তাই চাইলেই
রাতারাতি এর থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব নয়। তবে এর অপব্যবহার রোধ করা সম্ভব। তাই
আমরা ওই প্লাস্টিকই ব্যবহার করব, যা পুনঃব্যবহার করা যায়। দেশের পরিবেশ রক্ষায় প্লাস্টিক
পণ্যের ব্যবহারে জনগণকে ব্যপকভাবে সচেতন করতে হবে। প্লাস্টিক পণ্য পুনঃব্যবহার করতে
হবে, আর পুনঃ ব্যবহার করা না গেলে তা বর্জন করতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১:৫৮:৩৭ ৪২০ বার পঠিত