ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের সভাপতির পাশাপাশি রাজ্যসভায় বিরোধী দলনেতার পদে থাকছেন মল্লিকার্জুন খাড়গে। ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ নীতি গ্রহণের ঘোষণা করেও সম্ভবত পিছিয়ে আসতে হচ্ছে শতাব্দী প্রাচীন দলটিকে।
দলীয় সূত্রের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানিয়েছে, বড় কোনো পরিবর্তন না ঘটলে কংগ্রেসের সভাপতির পাশাপাশি রাজ্যসভায় বিরোধী দলনেতার পদে থেকে যাবেন মল্লিকার্জুন। অন্তত সংসদের আসন্ন শীতকালীন অধিবেশন পর্যন্ত।
গত মে মাসে সিদ্ধান্ত হয়, দলে ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ নীতি কঠোরভাবে মেনে চলা হবে। দলের নেতা রাহুল গান্ধী এই নীতির অন্যতম প্রবক্তা। কংগ্রেস সূত্র মতে, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গেকেই রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতার পদে রেখে দিয়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্বই সেই নীতি ভাঙতে চলেছেন।
সিদ্ধান্ত হয়েছে, সংসদের শীতকালীন অধিবেশনেও খাড়গেই বিরোধী দলনেতার দায়িত্ব পালন করবেন। এ নিয়ে দলের অন্দরে জোর বিতর্কও শুরু হয়েছে।
দলীয় সূত্রের বরাত দিয়ে টিভিনাইনবাংলা জানিয়েছে, খুব শিগগিরই সাবেক কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী এ ব্যাপারে আলোচনার জন্য শনিবার (৩ ডিসেম্বর) বৈঠক ডেকেছেন।
তবে দলের সংসদীয় কৌশল নির্ধারণ সংক্রান্ত কমিটির ওই বৈঠকে ডাক পাননি পি চিদম্বরম, দিগ্বিজয় সিংয়ের মতো প্রবীণ নেতারা। তবে খাড়গে ছাড়াও জয়রাম রমেশ ও কে সি বেণুগোপাল প্রমুখ বৈঠকে থাকবেন।
মল্লিকার্জুনকেই রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা পদে রেখে দেওয়ার খবর সামনে আসতেই তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে কংগ্রেসের ভেতরেই। গান্ধী পরিবার চেয়েছিল, রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটকে কংগ্রেস সভাপতি করতে। কিন্তু গেহলট মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়তে চাননি। হাইকম্যান্ডের কাছে গেহলতের আবদার ছিল, তিনি দুটি পদেই থাকতে চান।
কিন্তু তাতে রাজি হয়নি গান্ধী পরিবার। তার মধ্যেই রাজস্থানে দলীয় বিধায়করা গেহলটের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী সচিন পাইলটের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। অভিযোগ ওঠে, ওই বিদ্রোহের পিছনে খোদ মুখ্যমন্ত্রীরই মদদ ছিল।
ওই ঘটনার জন্য গেহলট সোনিয়া গান্ধীর কাছে কার্যত ক্ষমাও চান। শেষ পর্যন্ত হাইকম্যান্ড সভাপতি পদে মল্লিকার্জুনকেই প্রার্থী করে। যদিও হাইকম্যান্ড মুখে বলে, তাদের কোনো পছন্দের প্রার্থী নেই। দলের যে কেউ প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াতে পারে।
প্রশ্ন উঠেছে, হাইকম্যান্ড যখন গেহলটকে দুই পদে রাখতে রাজি হয়নি, তখন খাড়গের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম কেন হবে? যদিও এক পদ এক নীতি না মানার আরও নজিরও রয়েছে কংগ্রেসে।
লোকসভার বিরোধী দলনেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী একইসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসেরও সভাপতি। আবার প্রবীণ নেতা জয়রাম রমেশ একাধারে রাজ্যসভায় কংগ্রেসের চিফ হুইপ এবং দলের জনসংযোগ বিভাগের প্রধান।
বাংলাদেশ সময়: ১৮:২৫:৩৩ ২১৬ বার পঠিত