মোস্তাফিজার রহমান রংপুর প্রতিনিধি : রংপুর সিটি করপোরেশন (রসিক) নির্বাচনে ইভিএম ত্রুটির অভিযোগ তুলে জাতীয় পার্টির মেয়র পদপ্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বিতর্কিত করার চেষ্টা করছেন বলে মন্তব্য করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা আব্দুল বাতেন।
মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে নিসবেতগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে এসে তিনি এ মন্তব্য করেন।
‘ইভিএমের ত্রুটির কারণে প্রথম দফায় ভোট দিতে পারিনি’—জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে রিটার্নিং কর্মকর্তা আব্দুল বাতেন বলেন, তার এমন অভিযোগ জানার পর প্রিসাইডিং কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছি। সেখানে ইভিএমের কোনো ত্রুটি ছিল না। একজন ভোটার ভোট দিচ্ছিলেন। তাকে একটু অপেক্ষা করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনি তা না করে ইভিএম এবং নির্বাচনকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছেন।
ইভিএমের কোনো ত্রুটি নেই উল্লেখ করে রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, কিছু ভোটারের হাতের আঙুল পরিষ্কার না থাকায় আঙুলের ছাপ মিলছে না। হাত পরিষ্কার করার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু মেয়র প্রার্থী মোস্তফা যে অভিযোগ তুলেছেন, সেটি আমার কাছে দুঃখজনক মনে হয়েছে। আমি বলবো যে এটা আমাদের জাতির জন্য দুঃখজনক। আমরা এখনো সত্যকে সত্য বলতে শিখিনি। আমার কাছে মনে হয়েছে একটি সুন্দর পরিবেশ বিরাজ করছে। ইভিএম এবং এই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে তিনি এই অভিযোগ করেছেন।
এর আগে সকাল ৯টায় আলমনগর কলেজ রোড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিজের ভোট দিতে আসেন জাতীয় পার্টির মেয়র পদপ্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা।
নিজের ভোট দিতে এসে ইভিএমের ত্রুটির কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ইভিএমের ত্রুটির কারণে প্রথম দফায় ভোট দিতে পারিনি। দ্বিতীয়বারের চেষ্টায় ভোট দিয়েছি। যারা ইভিএমে ভোট দেয়নি প্রত্যন্ত এলাকায় তাদের কী হবে? এ ক্ষেত্রে ভোট কাস্টিং কম হবে। আর ভোট কাস্ট কম হলে আমার জন্যই ক্ষতি। এ সময় প্রতিটি কেন্দ্রে একজন করে বিশেষজ্ঞ থাকা উচিত বলে উল্লেখ করেন সদ্য সাবেক এই মেয়র।
নির্বাচনী পরিবেশ অনেক সুন্দর রয়েছে উল্লেখ করে মোস্তফা বলেন, এখন পর্যন্ত নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠু রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সঠিকভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করছে।
এবার রসিকের ৩৩টি ওয়ার্ডের দুই লাখ ১২ হাজার ৩০২ জন পুরুষ এবং দুই লাখ ১৪ হাজার ১৬৭ জন নারী ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাচ্ছেন। আর তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার একজন।
এবারের নির্বাচনে মোট প্রার্থী রয়েছেন ২৬০ জন। এর মধ্যে মেয়র পদে নয়জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৮৩ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৬৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নগরীর ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের একজন কাউন্সিলর প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
মেয়র পদে নয় প্রার্থী হলেন- জাতীয় পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, আওয়ামী লীগের অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ-ইনু) শফিয়ার রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমিরুজ্জামান পিয়াল, খেলাফত মজলিশের তৌহিদুর রহমান মণ্ডল রাজু, জাকের পার্টির খোরশেদ আলম খোকন, বাংলাদেশ কংগ্রেসের আবু রায়হান এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মেহেদী হাসান বনি ও লতিফুর রহমান মিলন।
এই নির্বাচনে মেয়র পদে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ও সদ্য সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা এবং আওয়ামী লীগ মনোনীত হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়ার মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:৩৮:২৫ ২০৫ বার পঠিত