শুক্রবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২২

বাণিজ্যিকভাবে চলাচলের জন্য মেট্রো রেল প্রস্তুত

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » বাণিজ্যিকভাবে চলাচলের জন্য মেট্রো রেল প্রস্তুত
শুক্রবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২২



---

বহুল প্রতীক্ষিত প্রথম এলিভেটেড মেট্রো রেল এই মাসেই উত্তরা ও আগারগাঁও সেকশনের মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে চলাচলের জন্য প্রস্তুত।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক আজ বাসস’কে বলেন, ‘আমরা বহুল প্রতীক্ষিত মেট্রোরেলের বাণিজ্যিক কার্যক্রমের জন্য প্রস্তত এবং আশা করছি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ মাসেই আনুষ্ঠানিকভাবে মেট্রো রেলের উদ্বোধন করবেন।’
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিক ও নিরলস প্রচেষ্টায় বিজয়ের মাস থেকে নগরবাসী সর্বাধুনিক পরিবহন সুবিধা পাচ্ছে।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, মেট্রোরেল যাত্রীদের দুর্ভোগ লাঘব করবে কারণ, এটি আরামদায়ক উপায়ে কম সময়ে বেশি যাত্রী পরিবহন করতে সক্ষম হবে।
বাসস’র সাথে আলাপকালে এমআরটি লাইন-৬ এর প্রকল্প পরিচালক মো. আফতাবউদ্দিন তালুকদার জানান, মেট্রোরেল উদ্বোধনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সময় সূচির জন্য একটি সারসংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, মেট্রো রেল প্রতি ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী ও প্রতিদিন অর্ধ লক্ষ যাত্রী বহন করতে সক্ষম হবে এবং প্রতি চার মিনিটে প্রতিটি স্টেশনে একটি ট্রেন আসবে।
মেট্রোরেল কর্মকর্তার মতে, উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত প্রায় ৯৫ শতাংশ নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং চলতি মাসের মধ্যেই মেট্রোরেলের এই অংশটি বাণিজ্যিকভাবে চালু হবে।
তিনি বলেছেন, সমস্ত সিভিল কাজ, যান্ত্রিক, বৈদ্যুতিক এবং নদীর গভীরতা নির্ণয় (এমইপি), স্থাপত্য, অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা, ডিজেল জেনারেটর, স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (এসটিপি) এবং আলো স্থাপন কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে।
শেওড়া পাড়া স্টেশনের একপাশে প্রস্থান/প্রবেশের জন্য এসকেলেটর স্থাপনের কাজ চলছে। এমইপি কাজ পরীক্ষা ও কমিশনের শেষ পর্যায়ে রয়েছে। দ’ুটি প্যাকেজের (সিপি-০৩ এবং ০৪) সমন্বিত এবং বাস্তব অগ্রগতি ৯৭.৬০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
এর আগে, ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেছিলেন, ট্রেনটি ইতিমধ্যে এই মাসের শুরুতে তার ফাঁকা অপারেশন (যাত্রী ছাড়া চলাচল) শুরু করেছে।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানির মাসিক অগ্রগতি প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এমআরটি লাইন ৬ প্রকল্পটি এই বছরের নভেম্বরের শেষ পর্যন্ত সামগ্রিকভাবে ৮৪.২২ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে। যেখানে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশে ৮৪.৮৭ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে। মতিঝিল থেকে কমলাপুর অংশের ইউটিলিটি ভেরিফিকেশনের কাজ শিগগিরই শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এমআরটি লাইন-৬ উল্লেখযোগ্যভাবে ছোট যানবাহনের ব্যবহার হ্রাস করবে এবং জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার ব্যাপকভাবে হ্রাস পাবে। নগরবাসীর কর্মঘণ্টা বাঁচবে। সংরক্ষিত কর্মঘণ্টা দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ব্যবহার করা যেতে পারে। যানজটও কমবে। প্রকল্পটি বছরে ২০,০০০ টাকা সাশ্রয় করবে, যা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১.৫ শতাংশ এবং মোট কর রাজস্বের ১৭ শতাংশের সমতুল্য।
যেহেতু মেট্রো রেল সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক, তাই কোন জীবাশ্ম জ্বালানী ব্যবহার করা হবে না। ফলে বায়ু দূষণের কোনো সুযোগ নেই। মেট্রো রেলের রেলওয়ে ট্র্যাকের অধীনে একটি গণ ¯্্রিং সিস্টেম (এমএসএস) থাকবে। কন্টিনিউয়াস ওয়েল্ডেড রেল (সিডব্লিউআর) ব্যবহার করা হবে। উ—ন্ত মেট্রোরেলের ভায়াডাক্টের দুই পাশে সাউন্ড ব্যারিয়ার দেয়াল থাকবে।
এরফলে, মেট্রো রেলের শব্দ এবং কম্পনের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম হবে। এটি সামগ্রিক পরিবেশ দূষণে অবদান রাখবে না। তবে পরিবেশগত উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এছাছাও, মেট্রো ট্রেনের কোচগুলোর ভিতরে শিশু, গর্ভবতী মহিলা এবং বয়স্ক যাত্রীদের জন্য বিশেষ আসন সংরক্ষিত থাকবে।
অপেক্ষাকৃত কম উচ্চতায় টিকিট বুথ থাকবে যাতে হুইল চেয়ার ব্যবহারকারী এবং খাটো মানুষ টিকিট অফিস মেশিন (টিওএম) এর মাধ্যমে সহজেই টিকিট সংগ্রহ করতে পারে। একইভাবে, হুইল চেয়ার ব্যবহারকারীরা টিকিট ভেন্ডিং মেশিন (টিভিএম) ব্যবহার করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাদের টিকিট সংগ্রহ করতে সক্ষম হবেন। হুইল চেয়ার ব্যবহারকারীদের প্রদত্ত জোনে সহজে প্রবেশাধিকার থাকবে এবং প্রস্থানের জন্য হুইল চেয়ারের সাথে মিল রেখে স্বয়ংক্রিয় ভাড়া সমন্বয়ের জন্য একটি প্রশস্ত গেট থাকবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭:১৩:২৬   ২২৫ বার পঠিত