সোমবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২২

আশ্রয়ণ প্রকল্পের অর্ধেক ঘর বিক্রি করে দিলো সুবিধাভোগীরা

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » আশ্রয়ণ প্রকল্পের অর্ধেক ঘর বিক্রি করে দিলো সুবিধাভোগীরা
সোমবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২২



আশ্রয়ণ প্রকল্পের অর্ধেক ঘর বিক্রি করে দিলো সুবিধাভোগীরা

সিরাজগঞ্জ শাহজাদপুরের একটি আশ্রয়ণ প্রকল্পে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের অর্ধেক ঘরই বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। ইতোমধ্যে উপজেলার গাড়াদহ ইউনিয়নের গাড়াদহ দক্ষিণপাড়া গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্পে ১৪টি ঘরের মধ্যে সাতটি ঘর বিক্রি করে দিয়েছেন সুবিধাভোগীরা।

সোমবার (১২ ডিসেম্বর) সরেজমিন থেকে এই তথ্য পাওয়া যায়। প্রতিটি ঘর বিক্রি হয়েছে ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকায়। সম্প্রতি ঘরগুলো সুবিধাভোগীদের মাঝে বিতরণ করেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। এরপরেই সুবিধাভোগীরা ঘর বিক্রি করে চলে যায়। বর্তমানে সেখানে বসবাস করছেন ঘরগুলো কিনে নেওয়া ব্যক্তিরা।

শাহজাদপুর উপজেলা ভূমি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার গাড়াদহ ইউনিয়নের গাড়াদহ দক্ষিণপাড়ায় আশ্রয়ণ প্রকল্পে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ১৪টি ঘর নির্মাণ করা হয়। একটি ঘর নির্মাণে সরকারি বরাদ্দ ছিল ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা। পাশাপাশি ঘরের জন্য জমি বরাদ্দ আছে ২ শতাংশ। এখন পর্যন্ত শাহজাদপুর উপজেলায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের মোট ২৫১টি ঘর সুবিধাভোগীদের মধ্যে বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আশ্রয়ণ প্রকল্পের সুবিধাভোগী ১৪ নম্বর ঘরের আবদুস সালাম ও তার স্ত্রী সেলিনা দম্পতি। অথচ এই ঘরটি স্ট্যাম্পের মাধ্যমে এক লাখ টাকা দিয়ে কিনে শিরিনা বেগম তার পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন। ১০ নম্বর ঘরের সুবিধাভোগী বেল্লাল হোসেন ও তার স্ত্রী সারা খাতুন দম্পতি। বর্তমানে এই ঘরটি ৮০ হাজার টাকায় কিনে বসবাস করছেন মো. আনু ও সাবিনা বেগম দম্পতি। ৮ নম্বর ঘর অবদুর রশিদ দম্পতি বরাদ্দ পেলেও ঘরটি ১ লাখ ১০ হাজার টাকায় কিনে বসবাস করছেন জাহের আলীর পরিবার। ৯ নম্বর ঘর মো. ঠান্ডু দম্পতি পেলেও সে ঘরে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকায় কিনে পিঞ্জিরা খাতুন তার সন্তানদের নিয়ে বসবাস করছেন। ১৩ নম্বর ঘর রফিকুল ইসলাম ও মোছা. ফুলমালা দম্পতি পেলেও ১ লাখ টাকা দিয়ে কিনে নাজমুল হোসেন তার পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন। ১৬ নম্বর ঘর বিধবা রেশমা খাতুন বরাদ্দ পেলেও সে ঘর ১ লাখ টাকায় কিনে হাফিজুল উসলাম ও নাছিমা খাতুন দম্পতি বসবাস করছেন। ১৭ নম্বর ঘরটি জহুরুল ইসলাম ও আফরোজা বেগম দম্পতি বরাদ্দ পেলেও সে ঘর ১ লাখ ১১ হাজার টাকায় কিনে হালিমা বেগম তার পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন।

এলাকাবাসী বলছেন, ১০ নম্বর ঘরের সুবিধাভোগী বেল্লাল হোসেন ও তার স্ত্রী সারা খাতুনের গাড়াদহ ফুটবল খেলার মাঠের পাশে বড় বাড়ি রয়েছে।

মো. আনু ও সাবিনা বেগম দম্পতি টাকা দিয়ে ঘর কিনে বসবাসের কথা সাংবাদিকদের কাছে স্বীকার করে বলেন, ‘আমাগোর ঘরবাড়ি কিছু নেই। আমাগোর কোন মানুষ নাই, তাই দৌড়াদৌড়ি করেও একটা ঘর পাই নাই। এহুন ঋণ কইরা স্ট্যাম্পের মাধ্যমে ঘর কিনে, বসবাস করছি’।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের অর্ধেক ঘর বিক্রি করে দিলো সুবিধাভোগীরা

১৪ নম্বর ঘরের সুবিধাভোগী আবদুস সালামের স্ত্রী সেলিনা বেগম বলেন, ঘর বিক্রির বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না। ঘর বিক্রির একটি টাকাও আমরা পায়নি। সব ডিজিটাল ভিশন বিদ্যানিকেতনের (কেজি স্কুল) পরিচালক জুয়েল আহম্মেদ নিয়েছে। সেই এসব বিষয়ে জানে।

এ ব্যাপারে স্থানীয় ডিজিটাল ভিশন বিদ্যানিকেতনের (কেজি স্কুল) পরিচালক জুয়েল আহম্মেদ বলেন, একটি ঘর কেনাবেচার সময় আমি মধ্যস্থতায় ছিলাম। তবে কোন টাকার বিষয়ে আমি জানি না।

বাংলাদেশ সময়: ১৫:২২:১৯   ২৪৯ বার পঠিত