মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২২

কষ্ট হলেও সবাইকে ভোট দেওয়ার আহ্বান মোস্তফা-পিয়ালের

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » কষ্ট হলেও সবাইকে ভোট দেওয়ার আহ্বান মোস্তফা-পিয়ালের
মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২২



কষ্ট হলেও সবাইকে ভোট দেওয়ার আহ্বান মোস্তফা-পিয়ালের

মোস্তাফিজার রহমান রংপুর প্রতিনিধি : রংপুর সিটি করপোরেশন (রসিক) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণে অনেক কেন্দ্রে ধীরগতির কারণে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় পার করছেন ভোটাররা। আবার কোথাও কোথাও ইভিএমে আঙুলের ছাপ জটিলতায় পড়েছেন অনেকে। এ পরিস্থিতিতে অনেকেই ভোট দিতে না পেরে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।
মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত নগরীর ২৫টি কেন্দ্র ঘুরে ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে এসব সমস্যার কথা জানা গেছে। প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকদের আশঙ্কা ধীরগতির ভোটগ্রহণের কারণে ভোটাররা ধৈর্য হারিয়ে ফেলছেন। এতে নির্দিষ্ট সময় শেষে ভোট কাস্ট কম হবার আশঙ্কা করছেন তারা।
এদিকে ভোটগ্রহণ শুরুর সাড়ে তিন ঘণ্টায় মাত্র ১০ ভাগ ভোট কাস্ট হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। একটু কষ্ট হলেও সবাইকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন লাঙ্গল প্রতীকের এই প্রার্থী।
সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান বলেন, বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখছি ইভিএম মেশিনগুলোতে সমস্যা হচ্ছে। ভোটাররা দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে আছে। ভোটারদের উদ্দেশ্যে একটাই অনুরোধ ভোটকেন্দ্র গিয়ে ভোট দিতে না পারা পর্যন্ত ভোটকেন্দ্র ছাড়বেন না। এই ভোটটা আপনার নাগরিক অধিকার। রাত ৮টা বাজলেও ভোটটা দিয়ে ঘরে ফিরবেন। আমরা নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা রাত ১০টা হলেও কেন্দ্রে থাকা সবার ভোটগ্রহণের অঙ্গীকার করেছেন।
অন্যদিকে বেলা দেড়টার দিকে নগরীর লালকুঠি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট প্রদান শেষে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আমিরুজ্জামান পিয়াল সন্তোষ প্রকাশ করেন। তবে সাড়ে পাঁচ ঘণ্টায় আশানুরূপ ভোট কাস্ট না হওয়ায় তিনিও ভোটারদের কেন্দ্রে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সকাল থেকে বেশ কয়েকটি কেন্দ্র ঘুরেছি। এখন পর্যন্ত কোথাও ২০-২৫ ভাগ ভোট কাস্ট হওয়ার তথ্য পাইনি। জুম্মাপাড়ার ইউসেফ স্কুল কেন্দ্রে ৩৫৮ ভোটের মধ্যে মাত্র ৪২টি ভোট কাস্ট হয়েছে। অথচ শত শত মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে আছে। এভাবে ভোট কাস্ট হলে দুই দিনেও মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন না।
এদিকে সকালে নগরের আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষার পর নারী ও পুরুষ ভোটাররা ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন। তারা বলেন, সুন্দর পরিবেশে ভোট দিতে পেরেছি। প্রথমবার ইভিএমে ভোট দিতে পেরে খুশি। তবে আঙুলের ছাপ মেলাতে অনেক কষ্ট হয়েছে। এসব সমাধানের চেষ্টা করলে আরও দ্রুত ভোট এগিয়ে যেত বলে মন্তব্য করেন তারা।
নিসবেতগঞ্জ জরিমুন নেছা স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে কথা হয় ৮৬ বছর বয়সী আজগার হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বহুদিন পর অনেক আশায় যন্ত্রের (ইভিএম) মধ্যে ভোট দিছুং (দিলাম), কিন্তু মেশিন খালি নষ্ট আর নষ্ট। কোটে টিপ দিমো (দেব) কিছু বুঝির পাং নাই। আগে ট্রেনিং করা দরকার ছিল।’
মতিয়ার রহমান নামের এক ভোটার বলেন, প্রায় ১ ঘণ্টা ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। কিন্তু লাইনে দাঁড়ানোর পর দেখি আঙুলের ছাপের মিল হয় না। তাই অনেকেই বাড়ি চলে যাচ্ছেন। এভাবে ভোট হলে ইভিএমের ওপর আস্থা কমে যাবে।
ভোটের পরিবেশ নিয়ে সোবাহান মিয়া নামের এক ভোটার বলেন, পরিবেশ বেশ সুন্দর। পুলিশ অনেক দেখছি। আসব কি আসব না এই চিন্তা করছিলাম। পরিবেশ ভালো শুনে আসলাম। এখন ভালোই। তবে পরে কী যে হয় তা জানি না। এভাবে নির্বাচন হলে তো ভালোই। সবাই যেন ভোট দিতে পারে, সেটাই চাই।
এবার মেয়র পদে জাতীয় পার্টির মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, আওয়ামী লীগের অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ-ইনু) শফিয়ার রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমিরুজ্জামান পিয়াল, খেলাফত মজলিশের তৌহিদুর রহমান মণ্ডল রাজু, জাকের পার্টির খোরশেদ আলম খোকন, বাংলাদেশ কংগ্রেস পার্টির আবু রায়হান এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মেহেদী হাসান বনি ও লতিফুর রহমান মিলন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
নির্বাচনে মেয়র পদে ৯ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৮৩ জন, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৬৮ জন সর্বমোট ২৬০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে ৩০নং ওয়ার্ডে একজন সাধারণ কাউন্সিলর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫:৩১:৪২   ২১১ বার পঠিত