পিরোজপুর জেলায় জলবায়ু সহিষ্ণু জাতের রোপা আমন ধান চাষের উদ্যোগ

প্রথম পাতা » কৃষি ও বাণিজ্য » পিরোজপুর জেলায় জলবায়ু সহিষ্ণু জাতের রোপা আমন ধান চাষের উদ্যোগ
মঙ্গলবার, ৭ আগস্ট ২০১৮



--- উপকূলীয় জেলা পিরোজপুরে অতিরিক্ত জোয়ারভাটা সহনশীল উচ্চফলনশীল (উফশী) ব্রিধান ৭৬ ও ৭৭ জাতের রোপা আমন ধান চাষের উদ্যোগ নিয়েছে পিরোজপুর জেলা কৃষি বিভাগ। স্থানীয় জাতের পরিবর্তে এ ধানের চাষ করা হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পিরোজপুরের উপ-পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী খরিপ-২ রোপা আমন মৌসুমে চাষের জন্য বিশেষগুণ সম্পন্ন ব্রিধান ৭৬ এর ৯৯টি ও ব্রিধান ৭৭ এর ৭৯টি প্রদর্শনী ক্ষেত কৃষক পর্যায়ে স্থাপন করা হবে। এ জন্য ইতোমধ্যে ব্রিধান ৭৬ এর ৮০০ কেজি ও ব্রিধান ৭৭ এর ৬০০ কেজি বীজধান বিতরণ করা হয়েছে। এখন এসব ধান বীজতলা পর্যায়ে আছে।
গত বছর আমন মৌসুমে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) পিরোজপুর সদর, ইন্দুরকানী ও নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন ব্লকে কৃষক পর্যায়ে পরীক্ষামূলক উক্ত জাত দু’টির প্রদর্শনী ক্ষেত স্থাপন করে।
পিরোজপুর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির জানান, শংকরপাশা ব্লকে স্থাপিত প্রদর্শনী ক্ষেতের নমুনা শস্য কর্তন করে হেক্টর (২.৪৭একর) প্রতি গড় ফলন পাওয়া যায় চার মেট্রিক টন। তিনি জানান, এ দু’টি জাতের পূর্ণবয়স্ক গাছের উচ্চতা বেশি ও গাছ শক্ত হওয়ায় অতিরিক্ত জোয়ার-ভাটার চাপেও হেলে পড়ে না। গত মৌসুমে মাঠ পর্যায়ে ব্রিধান ৭৬ ও ৭৭ জাতের প্রদর্শনী খেতের তত্ত্বাবধানে ছিলেন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আবদুস সালাম।
তিনি জানান, এ জাত দু’টির বিশেষ বৈশিষ্ট হচ্ছে- ব্রিধান ৭৬ স্থানীয় জনপ্রিয় ‘সাদামোটা’ জাতের পরিবর্তে একই জমিতে চাষ করা যাবে। ফলন হবে হেক্টর প্রতি এক মেট্রিক টন বেশি। জীবনকাল ও চালের ধরণও একই রকম। আবার ব্রিধান ৭৭ স্থানীয় ‘দুধকলম’ এর বদলে চাষ করে ব্রিধান৭৬ এর মত একই রকম ফলন পাওয়া যাবে। এতে কৃষকরা লাভবান হবেন।
তিনি আরও জানান, এ জাত দু’টির চারা ক্ষেতে রোপনের পর জোয়ার-ভাটায় মাথা ভেসে থাকতে পারে এবং পানির চাপেও কোন ক্ষতি হয় না। ভাটার পর চারা হেলে পড়ে না।
পিরোজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (ডিডি) আবু হেনা মোহাম্মদ জাফর বলেন, গত মৌসুমে এ জেলায় রোপা আমনের স্থানীয় সাদামোটা জাতের চাষ হয়েছিলো ১৪৭২০ হেক্টর এবং মোট উৎপাদন হয় ৪৩৩২৩ মেট্রিক টন এবং ৫১২২ হেক্টর জমিতে স্থানীয় দুধকলম জাতের উৎপাদন হয় ১৪৯৫৬ মেট্রিক টন। স্থানীয় এদুটি জাতের গড় ফলন তিন মেট্রিক টন। এ জেলায় পর্যায়ক্রমে মাঝারি নিচু ও স্বল্পনিচু জমিতে সাদামোটা ও দুধকলম জাতের বৈশিষ্ট সম্পন্ন ব্রিধান ৭৬, ৭৭ জাতের ধান চাষ এলাকা বৃদ্ধি করার পাশাপাশি উফশী ধানের চাষাবাদ পদ্ধতি অনুুসরণ করা গেলে এ অঞ্চলে রোপা আমন ধান উৎপাদনে এক বিশাল ও ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটবে কারণ ব্রিধান৭৬,৭৭ এর হেক্টর প্রতি গড় ফলন সাড়ে চার থেকে পাঁচ মেট্রিক টন। এ লক্ষ্য নিয়ে কৃষি বিভাগ মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছেন।
এ ছাড়া কৃষক পর্যায়ে ভবিষ্যতে এ দু’টি জাতের বীজ সহজলভ্য করতে যথাযথভাবে বীজ সংরক্ষণের জন্য সংশ্লিষ্ট কৃষকদের পলিব্যাগ, চটের বস্তা ও ড্রাম সরবরাহ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১:২৫:০৯   ৩৯৫ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

কৃষি ও বাণিজ্য’র আরও খবর


বঙ্গবন্ধুর জীবন এক বৃহৎ মহাকাব্য - কৃষিমন্ত্রী
উন্নয়ন প্রকল্পগুলো লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বাস্তবায়নের তাগিদ কৃষিমন্ত্রীর
নীলফামারীর ডোমারে বিএডিসি’র খামার পরিদর্শন করেন কৃষিমন্ত্রী
তেলের পর বাজারে বেড়েছে চিনি ও আটার দাম
দেশ যত উন্নতই হোক কৃষির উন্নতি না হলে মানুষের আয় বাড়বে না - কৃষিমন্ত্রী
প্রকাশনা শিল্পের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় মনোযোগী হওয়ার তাগিদ
বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উন্নত দেশগুলোকে সহযোগিতা বৃদ্ধির আহ্বান কৃষিমন্ত্রীর
দেশে সেচ ব্যবস্থার উন্নয়নে ব্যাপক সাফল্য অর্জিত হয়েছে - কৃষিমন্ত্রী
উৎপাদনশীলতা দ্বিগুণ করতে আরো উন্নত জাতের ধান উদ্ভাবন করতে হবে - কৃষিমন্ত্রী
কৃষিপণ্যের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে - বাণিজ্যমন্ত্রী

আর্কাইভ