জাতীয় শোক দিবসে প্রধানমন্ত্রীর বাণী

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » জাতীয় শোক দিবসে প্রধানমন্ত্রীর বাণী
মঙ্গলবার, ১৪ আগস্ট ২০১৮



---প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৫ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে নিম্নোক্ত
বাণী প্রদান করেছেন :
“১৫ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির
পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের এই দিনে সপরিবারে মানব
ইতিহাসের বর্বরতম হত্যাকা-ের শিকার হন।
জাতির পিতার সহধর্মিণী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব, পুত্র
ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল, দশ বছরের শিশুপুত্র শেখ রাসেল, পুত্রবধূ
সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, বঙ্গবন্ধুর সহোদর শেখ নাসের, কৃষকনেতা আব্দুর রব
সেরনিয়াবাত, যুবনেতা শেখ ফজলুল হক মণি ও তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মণি,
বেবী সেরনিয়াবাত, সুকান্ত বাবু, আরিফ, আব্দুল নঈম খান রিন্টুসহ পরিবারের ১৮
জন সদস্যকেও ঘৃণ্য ঘাতকরা এ দিনে হত্যা করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের
সামরিক সচিব কর্নেল জামিলও এ দিন নিহত হন। ঘাতকদের কামানের গোলার
আঘাতে মোহাম্মদপুরে একটি পরিবারের বেশ কয়েকজন হতাহত হন।
জাতীয় শোক দিবসে আমি মহান আল্লাহ্তায়ালার দরবারে বঙ্গবন্ধু শেখ
মুজিবুর রহমানসহ ১৫ই আগস্টের সকল শহিদের রূহের মাগফেরাত কামনা করছি।
জাতির পিতার দূরদর্শী, সাহসী এবং ঐন্দ্রজালিক নেতৃত্বে বাঙালি জাতি
পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙ্গে ছিনিয়ে এনেছিল স্বাধীনতার রক্তিম সূর্য। বাঙালি পেয়েছে
স্বাধীন রাষ্ট্র, নিজস্ব পতাকা ও জাতীয় সংগীত।
সদ্য স্বাধীন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব যখন সমগ্র জাতিকে
নিয়ে সোনার বাংলা গড়ার সংগ্রামে নিয়োজিত, তখনই স্বাধীনতাবিরোধী-
যুদ্ধাপরাধী চক্র তাঁকে হত্যা করে। এর মধ্য দিয়ে তারা বাঙালির ঐতিহ্য, সংস্কৃতি,
কৃষ্টি ও অগ্রযাত্রাকে স্তব্ধ করার অপপ্রয়াস চালায়। তাদের উদ্দেশ্যই ছিল অসাম্প্রদায়িক
গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের রাষ্ট্রকাঠামোকে ভেঙে আমাদের কষ্টার্জিত স্বাধীনতাকে
ভূলুণ্ঠিত করা।
এই জঘন্য হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত স্বাধীনতাবিরোধী চক্র ’৭৫ এর ১৫ই
আগস্টের পর থেকেই হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু করে। তারা ইনডেমনিটি
অর্ডিনেন্স জারী করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হত্যার বিচারের পথও বন্ধ করে দেয়।
জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে। মার্শাল ল’ জারীর মাধ্যমে গণতন্ত্রকে
হত্যা করে। সংবিধানকে ক্ষত-বিক্ষত করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের হত্যাকারীদের পুরস্কৃত
করে। বিদেশে দূতাবাসে চাকুরি দেয়। স্বাধীনতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধীদের নাগরিকত্ব
দেয়। রাষ্ট্রক্ষমতার অংশীদার করে। রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে পুনর্বাসিত করে।
পরবর্তী বিএনপি-জামাত সরকারও একই পথ অনুসরণ করে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালের ১২ই জুনের সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ী
হয়ে দীর্ঘ ২১ বছর পর সরকার গঠন করে। অতীতের জঞ্জাল সরিয়ে এই ৫ বছরে দেশে

