নিউজটুনারায়ণগঞ্জঃ রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ৮ আগস্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা
মুজিব এর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
“বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৮৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে
আমি এই মহীয়সী নারীর স্মৃতির প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা।
১৯৩০ সালের ৮ আগস্ট গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া গ্রামে বঙ্গমাতা শেখ
ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জন্ম। তাঁর ডাকনাম ছিল রেণু। ছোটবেলা থেকেই
তিনি ছিলেন দৃঢ়চেতা। যে-কোনো পরিস্থিতি তিনি বুদ্ধিমত্তা, ধৈর্য ও
সাহস নিয়ে মোকাবিলা করতেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের
সহধর্মিণী হওয়ায় পর তাঁর জীবনে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়। দেশের স্বার্থে
বঙ্গবন্ধুকে অসংখ্যবার কারাবরণ করতে হয়েছে। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা
মুজিব সেই কঠিন সময়গুলো স্বামীর পাশে থেকে দৃঢ়তার সাথে মোকাবিলা
করেছেন। পরিবারের দেখাশোনার পাশাপাশি স্বামীর মুক্তির জন্য মামলা পরিচালনা,
দলের সাংগঠনিক কাজে পরামর্শ ও সহযোগিতা দান সবই তাঁকে করতে
হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণের নেপথ্যেও ছিলেন বঙ্গমাতা
শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব। তাঁরই পরামর্শে বঙ্গবন্ধু হৃদয় থেকে উৎসারিত
অলিখিত এ ভাষণ প্রদান করেন। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব বাঙালির
অহংকার, নারী সমাজের প্রেরণার উৎস।
বাঙালির প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা
মুজিব বঙ্গবন্ধুর পাশে থেকে তাঁকে পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়েছেন।
এমনকি বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে তিনি অসীম ধৈর্য, সাহস ও বিচক্ষণতার
সাথে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেন। দেশ ও জাতির জন্য অপরিসীম ত্যাগ,
সহমর্মিতা, সহযোগিতা ও বিচক্ষণতা তাঁকে বঙ্গমাতায় অভিষিক্ত করেছে।
বাংলাদেশের ইতিহাসে তাই বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব কেবল
জাতির পিতার সহধর্মিণীই নন, বাঙালির মুক্তিসংগ্রামে তিনি নেপথ্য
কারিগর। আমাদের মুক্তিসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে তাঁর অবদান
চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
বঙ্গমাতা ছিলেন নির্লোভ, নিরহঙ্কার ও পরোপকারী। তিনি ছিলেন প্রচার
বিমূখ। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পতœী হয়েও তিনি সবসময় সাদামাটা
জীবনযাপনে অভ্যস্ত ছিলেন। সকলের সাথে ভালো ব্যবহার করতেন, গরিব-দুঃখীদের
সাহায্য করতেন। তিনি ছিলেন আদর্শ বাঙালি নারীর প্রতিকৃতি। ১৯৭৫
সালের
১৫ আগস্ট কালরাতে স্বামী-পুত্র-পুত্রবধূসহ নিকট আত্মীয়ের সাথে তিনি
ধানমন্ডির নিজ বাসভবনে স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতকচক্রের হাতে নির্মমভাবে
শহিদ হন। জাতির ইতিহাসে সে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। বঙ্গমাতা আমাদের মাঝে
না থাকলেও তাঁর রেখে যাওয়া আদর্শ সবসময় আমাদের অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে
থাকবে।
আমি বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকীতে তাঁর
বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।
খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”
বাংলাদেশ সময়: ২১:০৪:৫৭ ৩৬৩ বার পঠিত