ইসমাইল হোসেন জামালপুর : আলতো কুয়াশার আবরণে ঢাকা এই হেমন্তে দুচোখের দৃষ্টি যতদূর যায় ততদূরই যেন দেখা যায়, শুধু হলুদ রঙে ছেঁয়ে আছে দিগন্ত জুড়ে ফসলের মাঠ। এ অপরূপ সৌন্দর্য আজ ফুটে উঠেছে জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন তথা পৌরসভার বিভিন্ন গ্রাম অঞ্চলে।
ইতিহাসের সূত্র ধরে জানা যায়, জামালপুরের ঐতিহ্যবাহী ব্রহ্মপুত্র, ঝিনাই ও যমুনা নদীর পলল দ্বারা গড়ে উঠে এ সরিষাবাড়ীর ভূঅঞ্চল। যে কারণে এ অঞ্চলে প্রাচীনকাল থেকেই প্রচুর পরিমানে সরিষা উৎপন্ন হতো। আর এ উৎপন্ন সরিষা বিক্রির জন্য কালক্রমে এখানে গড়ে উঠে হাট-বাজার। ধারণা করা হয় এই সরিষা থেকেই এই অঞ্চলের নামকরণ করা হয় সরিষাবাড়ী।
আজ সেই সরিষাবাড়ীর সরিষার বাম্পার ফলনে কৃষকেরা দারুণ খুশি। তারা বলেছেন, এবার ঝড়বৃষ্টি ও ঘন কুয়াশা না থাকায় সরিষার ফলন খুবই ভালো হয়েছে। বিঘা প্রতি ৪ হতে ৫ মণ সরিষা তারা পাবেন বলেন আশা করছেন।
এদিকে কামরাবাদ ইউনিয়নের ধারাবর্ষা গ্রামের চাঁন মিয়া ও ভাটারা ইউনিয়নের ফুলবাড়িয়া গ্রামে খোরশেদ আলমের সাথে কথা বললে তারা জানান,এবার সরকারিভাবে সরিষার বীজ ও সার পেয়েছি এবং সরিষা চাষ করেছি। সরিষার ফলন বেশ ভালো হয়েছে। আশা করছি বিঘা প্রতি ৫মণ সরিষা পাবো।
এছাড়াও চর বড়বাড়িয়া মধ্যপাড়া গ্রামের আব্দুল জলিল বলেন, সরিষা চাষে খরচের চেয়ে লাভ বেশি। পাশাপাশি জমির উর্বরতা বাড়ে, সার কম লাগে এবং ধানের ফলনও ভালো হয় বলে তারা প্রতি বছর সরিষা চাষ করে।
এদিকে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায় এবার সরিষা মৌসুমে ৩ হাজার ৭শ ৫০ হেক্টর জমি সরিষা চাষের জন্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও চাষ হয়েছে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার হেক্টর জমি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষিবিদ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, এবারের সরিষা মৌসুমে ৬৯৫০জন কৃষককে কৃষি প্রণোদনা বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে। সরিষার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৭৫০ হেক্টর কিন্তু অর্জন হয়েছে ৪৩৫০ হেক্টর। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কৃষকেরা এবার সরিষার বাম্পার ফলন পাবেন বলে আশা করছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭:১৪:১৮ ২৯০ বার পঠিত