আর্থসামাজিক উন্নয়নের এক নব দিগন্তের সূচনা হয়। খাদ্য-ঘাটতির দেশ খাদ্যে
উদ্বৃত্তের দেশে পরিণত হয়। বাংলাদেশের মানুষের জন্য এ সময়টা ছিল একটি স্বর্ণযুগ।
আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার বিচার শুরু করি। কিন্তু
বিএনপি-জামাত জোট সরকার ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে জাতির পিতা হত্যার বিচার
কাজ বন্ধ করে দেয়।

চলমান পাতা/২

-২-

দেশের জনগণ ২০০৮ সালের ২৯শে ডিসেম্বর নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে
পুনরায় বিপুল ভোটে বিজয়ী করে। রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে পূর্ববর্তী
সরকারগুলোর রেখে যাওয়া অচলাবস্থা এবং বিশ্বমন্দা কাটিয়ে আমরা দেশকে দৃঢ়
অর্থনৈতিক ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করার কাজ শুরু করি। ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি
জনবিচ্ছিন্ন বিএনপি-জামাত জোটের নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারাকে জনগণ
ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করে ভোট দিয়ে দেশের সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষা করে।
আবারও আওয়ামী লীগ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে দেশের উন্নয়নে অগ্রযাত্রা অব্যাহত
রাখে।
গত সাড়ে ৯ বছরে আমরা দেশের প্রতিটি সেক্টরে কাক্সিক্ষত অগ্রগতি অর্জন
করেছি। আর্থসামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে ‘রোল মডেল’। সম্প্রতি
বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে। আমরা মহাকাশে বঙ্গবন্ধু
স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ করেছি। ২০২১ সালের আগেই আমরা বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের
এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করব, ইনশাআল্লাহ্
আমরা সপরিবারে জাতির পিতা হত্যার বিচার রায় কার্যকর করেছি। জাতীয় চার
নেতা হত্যার বিচার সম্পন্ন হয়েছে। একাত্তরের মানবতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধীদের
বিচারের রায় কার্যকর করা হচ্ছে। জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে আমাদের সরকার
‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করছে। সংবিধানে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে
অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখলের সুযোগ বন্ধ করেছি। স্বাধীনতাবিরোধী
সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী এবং উন্নয়ন ও গণতন্ত্র-বিরোধীদের যেকোন অপতৎপরতা
ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করার জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।
ঘাতকচক্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে হত্যা করলেও তাঁর স্বপ্ন ও আদর্শের মৃত্যু
ঘটাতে পারেনি। আসুন, আমরা জাতির পিতা হারানোর শোককে শক্তিতে পরিণত করি।
তাঁর ত্যাগ এবং তিতিক্ষার দীর্ঘ সংগ্রামী জীবনাদর্শ ধারণ করে সবাই মিলে
একটি অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলি।
প্রতিষ্ঠা করি জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ। জাতীয় শোক দিবসে এই
হোক আমাদের অঙ্গীকার।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”

বাংলাদেশ সময়: ২০:৫১:৪৫   ৮১২ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

ছবি গ্যালারী’র আরও খবর


সিলেটের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ
আজকের রাশিফল
আল কোরআন ও আল হাদিস
গুজব উপেক্ষা করে জনগণ ভ্যাকসিন নিচ্ছে
অর্পিত সম্পত্তি বিষয়ক চিহ্নিত সমস্যাগুলো যথাযথ সংশোধন করা হবে - ভূমি সচিব
৬টি সেক্টরকে শিশুশ্রমমুক্ত ঘোষণা করলো সরকার
ফসল উৎপাদন বাড়াতে অঞ্চল ভিত্তিক ‘জোন ম্যাপ’ প্রণয়নের ওপর গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর
দেশের সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভাগুলোতে জনস্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র - এলজিআরডি মন্ত্রী
হঠাৎ অজানা কারণেই বেড়ে গেলো পেঁয়াজের দাম
স্পীকারের সাথে বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত অ্যালেজান্ড্রা বের্গ ভন লিনডে-র সৌজন্য সাক্ষাৎ

আর্কাইভ